শিশু সামিউল আলম রাজন হত্যার ঘটনায় গাফিলতি ও আসামিদের পালাতে সহায়তার দায়ে বরখাস্ত পুলিশ সদস্যদের ফৌজদারি আইনে বিচার করার দাবি জানিয়েছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান।
Published : 04 Aug 2015, 02:41 PM
মঙ্গলবার সিলেটের কুমারগাঁওয়ের বাদেআলী এলাকায় রাজনের বাড়িতে গিয়ে স্বজনদের সমবেদনা জানানোর পর সাংবাদিক ও স্থানীয়দের সঙ্গে মতবিনিময়ে তিনি বলেন, “রাজন হত্যার বিচার প্রক্রিয়া মানবাধিকার কমিশন পর্যবেক্ষণ করছে।”
গত ৮ জুলাই সিলেটের কুমারগাঁওয়ে চুরির অভিযোগ তুলে শিশু রাজনকে পিটিয়ে হত্যা করে কয়েকজন। ওই নির্যাতনের দৃশ্য ভিডিও করে তারা ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দিলে সারা দেশে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়।
পিটিয়ে হত্যার কারণ হিসাবে ভ্যানগাড়ি ‘চুরির’ অভিযোগ শোনা গেলেও রাজনকে ‘বলাৎকার করতে ব্যর্থ হয়ে’ হত্যা করা হয় বলে তার পরিবারের অভিযোগ।
হত্যাকাণ্ডের পর লাশসহ ধরা পড়া মুহিত আলমকে বাঁচাতে এবং তার সৌদিপ্রবাসী ভাই কামরুল ইসলামকে পালিয়ে যেতে সিলেটের জালালাবাদ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আলমগীর হোসেন ও এসআই আমিনুল ইসলাম সহযোগিতা করেন বলে অভিযোগ করেন রাজনের বাবা।
রাজন হত্যার ঘটনায় মুহিত, তার স্ত্রী লিপি বেগম, দুই প্রত্যক্ষদর্শী আজমত উল্লাহ ও ফিরোজ আলীসহ ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ, যাদের মধ্যে সাতজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
কামরুল ইসলাম পালিয়ে সৌদি আরবে চলে গেলেও প্রবাসীদের সহযোগিতায় সেখানেই তাকে আটক করা হয়। তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া চলছে বলে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
মিজানুর বলেন, রাজন হত্যার পর মামলা করতে গেলে তার বাবার সঙ্গে পুলিশ যে ‘দুর্ব্যবহার’ করেছে, তা ‘প্রত্যাশিত নয়’।
রাজন হত্যার মূল আসামি কামরুলকে দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনতে সরকারের ‘সদিচ্ছা প্রয়োজন’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, “কামরুলকে দেশে ফিরিয়ে আনা সময়ের ব্যাপার। তাকে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের আশ্বাসের প্রতিফলন দেখতে চাই।”
দ্রুত রাজন হত্যা মামলার অভিযোগপত্র দিয়ে বিচার শুরুর তাগিদ দেন মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান।
নোয়াখালীর মিলন হত্যার ঘটনা সম্পর্কে তিনি বলেন, “ওই ঘটনায় আপস নিষ্পত্তির খবর পাওয়ার পর আমরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছি। এ ধরনের ফৌজদারি অপরাধের আপস নিষ্পত্তি বা রফা করা যাবে না। এটা আইনের লঙ্ঘন। রাষ্ট্র এভাবে আইনের লঙ্ঘন করতে পারে না।”