বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর ভ্যাট নিয়ে পিছু হটার ইংগিত দিয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, সরকার এ বিষয়ে ‘অনমনীয় নয়’।
Published : 13 Sep 2015, 06:01 PM
তিনি বলেছেন, “বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভ্যাট নিয়ে যে জটিলতা দেখা দিয়েছে, সে বিষয়ে আমরা রিজিড অবস্থান নিইনি।… গত ছয় বছরে আমরা অনেক বিষয় রিভিউ করেছি।”
ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ ও অবরোধে রাজধানীজুড়ে ভোগান্তির মধ্যেই রোববার বিকেলে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের একথা বলেন অর্থমন্ত্রী মুহিত। বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমদও এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন।
সরকার দেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপর সাড়ে ৭ শতাংশ ভ্যাট আরোপের পর থেকেই শিক্ষার্থীরা আন্দোলন চালিয়ে আসছে। গত বৃহস্পতিবার তাদের অবরোধে ঢাকা কার্যত অচল হয়ে গেলে সরকার জানায়, ওই ভ্যাট বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দেবে, শিক্ষার্থীরা নয়।
কিন্তু কর্তৃপক্ষ শেষ পর্যন্ত বেতন বাড়িয়ে ছাত্রদের কাছ থেকেই ভ্যাটের টাকা আদায় করবে- এই আশঙ্কায় শিক্ষার্থীরা তাদের আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। রোববারও বিভিন্ন সড়কে তাদের অবরোধের কারণে নগরজুড়ে ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হয়েছে।
মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতিও ভ্যাটের বিষয়টি পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়েছে।
রোববার এক বৈঠকের পর এ বিষয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন অর্থমন্ত্রী।
তিনি বলেন, “ভ্যাট নিয়ে যে জটিলতা হয়েছে, সে বিষয়টির একটি সম্মানজনক সমাধানে পৌঁছানো যাবে। শিগগিরই এই সমস্যার সমাধান হবে।”
বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমদ বলেন, “এটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। শিগগিরই এর সমাধান হয়ে যাবে।”
অষ্টম জাতীয় বেতন কাঠামো পুনর্নির্ধারণের দাবিতে আন্দোলনরত সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সঙ্গেও বসতে চান মুহিত।
তিনি বলেন, “এটা নিয়ে বসতে হবে। তাদের পদের পাঁচ থেকে ছয়টা ধাপ আছে। সেগুলোর পিরামিডটা কোথাও হয়তো কম-বেশি আছে।”
‘সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা যে আন্দোলন করছেন, সেটা ঠিক নয়’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, “বেতন কমিশন একটা প্রতিবেদন দিয়েছে। তাদের সম্মান বা মর্যাদার কোনো হানি হয় নাই।”
সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের পে-স্কেল সংক্রান্ত বিষয়টি বেতন বৈষম্য নিরসন সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে আলোচনার কথা রয়েছে। পদাধিকার বলে এ কমিটির প্রধান হচ্ছেন অর্থমন্ত্রী। সেখানেই এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
কিন্তু সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা অর্থমন্ত্রী মুহিতের নেতৃত্বাধীন কমিটির সঙ্গে আলোচনায় বসবেন না বলে রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, “না, না, ঠিক আছে। না বসলে, না বসবে। আমার নেতৃত্বাধীন এ কমিটিই সব সময় কাজ করে আসছে…।”
এ সময় তোফায়েল আহমেদ বলেন, “তারা যদি বসতে না চান, তাহলে কী করার আছে? সমস্যার সমাধান চাইলে আলোচনার বিকল্প নেই।”
সচিবালয়ে নিজের দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার আগে অর্থমন্ত্রী পূর্বাচলে ৪০ একর জমির উপর কনভেনশন সেন্টার নির্মাণ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেন। এই বৈঠকে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদও উপস্থিত ছিলেন।
মুহিত বলেন, “প্রথমে আমরা কেরাণীগঞ্জে এ কনভেনশন সেন্টার করতে চেয়েছিলাম। পরে পূর্বাচলে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এই কনভেনশন সেন্টারে একটি হোটেল, প্রদর্শনী কেন্দ্র ও সুইমিং ক্লাব নির্মাণ করা হবে। দুই বছরের মধ্যে এর নির্মাণ কাজ শেষ হবে।”
১৫ দিনের মধ্যে মাটি পরীক্ষার পর কাজ শুরু করা হবে বলে জানান তিনি।