ক্লোন ব্যাংক কার্ড বানিয়ে টাকা চুরি, তদন্তে পুলিশ

বুথে বিশেষ যন্ত্র বসিয়ে গ্রাহকের ব্যক্তিগত তথ্য চুরির পর ক্লোন কার্ড বানিয়ে অন্য ব্যাংকের এটিএম থেকে টাকা তুলে নেওয়ার ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 Feb 2016, 06:30 AM
Updated : 14 Feb 2016, 10:04 AM

ঢাকা মহানগর পুলিশের গুলশান জোনের সহকারী কমিশনার মো. রফিকুল ইসলাম জানান, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবি) কর্তৃপক্ষ শুক্রবার রাতে বনানী থানায় মামলা করার পর পুলিশ তদন্তও শুরু করেছে।

রফিকুল ইসলাম জানান, ইউসিবি কর্তৃপক্ষ এজাহারের সঙ্গে বুথের সিসিটিভিতে ধরা পড়া  কিছু ভিডিও ফুটেজ দিয়েছে।

মামলার এজাহারের বরাত দিয়ে বনানী থানার ওসি মো. সালাউদ্দিন খান জানান, বনানী এলাকায় ইউসিবির কিছু এটিএম বুথে ‘স্কিমিং ডিভাইস’ বসিয়ে গ্রাহকের গোপনীয় তথ্য চুরি করা হয়েছে।

“তদন্তের স্বার্থে এখনই অনেক কিছু বলা যাচ্ছে না। পুলিশ ওই চক্রটিকে ধরতে কাজ করছে।”

বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী শনিবার এক অনুষ্ঠানের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেন, “এ ধরনের ঘটনা যে কোনো ব্যাংকের জন্যই উদ্বেগজনক। বিষয়টি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিদর্শক দল তদন্ত করবে। পরিদর্শনের পর দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করবে বাংলাদেশ ব্যাংক।”

এই জালিয়াত চক্র ইস্টার্ন ব্যাংকের কয়েকশ গ্রাহকের লাখ লাখ টাকা চুরি করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

ক্ষতিগ্রস্তদের একজন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকের সাংবাদিক মাহবুবা আক্তার ডিনা জানান, শুক্রবার সকালে তিনি মোবাইল ফোনে এসএমএসের মাধ্যমে ব্যাংকের দুটি নোটিফিকেশন পান। সেখানে দেখানো হয়, শেওড়াপাড়ার এমটিবি (মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক) বুথ থেকে দুইবারে তার অ্যাকাউন্ট থেকে ৪০ হাজার করে মোট ৮০ হাজার টাকা তোলা হয়েছে।

কিন্তু কার্ড তার নিজের কাছে থাকায় ইবিএলের কাস্টমার কেয়ারে ফোন করেন বাড্ডার বাসিন্দা ডিনা। এরপর বিষয়টি তদন্ত শুরু করে ইবিএল কর্তৃপক্ষ। 

ব্যাংকটির হেড অব কমিউনিকেশনস জিয়াউল করিম তখন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, কতজন গ্রাহক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তা বের করতে তারা কাজ করছেন। কোন কোন বুথ থেকে এসব হয়েছে তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

যেসব গ্রাহকের তথ্য চুরি যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে, তাদের কার্ড সাময়িকভাবে নিষ্ক্রিয় রাখার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। পাশাপাশি ন্যাশনাল পেমেন্টে সুইচের মাধ্যমে এক ব্যাংকের কার্ড দিয়ে অন্য ব্যাংকের এটিএম বুথ থেকে টাকা তোলার সুবিধাও আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে বিভিন্ন ব্যাংকের গ্রাহকদের নামে ৯০ লাখের বেশি কার্ড রয়েছে, যার মধ্যে ৮৫ লাখই ডেবিট কার্ড। দেশ জুড়ে প্রায় সাত হাজার এটিএম বুথের মাধ্যমে ব্যাংকগুলো সেবা দিচ্ছে। এছাড়া এসব কার্ড ব্যবহার করে কেনাকাটাও করা যাচ্ছে।