বান্দরবানে অপহরণ রহস্যের কিনারা হয়নি ৬ দিনেও

বান্দরবানের সীমান্ত এলাকা থেকে অপহরণের ছয় দিন পেরিয়ে গেলেও খোঁজ মেলেনি দুই পর্যটক ও তাদের দুই গাইডের। কী কারণে অপহরণ করা হয়েছে তাও জানে না তাদের পরিবার; চাওয়া হয়নি মুক্তিপণও।  

আশিক হোসেনবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 Oct 2015, 12:38 PM
Updated : 9 Oct 2015, 12:38 PM

অপহৃত চারজন হলেন- ঢাকার মিরপুর এলাকার বাসিন্দা ব্যবসায়ী জাকির হোসেন মুন্না, ছাত্র আবদুল্লাহ জুবায়ের, স্থানীয় গাইড মানছাই ম্রো ও লাল রিং ছাং বম।

গত শনিবার বিকাল ৩টায় রাঙামাটির বিলাইছড়ি উপজেলার দুর্গম ফাররুয়া ইউনিয়নের বড়থলি গ্রামের নতুন পুকুর এলাকা থেকে এ চারজনসহ মোট ৬ জনকে ‘সশস্ত্র একটি দল’ অপহরণ করে বলে স্থানীয়রা জানান।

অপহৃত বাকি দুইজন অভিরাং ত্রিপুরা ও মনীন্দ্র ত্রিপুরাকে শনিবার রাতেই ছেড়ে দেয় অপহরণকারীরা।

অপহৃত আব্দুল্লাহ আল জুবায়েরের ফুফাত ভাই এম নাওয়াদ আশেকিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “অনেকে বলছে মুক্তিপণের কথা। আরাকানের একটি সশস্ত্র দল এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলেও বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর এসেছে। কিন্তু সত্যি কথা বলতে আমরা এখনও পুরো বিষয়টি নিয়ে অন্ধকারে রয়েছি।”

“আমাদের কাছে কেউই সরাসরি মুক্তিপণ চায়নি কিংবা যোগাযোগ করেনি। কেউই আসলে কিছু বলছে না, অপহরণের উদ্দেশ্য আমাদের কাছে স্পষ্ট নয়।”

তিনি বলেন, “সরকারের কাছে আমাদের দাবি তারা যেন দ্রুত আমার ভাইকে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করেন।”

নাওয়াদ জানান, গত সোমবারই প্রথম জুবায়েরের অপহরণের বিষয়ে জানতে পারেন তারা।

“ওরা ২৮ সেপ্টেম্বর ঢাকা থেকে ছয়জনের একটি দল নিয়ে বান্দরবান যায়। আমরা ৫ অক্টোবর জানতে পারি যে জুবায়ের ও মুন্নাকে অপহরণ করা হয়েছে। ওদের দলের অন্য সদস্যরা জানায় শিপ্রু পাড়া থেকে সাতজন অস্ত্রধারী যাদের দুই জন ইউনিফর্ম পড়া ছিল ওদের ধরে নিয়ে যায়। এ সময় তারা রাখাইন ভাষায় কথা বলছিল, যার কারণে ধারণা করা হচ্ছে তারা মিয়ানমারের কোন বিচ্ছিন্নতাবাদী দল হতে পারে।”

নাওয়াদ জানান, এ ঘটনার পরপর জুবায়েরের বাবা অর্থ মন্ত্রণালয়ের সাবেক কর্মকর্তা আব্দুর রব খান গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এ কারণে পরিবারের পক্ষ থেকে তিনিই এ বিষয়টির খোঁজ খবর রাখছেন।

জুবায়েরের ট্রেকিং এর প্রতি ঝোঁক ছিল জানিয়ে তিনি বলেন, “এ নিয়ে বান্দরবানের ওই এলাকায় ১৫তম বারের মতো সে ট্রেকিংয়ে যায়। ওই এলাকার কমিউনিটিতে সে পরিচিত ছিল। আমি আশা করব এটাই যেন তার শেষ ট্রেকিং না হয়।”

ট্রেকিংয়ে যাওয়ার সময় জুবায়ের প্রত্যন্ত অঞ্চলের সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের জন্য বিভিন্ন প্রকার ওষুধ সামগ্রিও নিয়ে যেত বলে জানান তিনি।

অপহৃত দুই পর্যটক ও তাদের সঙ্গে থাকা দুই গাইডের খোঁজে বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চলছে বলে জানান বান্দরবান বিজিবি ক্যাম্পের কমান্ডার কর্নেল ওয়ালি।

</div>  </p><p>তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সেনাবাহিনী এবং বিজিবি এই দুই পর্যটকের খোঁজে বিভিন্ন দুর্গম এলাকায় অপারেশন চালাচ্ছে। এখনও তাদের খোঁজ মেলেনি। যেহতু এটি খুবই দুর্গম একটি এলাকা এখানে অপারেশন চালানো বেশ কঠিন। তবে আমরা আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।”</p><p>জুবায়েরকে ফিরে পেতে ফেইসবুকে ‘লেটস ইউনাইট টু রেসকিউ অনিক’ নামে একটি ইভেন্ট খোলা হয়েছে।</p>