রাজধানীতে তল্লাশি চৌকিতে ছুরিকাঘাতে এক পুলিশ সদস্যকে হত্যার একদিনেও মামলা হয়নি। তবে গঠন করা হয়েছে তদন্ত কমিটি।
Published : 23 Oct 2015, 08:34 PM
এ ঘটনায় এ পর্যন্ত চারজনকে আটক করা হয়েছে। এর মধ্যে মাসুদ নামে একজনকে ঘটনাস্থলেই গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশের দাবি, আটকদের কাছ থেকে ‘গুরুত্বপূর্ণ’ তথ্য পাওয়া গেছে। উদ্ধার করা হয়েছে বিস্ফোরক-বোমা।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর গাবতলীতে পর্বত সিনেমা হলের সামনে তল্লাশির সময় ছুরিকাঘাতে এএসআই ইব্রাহিম মোল্লা (৩৭) নিহত হন।
মামলার বিষয়ে জানতে শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে দারুস সালাম থানায় যোগাযোগ করা হলে এসআই মোরশেদা আকতার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ইব্রাহিম হত্যার ঘটনায় এখনও কোনো মামলা হয়নি।”
এর আগে দুপুরে রাজারবাগ পুলিশ লাইন মাঠে ইব্রাহিম মোল্লার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এতে পুলিশের মহাপরিদর্শক, ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
নিহত পুলিশ কর্মকর্তা ইব্রাহিম মোল্লার বাড়ি বাগেরহাট জেলার কচুয়া থানার পালপাড়া গ্রামে। লাশ দাফনের জন্য সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে দারুস সালাম এলাকায় থাকতেন ইব্রাহিম।
পুলিশের মহাপরিদর্শক এ কে এম শহীদুল হক সাংবাদিকদের বলেন, “মাসুদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী সংঘবদ্ধ একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ এই হত্যার ঘটনা ঘটিয়েছে, যারা স্বাধীনতাকে বিশ্বাস করতে চায় না। যারা এদেশের উন্নয়ন আর স্থিতিশীলতাকে পছন্দ করে না তারাই এই ঘটনা ঘটিয়েছে।”
হত্যাকারীকে গ্রেপ্তার করা না গেলেও তার সহযোগীকে আটক করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “মাসুদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী কামরাঙ্গীরচর এলাকা থেকে তিন জনকে আটক করা হয়েছে। তদন্ত চলছে, শেষ না হওয়া পর্যন্ত চূড়ান্তভাবে কিছু বলা যাবে না।”
একই অনুষ্ঠানে পুলিশ কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া সাংবাদিকদের বলেন, “গ্রেপ্তার মাসুদের তথ্য অনুযায়ী কামরাঙ্গীরচরের একটি আস্তানা থেকে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক-বোমা উদ্ধার করা হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে।”
পূর্ণাঙ্গ তদন্ত শেষে হোতাকে শনাক্ত করা যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
এদিকে এ ঘটনায় মহানগর পুলিশ একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। তিন সদস্যের এই কমিটিতে প্রধান করা হয়েছে অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম) শেখ মোহাম্মদ মারুফ হাসানকে।
অন্য দুই সদস্য হচ্ছেন উপকমিশনার (মিরপুর) কাইয়ূম উজ্জামান এবং গোয়েন্দা পুলিশের উপকমিশনার সাজ্জাদুর রহমান।
গ্রেপ্তার মাসুদ ও তার সঙ্গীরা বগুড়া থেকে আসছিলেন বলে পুলিশ জানতে পেরেছে।
রাতে বগুড়া গোয়েন্দা পুলিশের ওসি আমিনুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, পুলিশ হত্যার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ২৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সহকারী কমিশনার নাজির আহমেদ খানের নেতৃত্বে একটি দল বগুড়ায় আসে।
“ভোর রাতে পুলিশের যৌথ দল শহরের পুরাতন বগুড়া এলাকার কয়েকটি ছাত্রাবাসে অভিযান চালিয়ে শিবির সন্দেহে ২১ জনকে আটক করে।”
এছাড়া আদমদিঘি উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান, জামায়াত নেতা ইউনুস আলী এবং যুবদল নেতা মেহেদী হাসানসহ চারজনকে আটক করা হয়।
শুক্রবার রাতেই আটককৃতদের ঢাকায় নেওয়া হয়েছে বলে জানান পুলিশ কর্মকর্তা নাজির।