আবগারি দুর্নীতির হোতা কেজরিওয়াল: আদালতে ইডি

ইডি দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীকে ১০ দিনের জন্য নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানিয়েছে আদালতে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 March 2024, 02:39 PM
Updated : 22 March 2024, 02:39 PM

আবগারি দুর্নীতি মামলায় ভারতের রাজধানী দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) গ্রেপ্তার করার পর তাকে রাউস অ্যাভিনিউ আদালতে তোলা হয়েছে। সেখানেই ইডি দাবি করেছে কেজরিওয়ালই আবগারি দুর্নীতির হোতা। তাকে ‘মূল ষড়যন্ত্রকারী’ বলা হয়েছে।

এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) এর আইনজীবী আদালতে কেজরিওয়ালের জামিনের বিরোধিতায় বলেছেন, আবগারি দুর্নীতি মামলার ‘কিংপিন’ দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী। এর পরিপ্রেক্ষিতে ইডি দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীকে ১০ দিনের জন্য নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন আদালতে। এনডিটিভি জানায়, এ বিষয়ে আদালতের আদেশ দেওয়ার কথা রয়েছে শুক্রবারেই।

অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে গ্রেফতার করার আগেই ইডি দাবি করেছিল, আবগারি নীতি তৈরি করে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী এবং আপ নেতারা প্রায় ১০০ কোটি রূপি ঘুষ পেয়েছিলেন। শুক্রবার এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা আদালতে জানিয়েছে, গোটা কেলেঙ্কারির কেন্দ্রে আছে 'সাউথ গ্রুপ' যার সঙ্গে আম আদমি পার্টি (আপ) এবং বাকি অভিযুক্তদের যোগাযোগ ঘটাতেন খোদ দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী। 

আবগারি দুর্নীতির অঙ্ক ৬০০ কোটি রূপির বেশি বলেও আদালতে দাবি করেছে ইডি। এই অর্থের মধ্য থেকে ১০০ কোটি রূপি 'সাউথ গ্রুপ' দিয়েছে বলে জানিয়েছে তারা। ইডির আরও দাবি, এর গ্রুপের সঙ্গেই ভারত রাষ্ট্র সমিতির নেত্রী, তেলঙ্গানা বিধান পরিষদ সদস্য মুখ্যমন্ত্রী কেসিআর-কন্যা কে কবিতার যোগ রয়েছে। ঘটনাচক্রে তিনিও দিল্লির আবগারি দুর্নীতি মামলার তদন্তে গ্রেপ্তার হন।

ভারতের ইতিহাসে কেজরিওয়ালই প্রথম মুখ্যমন্ত্রী, যিনি পদে থাকাকালীন দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন। কিছু দিন আগে ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনকেও গ্রেফতার করেছে ইডি। তবে তিনি কেজরিওয়ালের মতো মুখ্যমন্ত্রীর পদে থাকাকালীন গ্রেপ্তার হননি।

কেজরিওয়ালকে গ্রেপ্তারের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল আম আদমি পাটি (এএপি)। বৃহস্পতিবার রাতেই সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করে তারা। শুক্রবার সকালেও এজলাসে দ্রুত শুনানির আবেদন জানিয়েছিলেন কেজরিওয়ালের আইনজীবী। কিন্তু পরে সে আবেদন প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।

কেজরিওয়াল মুখ্যমন্ত্রী থাকতে পারবেন কিনা সেটি এখন প্রশ্ন। তার আইনজীবীরা বলছেন কেন নয়? কেজরিওয়াল তো দোষী সাব্যস্ত হননি। অভিযুক্ত হয়েছেন মাত্র। আম আদমি পার্টি (আপ) জোর দিয়েই বলে আসছে কেজরিওয়ালই মুখ্যমন্ত্রী থাকবেন এবং প্রয়োজনে জেলে বসে সরকার চালাবেন।

কিন্তু আনন্দাবাজার জানিয়েছে, কেজরিওয়াল গ্রেপ্তার হওয়ায় এরই মধ্যে তাকে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে সরানোর আবেদন করে দায়ের হয়েছে জনস্বার্থ মামলা। শুক্রবার দিল্লি হাই কোর্টে দায়ের হওয়া ওই মামলায় কেন্দ্র এবং দিল্লি সরকারের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে কোন আইন বলে গ্রেপ্তারির পর কেজরীকে মুখ্যমন্ত্রী রাখা হবে।

হলফনামায় মামলাকারী এ-ও জানিয়েছেন, আর্থিক দুর্নীতিতে অভিযুক্ত এমন এক জনকে মুখ্যমন্ত্রীর মতো গুরুত্ব পদে রাখা ঠিক নয়। পাশাপাশি, মুখ্যমন্ত্রী পদে থেকে কেজরিওয়াল যে বেতন নিয়েছেন, তার পরিমাণ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন মামলাকারী।