শিক্ষকদের পর এবার শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আমিনুল হক ভূইয়ার অপসারণ দাবি করছেন শিক্ষার্থীরা।
Published : 03 Sep 2015, 03:04 PM
বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী মিছিল নিয়ে উপাচার্য ভবনের সামনে শিক্ষকদের প্রতীকী অনশনে গিয়ে তাদের দাবির সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করেন। এসময় শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে স্লোগান দেন।
সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত উপাচার্যের পদত্যাগ ও বিচারের দাবিতে ‘মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ শিক্ষক পরিষদের’ ব্যানারে শিক্ষকদের প্রতীকী অনশন চলে।
বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী সায়েমা আফরিন বলেন, “আমরা মনে করি শিক্ষকদের উপর হামলা একটি জঘন্য অপরাধ।এর দায় উপাচার্যকে নিতেই হবে।শনিবারের মধ্যে তাকে অপসারণ না করলে পরদিন থেকে আমরা কঠোর কর্মসূচি দেব।”
তবে ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের এই মিছিল-সমাবেশের অনুমতি ছিল না বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক কামরুজ্জামান চৌধুরী।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “এদের বিরুদ্ধে প্রক্টরিয়াল বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এদিকে শিক্ষকদের উপর হামলার প্রতিবাদে সকাল ৯টা থেকে ১১টা পর্যন্ত কর্মবিরতি পালন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আটটি দপ্তরের প্রধানরা।
এদের মধ্যে রয়েছেন নিবন্ধক মুহাম্দ ইসফাকুল হোসেন, মহাবিদ্যালয় পরিদর্শক প্রদীপ কুমার বসাক, গ্রন্থাগারিক আব্দুল হাই ছামেনী, চিফ মেডিকেল অফিসার মাহবুবুর রহমান, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন পরিচালক এম আকবর হোসেন, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. মুজিবুর রহমান, বিশ্ববিদ্যালয় প্রকৌশলী হাবিবুর রহমান, শারীরিক শিক্ষা দপ্তরের উপপরিচালক চৌধুরী সউজ বিন আম্বিয়া।
শিক্ষকদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ, অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি করে গত ১২ এপ্রিল থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছেন সরকার সমর্থক শিক্ষকদের একটি অংশ।
অন্যদিকে এ আন্দোলনকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি ‘অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র’ আখ্যায়িত করে ‘মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মুক্ত চিন্তার চর্চায় ঐক্যবদ্ধ শিক্ষকবৃন্দ’ ব্যানারে শিক্ষকদের আরেকটি অংশ উপাচার্যের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন।
শিক্ষার্থীদের উস্কে দেওয়া হয়েছে : উপাচার্য
তার পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভে নামতে শিক্ষার্থীদের উস্কে দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন উপাচার্য অধ্যাপক আমিনুল হক ভূইয়া।
সরকার সমর্থক শিক্ষকদের একাংশের পর বৃহস্পতিবার সকালে উপাচর্যের অপসারণ দাবিতে ‘সাধারণ শিক্ষার্থীদের’ ব্যানারে শিক্ষার্থীদের মিছিলের পর এই প্রতিক্রিয়া জানান তিনি।
অধ্যাপক আমিনুল হক সাংবাদিকদের বলেন, “আন্দোলনকারী শিক্ষকদের মদদে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নেমেছে।
এটা স্পষ্ট যে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেকগুলো বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে মাত্র দুয়েকটি বিভাগের শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নেমেছে।”
নিজের বক্তব্যের পক্ষে তিনি বলেন, “আমি দেখেছি শিক্ষার্থীরা কোথা থেকে এসে শিক্ষকদের পাশে এসে বসল। কী করে বসল। উনাদের সমর্থন ছাড়া কি ছাত্র এসে এভাবে শিক্ষকদের পাশে বসতে পারে।
“ইতোপূর্বে জাফর ইকবালরাই বলেছেন, শিক্ষকদের আন্দোলনে ছাত্রদের সংশ্লিষ্ট করা ঠিক হয়নি। তাহলে আজকে উনারা এটা কী করলেন? আমি এটাকে নেতিবাচক হিসেবে দেখছি।”