চাষিদের অভিযোগ, মৌসুমের শুরুতে পেয়ারার প্রচুর ফলন হলেও বৃষ্টির কারণে তা বাগানেই পচে যাচ্ছে পেয়ারা। আবার বৃষ্টিতে ক্রেতার সংখ্যাও কম, যার ফলে পানির দামে বিক্রি হচ্ছে পেয়ারা।
কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, ঝালকাঠী সদর উপজেলার ভীমরুলী, আতা, শতদশকাঠী, নবগ্রাম, জগদীশপুর, ডুমুরীয়াসহ ২০ গ্রামের ৭৫০ হেক্টর জমিতে দেশি জাতের পেয়ারা চাষ হয়েছে।
গ্রামগুলোর পাঁচ হাজার কৃষক পরিবার একশ বছর ধরে পেয়ারা চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। শ্রাবণ ও ভাদ্র এই দুমাস এখানকার চাষিরা পেয়ারা বিক্রি করেন। কিন্তু এখন মৌসুমের শুরুতেই এ অবস্থায় চরম লোকশানের মুখে পড়ে দিশেহারা তারা।
প্রতি বছরের মতো এবারও মৌসুমের শুরুতেই ঝালকাঠী সদর উপজেলার ভীমরুলী গ্রামের খালে শতশত নৌকায় ভাসমান পেয়ারার হাট বসেছে।
পেয়ারা চাষি অরুণ হালদার বলেন, মৌসুমের শুরুতেই পেয়ারা বিক্রি করছি মনপ্রতি ২শ টাকা। বৃষ্টির কারণে গাছেই পচে যাচ্ছে পেয়ারা। তাই কদিন পর এ পেয়ারা মণপ্রতি পঞ্চাশ/একশ টাকা দরে বিক্রি করতে হবে।
আরেক পেয়ারা চাষি সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ভবেন্দ্র নাথ হালদার বলেন, এ বছর তার এক বিঘার পেয়ারা বাগানে দশ হাজার টাকার মাটি ভরাট করতে হয়েছে। পোকামাকড় দমন ও অন্যান্য বাবদও খরচ হয়েছে আরও তিন/চার হাজার টাকা।
কিন্তু ওই বাগানের পেয়ারা বিক্রি করে এখন পর্যন্ত তিনি মাত্র চার হাজার টাকা পেয়েছেন বলে তিনি জানান।
স্থানীয় এক শিক্ষক বলেন, সড়ক যোগাযোগ ভালো না হওয়ায় স্থানীয় হাট বাজারে সস্তায় বিক্রি হচ্ছে পেয়ারা। বাপ দাদার আমলের পেয়ারা চাষ রাতারাতি বদলে ফেলতেও পারছেন না অনেকেই। তাই পেয়ারা চাষ এখন চাষিদের গলার কাঁটায় পরিণত হয়েছে।
ঝালকাঠী কৃষি সমপ্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শেখ আবু বকর ছিদ্দিক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, সরকারি উদ্যোগে এখানে স্থায়ী পেয়ারা ক্রয় বিক্রয় কেন্দ্র স্থাপনের চেষ্টা চলানো হচ্ছে।
কেন্দ্রটি স্থাপন করা গেলে চাষিদের লোকসান দিতে হবে না বলে জানান তিনি।