জর্জিয়ায় প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক প্রচারাভিযানে ট্রাম্প-বাইডেন বাকযুদ্ধ

শনিবার প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ প্রচার সমাবেশে বাইডেন এবং ট্রাম্প বাকযুদ্ধে জড়িয়ে পড়েন। একে অপরকে দোষারোপ করে কথা বলেন তারা।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 March 2024, 01:25 PM
Updated : 10 March 2024, 01:25 PM

যুক্তরাষ্ট্রে নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে দিয়ে জর্জিয়া রাজ্যে প্রচার সমাবেশ করেছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প দুইজনই।

শনিবার প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ এই প্রচার সমাবেশে বাইডেন এবং ট্রাম্প বাকযুদ্ধে জড়িয়ে পড়েন। একে অপরকে দোষারোপ করে কথা বলেন তারা।

৭৭ বছর বয়সী ডনাল্ড ট্রাম্প তার বক্তব্যে গত বৃহস্পতিবার বাইডেনের দেওয়া ‘স্টেট অব দ্য ইউনিয়ন’ ভাষণকে “খাপ্পা, নৈরাশ্যজনক এবং বিদ্বেষপূর্ণ” বলে মন্তব্য করেন।

অবৈধ এক অভিবাসীর হাতে জর্জিয়ার ২২ বছর বয়সী একজন নার্সিং শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায়ও বাইডেনকে দোষারোপ করেন ট্রাম্প।

যুক্তরাষ্ট্রের ভোটারদের কাছে এবারের নির্বাচনে সবচেয়ে বড় উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে অভিবাসন। গ্যালপ জরিপে গতমাসে এমনটিই দেখা গেছে। এরই প্রেক্ষাপটে ট্রাম্প নাসিং শিক্ষার্থী রিলে খুনের ঘটনা সামনে এনেছেন।

সমাবেশে রিলের ছবি হাতে সমবেত তার পরিবারের সদস্য, বন্ধু-বান্ধব ও সমর্থকদের উদ্দেশে ট্রাম্প এই শিক্ষার্থী খুনের ঘটনায় ‘ন্যায়বিচার দাবি করা’ এবং ‘সীমান্ত সিল করে দেওয়ার’ অঙ্গীকার করেন।

ট্রাম্পের বক্তব্যের এক ঘণ্টা পরই প্রচার সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ৮১ বছর বয়সী বাইডেন। ২০২০ সালের নির্বাচনে ট্রাম্পের কীর্তিকলাপসহ আরও নানা ঘটনায় তাকে দোষারোপ করে কথা বলেন তিনি।

নভেম্বরের আসন্ন নির্বাচনকে প্রতিদ্বন্দ্বী দুই শিবিরের মধ্যে ‘জাতির আত্মার জন্য লড়াই’ আখ্যা দিয়ে বাইডেন বলেন, নির্বাচন নিয়ে ট্রাম্পের অসন্তোষ, প্রতিশোধ গ্রহণের যে কাহিনী আছে তা ভোটারদের স্বার্থ পরিপন্থি।

শনিবার জর্জিয়ার সবচেয়ে বড় নগরী রোমে ট্রাম্পের শীর্ষ সহযোগী মারজোরি টেলরের সমাবেশকালে ট্রাম্পকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন বাইডেন। টেলর ওইদিন ট্রাম্পের সঙ্গে সমাবেশ করেন।

তাদের সমাবেশস্থল থেকে কিছুদূরে রাজ্যর রাজধানী আটলান্টায় বাইডেন তার সমর্থকদের উদ্দেশে বক্তব্যদানকালে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে বিশ্বজুড়ে স্বৈরাচারীদের চাটুকারিতা করার অভিযোগ তোলেন।

২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জর্জিয়ার ভোট বাইডেনের অনুকূলে গিয়েছিল। এবারের নির্বাচনে এই রাজ্যে দুইজনের মধ্যে লড়াই হাড্ডাহাড্ডি হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

২০২০ সালে জর্জিয়ায় খুব কম ভোটের ব্যবধানে জিতেছিলেন বাইডেন। ট্রাম্প বরাবরই এ রাজ্যে নির্বাচনে হস্তক্ষেপ হয়েছিল বলে অভিযোগ করে এসেছেন। তবে জর্জিয়ার গভর্নর বরাবরই নির্বচনে কোনও জালিয়াতি হওয়ার কথা অস্বীকার করে এসেছেন।

১৯৫৬ সালের পর এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনেই প্রথম ৭৭ বছর বয়সী ট্রাম্প এবং ৮১ বছর বয়সী বাইডেন ফের মুখোমুখি হতে চলেছেন। যদিও এ দুই প্রার্থীকে আবারও লড়তে দেখতে চান না বেশির ভাগ ভোটারই।

৭৭ বছর বয়স্ক ট্রাম্প বারবারই বলে আসছেন যে, ৮১ বছর বয়সী বাইডেনের বয়স অনেক বেশি এবং তিনি সবকিছু ভুলে যান। অপরদিকে বাইডেন বলছেন, আসলে ট্রাম্প নিজেই এখন জরাগ্রস্ত এক মানুষ।

গত মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের ১৫টি রাজ্য এবং ইউএস টেরিটরি অব আমেরিকান সামোয়ায় প্রাইমারি এবং ইউএস টেরিটরি অব আমেরিকান সামোয়ায় ককাস অনুষ্ঠিত হয়েছে। সুপার টুয়েসডের এই লড়াইয়ে ট্রাম্প-বাইডেন দুইজনেরই আধিপত্য দেখা গেছে।

রিপাবলিকান প্রার্থী হতে হলে নিজের ঘরে অন্তত ১,২১৫ জন ডেলিগেট থাকতে হবে। অন্যদিকে ১,৯৬৮ ডেলিগেট প্রয়োজন ডেমোক্রেটিক দলের প্রার্থীর।

বিবিসি জানায়, ট্রাম্প এপর্যন্ত ১,০৭৬ ডেলিগেট পেয়েছেন। তার আর ১৩৯ ডেলিগেটের সমর্থন পাওয়া বাকি। অন্যদিকে, বাইডেন পেয়েছেন ১,৮৫৯ ডেলিগেট। তাকে পেতে হবে আরও ১০৯ ডেলিগেটের সমর্থন।

জর্জিয়াসহ মঙ্গলবার প্রাইমারির প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এই সমর্থন পূর্ণ করে ফেলার সুযোগ আছে দুইজনেরই।