বাংলাদেশ ও ভারত থেকে যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছে ‘অননুমোদিত’ রেমডেসিভির

করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে হাসপাতালে রোগীর চিকিৎসায় বহুল ব্যবহৃত অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ রেমডেসিভিরের ‘অননুমোদিত অথবা জেনেরিক’ সংস্করণ বাংলাদেশ ও ভারত থেকে যুক্তরাষ্ট্র হয়ে মেক্সিকোতে ‘পাচার’ হচ্ছে বলে খবর দিয়েছে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 June 2021, 08:06 AM
Updated : 24 June 2021, 08:27 AM

তদন্তকারীদের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে পত্রিকাটি লিখেছে, যুক্তরাষ্ট্রের গিলিয়াড সায়েন্সেসের তৈরি করা রেমডেসিভিরের ‘নকল অথবা জেনেরিক সংস্করণ’ বাংলাদেশ ও ভারত থেকে আকাশ পথে যুক্তরাষ্ট্রে নেওয়া হচ্ছে যাত্রীদের মাধ্যমে। তারপর সেখান থেকে তা পাঠানো হচ্ছে মেক্সিকোতে, যেখানে অনেক রোগী চড়া দাম দিয়েও ওই ওষুধ কিনতে রাজি।

গত কয়েক মাসে যুক্তরাষ্ট্রের কাস্টমস অ্যন্ড বর্ডার প্রটেকশন ইউনিট এরকম শতাধিক চালান আটক করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটির স্পেশাল এজেন্টদের এখন বিষয়টি তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

হোমল্যান্ড সিকিউরিটি এখন পরীক্ষা করে দেখছে জব্দ করা রেমডেসিভিরগুলো নকল, নাকি জেনেরিক ফর্মুলা ধরে তৈরি করা।

বাংলাদেশ ও ভারতের বিভিন্ন কোম্পানির জেনেরিক রেমডেসিভির তৈরির অনুমোদন রয়েছে। তবে সেসব ওষুধ যুক্তরাষ্ট্র বা মেক্সিকোতে বিক্রি বা ব্যবহারের অনুমতি নেই।

ফাইল ছবি

এ বিষয়ে গিলিয়াড সায়েন্সেসের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল বার্তা সংস্থা রয়টার্স। ইমেইলে তার জবাবে গিলিয়াড কর্তৃপক্ষ বলেছে, “অনুমোদিত ও আইনসম্মত সরবরাহ ব্যবস্থার বাইরে গিয়ে আমাদের কোনো ওষুধ সংগ্রহের বিষয় আমরা সতর্ক করছি। রোগীদের সুরক্ষায় যুক্তরাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যে পদক্ষেপ নেবে, আমরা তাতে সহযোগিতা দিয়ে যাব।”

ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল লিখেছে, সাধারণত নকল বা অনুমোদনহীন ওষুধ যুক্তরাষ্ট্রে পাচার করা হয় কনটেইনারের গায়ে অন্য ওষুধের নাম লিখে, যেটা সেখানে বিক্রি করতে বাধা নেই। কখনও কখন ও পানি বা স্যালাইন সলিউশনের নাম করেও অন্য অননুমোদিত ওষুধ নেওয়ার চেষ্টা হয়। 

প্রাইসওয়াটারহাউসকুপারসের হিসাবে ওষুধের চোরাইবাজারে এভাবে বছরের যে ব্যবসা হয় তার পরিমাণ ২০০ বিলিয়ন ডলারের বেশি। 

গত দেড় বছরে বিশ্বকে বিপর্যস্ত করে ফেলা করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় নির্দিষ্ট কোনো ওষুধ এখনও মানুষ তৈরি করতে পারেনি। তবে হাসপাতালে জটিল কোভিড রোগীদের চিকিৎসায় যেসব পুরনো ওষুধ ব্যবহার করা হচ্ছে, তার মধ্যে রেমডেসিভির একটি।

এই অ্যান্টিভাইরাল ড্রাগ সরাসরি করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে কাজ করে না, তবে আক্রান্তদের কিছু উপসর্গের উপশমে সহায়তা করে বলে ধারণা পাওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশ কোভিড রোগীদের ওপর এ ওষুধ প্রয়োগের অনুমোদন দিয়েছে।   

ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদনে বলা হয়, মেক্সিকো সম্প্রতি কোভিড রোগীদের রেমডেসিভির ব্যবহারের অনুমোদন দেওয়ায় সেখানে এ ওষুধের চাহিদা অনেক বেশি।

মেক্সিকোর ওষুধ খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বলেছে, এ ধরনের নকল ওষুধের কারবার নিয়ে তারা উদ্বিগ্ন এবং যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় করে তারা কাজ করবে।