মেয়েদের স্কুল খোলা রাখার প্রশ্নে পিছু হটল তালেবান

আফগানিস্তানে মেয়েদের জন্য হাই স্কুলগুলো খুলে দেওয়া হবে বলে গত সপ্তাহেই ঘোষণা দিয়েছিল তালেবান। ক্লাসে ফিরেও গিয়েছিল ছাত্রীরা। কিন্তু স্কুল খোলার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ফের তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

>> Reutersবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 March 2022, 01:28 PM
Updated : 23 March 2022, 01:28 PM

তালেবান সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মেয়েদের জন্য ইসলামি আইন অনুযায়ী স্কুল পুনরায় চালুর একটি পরিকল্পনা তৈরি না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে।

আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের আশপাশের তিনটি স্কুলের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, মেয়েরা বুধবার সকালে আনন্দ-উচ্ছ্বাস নিয়ে স্কুল প্রাঙ্গণে ফিরেছিল। কিন্তু পরে তাদের বাড়ি ফেরার নির্দেশ আসে। এতে অনেক শিক্ষার্থীই চোখের পানি ফেলেছে।

নিরাপত্তার স্বার্থে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী কাঁদতে কাঁদতে বলেন, “প্রিন্সিপ্যালের কাছ থেকে এ খবর শুনে আমরা হতাশ হয়েছি। আমাদের আর কারোই কোনও আশা নেই।”

এর আগে গত সপ্তাহে আফগান শিক্ষামন্ত্রণালয় থেকে এক ঘোষণায় জানানো হয়েছিল, মেয়েসহ সব শিক্ষার্থীর জন্য দেশজুড়ে স্কুলগুলো বুধবার থেকে খুলে দেওয়া হবে। ঘোষণা অনুযায়ী, এদিন প্রায় ৭ মাস পর প্রথমবারের মতো স্কুলে ফেরে মেয়েরা।

তার আগে দিয়ে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় শিক্ষামন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ক্লাসে ফেরার খুশিতে সব শিক্ষার্থীকে অভিনন্দন জানানোর একটি ভিডিও প্রকাশ করেন।

কিন্তু পরে বুধবার শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “সব গার্লস স্কুল এবং যেসব স্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণির উপরে মেয়ে শিক্ষার্থী আছে, তাদেরকে জানানো যাচ্ছে যে, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত স্কুল বন্ধ থাকবে।”

তালেবানের এই পিছু হটার মানে হচ্ছে, ষষ্ঠ শ্রেণির উপরের মেয়ে শিক্ষার্থীরা স্কুলে যেতে পারবে না। তালেবান গতবছর অগাস্টে আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখলের পর থেকেই মেয়েদের শিক্ষা বন্ধ করে দেবে বলে আশংকা রয়েছে।

তালেবান এর আগে ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত আফগানিস্তানের ক্ষমতায় থাকাকালে মেয়েদের আনুষ্ঠানিক শিক্ষা নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিল।

তবে এবার তালেবান ফের আফগানিস্তানের ক্ষমতায় আসার পর তাদের সরকারকে স্বীকৃতি দিতে হলে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যেসব দাবি করেছে বা শর্ত জুড়ে দিয়েছে, তার মধ্যে স্কুল-কলেজে মেয়েদের পড়ার অনুমতি দেওয়া অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।

তালেবান অবশ্য এবার গোঁড়া থেকেই বলে আসছে, তারা ইসলামি আইন ও স্থানীয় রীতিনীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নারী অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল।

যদিও দেশটির অনেক এলাকার নারীরাই কট্টরপন্থি এই গোষ্ঠীটি ক্ষমতায় আসার পর তাদের দৈনন্দিন কর্মকাণ্ডে বাধা এবং চাকরি ছাড়তে বাধ্য করার অভিযোগ করে আসছেন।

আর সর্বশেষ বুধবার তালেবান মেয়েদের স্কুল খোলার পরপরই তা বন্ধ করে দিয়েছে বলে যে খবর এসেছে, তাতে এর নিন্দা জানিয়েছে জাতিসংঘ এবং যুক্তরাষ্ট্র।