প্রথা ভেঙে বাকিংহাম প্যালেস থেকে রাজার ক্যান্সার আক্রান্ত হওয়ার খবর দেওয়া হলেও তার চিকিৎসার অগ্রগতির বিষয়ে নিয়মিত খবরাখবর প্রকাশের পরিকল্পনা তাদের নেই বলে জানানো হয়েছে।
Published : 06 Feb 2024, 06:53 PM
ব্রিটিশ রাজা চার্লস ক্যান্সার আক্রান্ত। সোমবার বাকিংহাম প্যালেস এমন খবর দিয়ে রীতিমত বোমা ফাটিয়েছে। সাধারণত ব্রিটিশ রাজা-রানীদের স্বাস্থ্যের অবস্থা নিয়ে এতটা খোলাখুলি তথ্য প্রকাশ করা হয় না। রাজা ক্যান্সার আক্রান্ত এমন খবর প্রকাশের পর স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে তিনি ঠিক কতটা অসুস্থ?
এ বিষয়ে মঙ্গলবার সকালে বিবিসি রেডিও ফাইভ কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক বলেন, “সৌভাগ্যক্রমে, প্রাথমিক পর্যায়েই এটি সনাক্ত হয়েছে। এখন সবাই একটাই প্রার্থনা করুন যেনো তিনি তার প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পান এবং সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠুন।”
রাজা তৃতীয় চার্লসের ক্যান্সার আক্রান্ত হওয়ার খবর শুনে ‘বাকি সবার মত’ তিনিও খুবই ‘হতবাক এবং দুঃখ পান’ বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী সুনাক।
বাকিংহাম প্যালেস থেকে সোমবার ৭৫ বছর বয়সী রাজা চার্লসের ক্যান্সার আক্রান্ত হওয়ার খবর প্রকাশ করা হয়। বলা হয়, প্রোস্টেট বেড়ে যাওয়ায় চিকিৎসা নেওয়ার জন্য জানুয়ারি মাসের শেষদিকে চার্লস যখন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন, তখনই তার ক্যান্সার ধরা পড়ে।
তবে তিনি প্রোস্টেটের ক্যান্সারে আক্রান্ত নন। ঠিক কোন ধরনের ক্যান্সারে তিনি আক্রান্ত হয়েছেন, তা প্রকাশ করা হয়নি।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, সোমবার থেকে রাজার ‘নিয়মিত চিকিৎসা’ শুরু হয়েছে।
“রাজা তার চিকিত্সা নিয়ে পুরোপুরি আশাবাদী এবং যত দ্রুত সম্ভব পূর্ণ রাজকার্যে ফিরে আসার অপেক্ষায় আছেন।”
বিবিসি খবরে বলা হয়েছে, প্রকাশ্যে যেসব আনুষ্ঠানিকতায় রাজা অংশগ্রহণ করে থাকেন, সেগুলো আপাতত স্থগিত থাকবে এবং তার চিকিৎসার এই সময়টায় রাজ পরিবারের অন্য জ্যেষ্ঠ সদস্যরা তার হয়ে বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করবেন।
তবে রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে তিনি সাংবিধানিক দায়িত্ব চালিয়ে যাবেন এবং নথিপত্রে সই করা বা ব্যক্তিগত সাক্ষাতের বিষয়গুলোও যথারীতি চলবে।
রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যুর পর ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে ব্রিটিশ সিংহাসনে আরোহণ করেন রাজা তৃতীয় চার্লস।
সুনাক বলেছেন, এখনও তিনি রাজার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে চলেছেন এবং স্বাভাবিক নিয়মেই যোগাযোগ অব্যাহত রাখবেন। রাজার সঙ্গে তার এরমধ্যে মুখোমুখি আলাপ হয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাব দিতে অস্বীকৃতি জানান প্রধানমন্ত্রী। তবে এ ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, রাজার চিকিৎসা চলাকালীন সময় দেশ পরিচালনার উপর তার কোনো প্রভাব পড়বে না।
“আমরা সব কিছুর সাথেই মানিয়ে নেব। তবে তিনি আমাদের চিন্তায় ও প্রার্থনায় সবসময় থাকবেন।”
চার্লসের অনুপস্থিতিতে তার বড় ছেলে এবং সিংহাসনের বর্তমান উত্তরাধিকারী যুবরাজ প্রিন্স উইলিয়াম ও রানী ক্যামিলা রাজার কিছু কিছু দায়িত্ব ভাগ করে নেবেন।
সিএনএন জানায়, গতমাসে প্রিন্স উলিয়ামের স্ত্রী ক্যাথেরিনের অস্ত্রোপচার হয়েছে। যদিও তার কী ধরনের অস্ত্রোপচার হয়েছে তা প্রকাশ করা হয়নি। তবে স্ত্রী ও পরিবারকে সময় দিতে প্রিন্স উইলিয়াম রাজ দায়িত্ব থেকে ছুটি নিয়েছিলেন। বাবা রাজা চার্লসের সঙ্গে প্রিন্স উইলিয়ামের নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে বলে জানা গেছে।
বিবিসি জানায়, চার্লস নিজেই তার দুই ছেলেকে তার ক্যান্সার আক্রান্ত হওয়ার খবর দিয়েছে।
তার ছোট ছেলে প্রিন্স হ্যারি বাবার সঙ্গে কথা বলেছেন এবং তাকে দেখতে মঙ্গলবারই যুক্তরাজ্যে ফিরছেন বলে জানা গেছে। ২০২০ সালে রাজকীয় দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ানোর পর থেকে আমেরিকান স্ত্রী মেগান মার্কেল ও দুই সন্তানকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়াতে বসবাস করছেন হ্যারি।
সারা বিশ্ব থেকে রাজা তৃতীয় চার্লসের দ্রুত আরোগ্য কামনা করে বার্তা দেওয়া হচ্ছে।
প্রথা ভেঙে বাকিংহাম প্যালেস থেকে রাজার ক্যান্সার আক্রান্ত হওয়ার খবর দেওয়া হলেও তার চিকিৎসার অগ্রগতির বিষয়ে নিয়মিত খবরাখবর প্রকাশের পরিকল্পনা তাদের নেই বলে জানানো হয়েছে।