অসাম্প্রদায়িক মৌলবাদী শক্তির উত্থান ও তরুণদের জঙ্গিবাদে ঝোঁকার প্রবণতার প্রেক্ষাপটে শিল্পকলা একাডেমি এই আয়োজনকে বলছে ‘সাংস্কৃতিক আন্দোলন’।
সারা দেশে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের ১ হাজার ৬০০ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এই কর্মশালায় দেশাত্মবোধক ও মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক গান; রবীন্দ্র, নজরুল, ডিএল রায়ের সংগীত চর্চার পাশাপাশি শুদ্ধভাবে জাতীয় সংগীত গাইতে শেখানো হবে।
এর প্রথম পর্যায়ে রাজধানী ঢাকার ১০০ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে শুক্রবার সকালে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় সংগীত ও নৃত্যকলা কেন্দ্র মিলনায়তনে হয় কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠান।
সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর অনুষ্ঠানে বলেন, “দেশব্যাপী তরুণদের সংস্কৃতিচর্চায় আগ্রহী করে তুলতে এই আয়োজনটি তরুণদের মনে জাগ্রত করবে মানবতাবোধের। মানুষ মানুষের জন্য- এই অনুভূতির জন্ম হলেই তারা আর বিভ্রান্ত হবে না।”
সহশিক্ষা কার্যক্রমের গুরুত্ব তুলে ধরে সংস্কৃতিমন্ত্রী বলেন, “আজকাল অভিভাবকরা মনে করেন, পড়ার বইয়ের পাশাপাশি গল্পের বই পড়লে বুঝি অযথা সময় নষ্ট হয়। অথচ তারা জানেন না, এই গল্পের বই পাঠ তাদের মূল পাঠ্যসূচির সহায়ক হতে পারে। তারা ভাবেন, ছেলেমেয়ে জিপিএ-৫ না পেলে তাদের জীবন ওষ্ঠাগত। মনে করে, জীবনটাই বৃথা।”
আজকের শিশুদের বেড়ে ওঠার চিত্র তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, “কোথায় যাবে বাচ্চারা? তাদের জীবনে ফুল নেই, পাখি নেই, মানুষ নেই। সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি, ছোট্ট ছেলেমেয়েরা বিশাল বড় বোঝা নিয়ে স্কুলে যাচ্ছে। সে বোঝা বইতেও পারে না তারা।”
অনুষ্ঠানে ‘সাংস্কৃতিক আন্দোলনের’ লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বিশদভাবে তুলে ধরেন অভিনয় থেকে রাজনীতিতে আসা নূর।
তিনি বলেন, “এ কার্যক্রমের মাধ্যমে শিশুদের সংবেদনশীল হিসেবে গড়ে তুলতে চাই আমরা।”
সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব আকতারী মমতাজ বলেন, “নবীন শিক্ষার্থীদের আমাদের বলতে হবে বাঙালির আত্মপরিচয়ের কথা। দেশপ্রেম, মানবিক মূল্যবোধ ও স্বাধীনতার চেতনায় এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে আমাদের তরুণ প্রজন্মকে।
“বাংলাদেশ স্বপ্ন দেখছে উন্নত রাষ্ট্রে উন্নীত হবার। সীমাবদ্ধ জীবন ও সময়ের মধ্যেই আমরা সে স্বপ্ন পূরণে এগিয়ে যাব অনেক দূর।”
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন একাডেমির সংগীত, নৃত্য ও আবৃত্তি বিভাগের পরিচালক সোহরাব উদ্দীন।