মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষা চলার মধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনে (ইউজিসি) অভিযান চালিয়ে প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যাদের মধ্যে একজন এ সংস্থার সহকারী পরিচালক।
Published : 18 Sep 2015, 01:57 PM
র্যাবের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শুক্রবার সকালে তারা আগারগাঁওয়ে ইউজিসি ভবনের দ্বিতীয় তলায় এই অভিযান চালান।
গ্রেপ্তাররা হলেন- ইউজিসি’র সহকারী পরিচালক ওমর সিরাজ (৩২), বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের স্টোর কিপার রেজাউল করিম (৩২) এবং ঈশান ইমতিয়াজ হৃদয় নামে ২২ বছর বয়সী এক তরুণ।
প্রশ্নফাঁসে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়ায় ওমর সিরাজকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে ইউজিসি কর্তৃপক্ষ।
তিনিই মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা এবং কৃষি ব্যাংক, জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশন ও বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ পরীক্ষার হলে ‘উত্তরপত্র বিতরণকারী’ এ চক্রের হোতা বলে র্যাবের দাবি।
আর ঈশান ইমতিয়াজ ২০১০ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার পর থেকে এবং রেজাউল বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনে চাকরি পাওয়ার পর এই চক্রে জড়িয়ে যান বলে র্যাবের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।
অভিযানে ২০১৪ সালে জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের সহকারী জজ নিয়োগ পরীক্ষার ২৩টি উত্তরপত্র, একই পরীক্ষার দুটি প্রশ্নপত্র, ২ লাখ টাকা ও একটি ব্যাংকের চার লাখ টাকার চেকসহ বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের সিল, বিভিন্ন ব্যাংকের চেক বই, তিনটি মোবাইল ফোন ও একটি আইপ্যাড পাওয়ার কথা জানিয়েছে র্যাব।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, “ওমর সিরাজ অসাধু উপায় অবলম্বন ও জালিয়াতি করে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা, কৃষি ব্যাংকের অফিসার নিয়োগ, জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের সহকারী জজ নিয়োগ পরীক্ষার উত্তরপত্র সরবরাহ করে আসছিলেন বলে জিজ্ঞাসাবাদের জানা গেছে।”
দ্বিতীয় ধাপে দ্রুত সেই প্রশ্নপত্রের সমাধান করে ওমর সিরাজের কাছে পাঠানো হত। আর শেষ ধাপে ওমর ও তার সহযোগীরা ‘উন্নত প্রযুক্তির’ সাহায্যে ‘চুক্তিবদ্ধ’ পরীক্ষার্থীদে ‘ কাছে উত্তর পৌঁছে দিত।
র্যাবের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, উত্তর পৌঁছে দেওয়ার কাজে চীন থেকে আমদানি করা ‘অতিক্ষুদ্র’ ব্লুটুথ ইয়ারফোন ব্যবহার করা হত যা, পরীক্ষার্থীর ‘কানের মধ্যে লুকিয়ে রাখা যায়’।
চুক্তিবদ্ধ পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে এই চক্রটি ৬ থেকে ১৫ লাখ টাকা নিত বলেও দাবি করা হয়েছে র্যাবের পক্ষ থেকে।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনে (ইউজিসি) যখন র্যাবের এই অভিযান চলছে, সে সময় সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজের ভর্তি পরীক্ষা চলছে।
ইউজিসির উপসচিব (জনসংযোগ) মো. ওমর ফারুখ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, শুক্রবার অফিস বন্ধ থাকলেও র্যাবের অভিযানের খবর পেয়ে তারা অনেকে ছুটে আসেন এবং সহকারী পরিচালক ওমর সিরাজের কক্ষে তল্লাশি চালাতে দেখেন।
পরে রাতে মঞ্জুরি কমিশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সহকারী পরিচালক ওমর সিরাজকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করার কথা জানানো হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “মেডিকেল কলেজে ভর্তি সংক্রান্ত কোনো কাজেই ইউজিসি কোনোভাবে সম্পৃক্ত নয়।”