বৃহস্পতিবার ‘শিল্পকলা পদক-২০১৫’ প্রদান অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি বলেন, “আমাদের লোকসাহিত্যের ঐতিহ্য বহু প্রাচীন ও উন্নত। দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে রয়েছে প্রচুর সংস্কৃতি ও লোকগাঁথা।
“এসব সম্পদ সংগ্রহ করে সঠিকভাবে উপস্থাপন করা গেলে এগুলোই হতে পারে বিশ্ব সংস্কৃতি ও সভ্যতার মূল্যবান সম্পদ। তাই আমি শিল্পীসমাজের প্রতি অনুরোধ জানাবো আপনারা এ লক্ষ্যে সর্বোচ্চ প্রয়াস চালাবেন।”
শিল্পকলা একাডেমিতে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে সাতজনকে শিল্পকলা পদক-২০১৫ দেওয়া হয়। রাষ্ট্রপতি পদকপ্রাপ্তদের হাতে পদক তুলে দেন। পদকপ্রাপ্তদের প্রত্যেককে এক লাখ টাকার সম্মানী ও গোল্ড মেডেল দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি শিল্পীদের উদ্দেশ্যে বলেন, “আমরা সবাই আগামী প্রজন্মের জন্য একটি সুন্দর পৃথিবী রেখে যেতে চাই। আর সুন্দর পৃথিবীর স্বপ্ন একমাত্র শিল্পীরাই দেখাতে পারে।শিল্পীরাই পারে অসুন্দরের মধ্য থেকেও সুন্দরকে বের করে আনতে।”
পদকপ্রাপ্তদের অভিনন্দন জানিয়ে এ পুরস্কার তাদের ও তাদের সহকর্মীদেরকে নিজ নিজ অঙ্গনে ভবিষ্যতে আরও অবদান রাখায় অনুপ্রাণিত করবে বলে আশা প্রকাশ করে আবদুল হামিদ বলেন, “এই সাফল্যে উজ্জীবিত হয়ে আপনারা আগামী দিনের সফল শিল্পী ও সংস্কৃতি কর্মী সৃষ্টিতে মনোনিবেশ করবেন।”
দেশীয় সংস্কৃতির সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ আকাশ সংস্কৃতি বর্জনের আহ্বানও জানান রাষ্ট্রপতি।
“আকাশ সংস্কৃতি এখন বাস্তবতা। তথ্য-প্রযুক্তির এ যুগে আকাশ সংস্কৃতিকে অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। তাই বিদেশি সংস্কৃতির ডামাডোলে গা ভাসিয়ে দিলে চলবে না। আকাশ সংস্কৃতির যেটুকু ভালো এবং আমাদের সংস্কৃতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ তা গ্রহণ করা যেতে পারে। পক্ষান্তরে যা মন্দ এবং দেশীয় সংস্কৃতির পরিপন্থি- তা বর্জন ও পরিহার করতে হবে।”
বাঙালির সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দিতে দলমত নির্বিশেষে সবাইকে ‘নিরন্তর প্রয়াস’ চালানোর পাশাপাশি ‘সৃজনশীল বাংলাদেশ বিনির্মাণে শিল্পী ও সংস্কৃতি কর্মীদের অগ্রণী ভূমিকা’ পালন করার আহ্বান জানান আবদুল হামিদ।
শিল্পকলা একাডেমির নাট্যশালা মিলনায়তনে ওই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংস্কৃতি সচিব আক্তারী মমতাজ। সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী, পদকপ্রাপ্ত শিল্পী নিখিল সেন এতে বক্তব্য রাখেন।