কোভিডের উৎস নিয়ে ‘স্বচ্ছ’ তদন্ত আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের

কোথা থেকে মানুষের দেহে প্রবেশ করেছে করোনাভাইরাস? বন্যপ্রাণীর দেহ থেকে নাকি গবেষণাগার থেকে? বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রাণঘাতী এ ভাইরাসের উৎস খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 May 2021, 02:28 PM
Updated : 26 May 2021, 06:01 PM

কিন্তু এখনও করোনভাইরাসের উৎস সম্পর্কে নিশ্চিত কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি।

এবছরের শুরুর দিকে করোনাভাইরাসের উৎস সন্ধানে চীনে আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ দল গেলেও বিষয়টির কোনও সুরাহা হয়নি। তদন্তকাজ এবং তদন্ত প্রতিবেদনে স্বচ্ছতা ও গভীরতায় ঘাটতি আছে বলে সমালোচনা হয়েছে।

তাই এ বিষয়ে ডব্লিউএইচওকে পরবর্তী পর্যায়ে নতুন করে আরও নিবিড় এবং ‘স্বচ্ছ’ তদন্ত নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য ও মানবসেবা মন্ত্রী জেভিয়ের বেসেরা।

বিবিসি জানায়, জেনেভায় মঙ্গলবার ডব্লিউএইচও’র মন্ত্রী পর্যায়ের এক বৈঠকে বেসেরা বলেন, কোথা থেকে করোনাভাইরাসের উৎপত্তি সে বিষয়টি আরও গভীরভাবে খতিয়ে দেখতে আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদেরকে অনুমতি দেওয়া উচিত।

যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকটি সংবাদ মাধ্যমের খবর অনুযায়ী, সম্প্রতি এমন কিছু তথ্য-প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে তাতে ধারণা করা হচ্ছে, চীনের গবেষণাগার থেকেই করোনাভাইরাস ছড়িয়েছে।

২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথম কোভিড-১৯ শনাক্ত হয়। তারপর থেকে বিশ্বজুড়ে ১৬ কোটি ৭০ লাখের বেশি মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গেছেন প্রায় ৩৫ লাখ মানুষ।

এ বছর ফেব্রুয়ারিতে ডব্লিউএইচও-র একটি গবেষক দল উহান শহরে যায় এবং চীনের বিজ্ঞানীদের সঙ্গে মিলে করোনাভাইরাসের উৎস খুঁজে বের করতে তদন্ত চালায়। মার্চে এক যৌথ তদন্ত প্রতিবদনে তারা জানান, চীনের গবেষণাগার থেকে দুর্ঘটনাবশত করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা ‘খুবই কম’।

তখন ডব্লিউএইচও থেকে বলা হয়েছিল, চীনের একটি গবেষণাগার থেকে করোনাভাইরাস ছড়িয়েছে, চূড়ান্তভাবে এমন রায় দেওয়ার আগে আরও তদন্ত যেমন প্রয়োজন। একইভাবে চীনের গবেষণাগার থেকে এটির ছড়ানোর সম্ভাবনা ‘সবচেয়ে কম’ হওয়া সত্ত্বেও এ বিষয়ে আরও গবেষণা হওয়া দরকার।

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থার বরাত দিয়ে দেশটির কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে বলা হয়েছে, ২০১৯ সালের নভেম্বরে উহান ইন্সটিটিউট অব ভাইরোলজির তিন সদস্য অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। তাদের দেহে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার মত উপসর্গ দেখা গিয়েছিল।

তারও কয়েক সপ্তাহ পর চীন প্রথম সেখানে কেউ কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হওয়ার খবর বিশ্বকে জানায়। যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যমের ওই খবরের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বেইজিং থেকে বলা হয়, চীন নয় বরং যুক্তরাষ্ট্রের গবেষণাগার থেকেই হয়ত করোনাভাইরাস ছড়িয়েছে।

মঙ্গলবার ডব্লিউএইচও-র বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য এবং মানব সেবা বিষয়ক মন্ত্রী অবশ্য চীনের নাম উল্লেখ করেননি। তবে তিনি স্পষ্ট করেই বলেছেন, ডব্লিউএইচও-র পরবর্তী পর্যায়ের তদন্ত আরো কঠোরভাবে পরিচালিত হবে বলেই তারা আশা করছেন।

বেসেরা বলেন, ‘‘কোভিড-১৯ মহামারী শুধু আমাদের জীবন থেকে একটি বছরই কেড়ে নেয়নি, লাখ লাখ মানুষের জীবনও কেড়ে নিয়েছে।”