গঙ্গা ও ব্রহ্মপুত্র নদী থেকে পানি খরা উপদ্রুত অঞ্চলে সরানোর পরিকল্পনা ভারত সরকার করলেও বাংলাদেশের ক্ষতি করা হবে না বলে দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আগের আশ্বাসে আস্থা রাখতে চাইছেন বাংলাদেশের পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নজরুল ইসলাম।
Published : 17 May 2016, 12:50 AM
সোমবার বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিসকে ভারতের পানিসম্পদমন্ত্রী উমা ভারতি আন্তঃনদী সংযোগ প্রকল্পে অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা জানালে তার প্রতিক্রিয়ায় বাংলাদেশের প্রতিমন্ত্রী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে এই অবস্থানের কথা জানান।
১৯৯৮ সালের বিজেপি সরকার আন্তঃনদী সংযোগ প্রকল্প হাতে নিয়েছিল। পরে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ জোটের আমলে পরিবেশবাদীদের বিরোধিতার কারণে তা এগোয়নি।
এরপর ২০১২ সালে ভারতের উচ্চ আদালত এ প্রকল্প বাস্তবায়নের নির্দেশ দেয়। সম্প্রতি নরেন্দ্র মোদীর সরকার ভারতের কেন্দ্রীয় বাজেটে এ প্রকল্পে ১০০ কোটি রুপি বরাদ্দ দিয়েছে।
ভারতে ভয়াবহ খরার মধ্যে বিতর্কিত প্রকল্পটি নিয়ে এগোনোর কথা জানিয়ে উমা ভারতি বিবিসিকে বলেছেন, গঙ্গা ও ব্রহ্মপুত্রের মতো গুরুত্বপূর্ণ নদীগুলো থেকে পানি প্রত্যাহার করে খরা কবলিত এলাকায় সরবরাহ করার ওপর এখন সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে তার সরকার।
বাংলাদেশের প্রতিমন্ত্রী নজরুল বলেন, ভারত যেমন খরাপীড়িত এলাকার মানুষের বিষয়ে গুরুত্ব দিচ্ছে, বাংলাদেশের মানুষের কথাও তাদের ভাবতে হবে।
“ভারত তার নিজের জনগণের খরাপীড়িত এলাকা গুরুত্ব দিচ্ছে; আমরাও তো একটা দেশ, আমরাও মানুষ। আমাদের যে অধিকার, তা অস্বীকার করা সঠিক হবে না; ভারতের কাছে এটা আশাও করি না।”
ভারত এই প্রকল্প গ্রহণের পর বাংলাদেশের পক্ষ থেকে উদ্বেগ জানানোর বিষয়টি তুলে ধরে তিনি বলেন, “ভারতের কাছ থেকে পরিষ্কারভাবে জানতে চেয়েছি, এটা কীভাবে হবে? আমরা পানির ন্যায্য হিস্যা চাইব। ভারত থেকে আসা ৫৬টি নদী থেকে ৫৪টা এসেছে বাংলাদেশে। সুতরাং ভারতের উজানে পানি প্রত্যাহার করা বা গতিপথ পরিবর্তন করা আমাদের জন্য উদ্বেগজনক হবে।”
তবে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী গত বছর ঢাকা সফরে এসে বাংলাদেশের ক্ষতি হবে এমন কিছু না করার যে আশ্বাস দিয়ে গিয়েছিলেন, তাতেই আস্থা রাখতে চান নজরুল।
“ভারতের কথার উপর আস্থা রাখতে চাই আমরা। এ সংক্রান্ত তথ্য উপাত্ত পেয়ে আশ্বস্ত হতে চাই, ভারত ক্ষতিকর কিছু করছে না।”
আন্তর্জাতিক নদীর উজান থেকে পানি প্রবাহ পানি ভাটি এলাকা লোকের কী অধিকার রয়েছে ও তার ব্যবহার নিয়ে আন্তর্জাতিক নিয়ম-কানুন রয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী নজরুল বলেন, “আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে, আমাদের ন্যায্য হিস্যা পাওয়ার জন্য যত রকমের পথ আছে, আমাদের যা করার, তা আমরা খোলা রাখছি।”
ভারতের আন্তঃনদী সংযোগ প্রকল্প বাস্তবায়ন করলে অভিন্ন নদীগুলো থেকে বাংলাদেশের পানি কম পাওয়ার শঙ্কা থেকে ইতোপূর্বে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিও উদ্বেগ জানিয়েছিল।