৮ মিনিট ৪৬ সেকেন্ড: পুলিশ হেফাজতে যেভাবে মারা হয় জর্জ ফ্লয়েডকে

মিনেসোটা রাজ্যের মিনিয়াপোলিস শহরে পুলিশের নির্যাতনে কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যু নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে প্রতিবাদের আগুন ছড়িয়ে পড়ার পর সেই ক্ষোভ বিশ্বব্যাপী বিস্তৃত হয়েছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 June 2020, 05:35 AM
Updated : 2 June 2020, 06:04 AM

ফ্লয়েডের মৃত্যুর এক সপ্তাহের মাথায় আসা ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যেভাবে তার মৃত্যু হয়েছে, সেটা ‘হত্যাকাণ্ড’।

যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ ছড়িয়ে দেওয়া এ ঘটনার সূত্রপাত ২৫ মে, সোমবার মিনিয়াপোলিসের স্থানীয় সময় সন্ধ্যায়।     

এক খাবারের দোকানের কর্মচারী ৯১১ এ কল করে অভিযোগ করেন, এক ক্রেতা সিগারেট কেনার পর ২০ ডলারের জাল নোট দিয়েছে। পুলিশ এসে ওই অভিযোগে ৪৬ বছর বয়সী জর্জ ফ্লয়েডকে গ্রেপ্তার করে।

নিউ ইয়র্ক টাইমস এক প্রতিবেদনে বলেছে, ঘটনাস্থলে পুলিশের গাড়ি আসার ৭২ মিনিট পর রাস্তায় তিন পুলিশের নিচে চাপা পড়ে থাকা ফ্লয়েড অচেতন হয়ে ছিলেন, তার মধ্যে প্রাণের কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছিল না।

পথচারীদের মোবাইলে ধারণ করা ভিডিও, সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ এবং দাপ্তরিক নথি পর্যালোচনা করার পাশাপাশি বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়ে ওই সময়ের ঘটনাগুলো জোড়া দিয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ চিত্র দাঁড় করানোর চেষ্টা করেছে নিউ ইয়র্ক টাইমস।

তাদের ভিডিও দেখিয়েছে, ঘটনার শুরু থেকে পুলিশ কর্মকর্তারা ধারাবাহিকভাবে যেসব আচরণ করেছেন, তাতে মিনিয়াপোলিস পুলিশ বিভাগের নিয়ম লঙ্ঘন হয়েছে। এর পরিণতি হয়েছে মারাত্মক।

শ্বাস বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অনেক কাকুতি-মিনতি করেছিলেন ফ্লয়েড। প্রত্যক্ষদর্শীরা তাকে সাহায্য করার অনুরোধ জানালেও পুলিশ তাতে সাড়া দেয়নি। 

ফ্লয়েডের মৃত্যুর পরদিন মঙ্গলবার ওই ঘটনায় জড়িত চার পুলিশ কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করে পুলিশ বিভাগ।

এরপর শুক্রবার হেনেপিন কাউন্টি অ্যাটর্নি মাইক ফ্রিম্যান বরখাস্ত পুলিশ কর্মকর্তা ডেরেক শভিনের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ আনেন।

বিভিন্ন ভিডিওতে সবচেয়ে পরিষ্কারভাবে এই শভিনকেই ফ্লয়েডের ঘাড়ে হাঁটু তুলে দিয়ে রাস্তার সঙ্গে চেপে ধরে রাখতে দেখা যায়।

তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগে বলা হয়েছে, শ্বেতাঙ্গ ওই পুলিশ সদস্য ফ্লয়েডের ঘাড়ে হাঁটু দিয়ে ৮ মিনিট ৪৬ সেকেন্ড ধরে চেপে রেখেছিলেন।

ভিডিওতে দেখা গেছে, ফ্লয়েড অচেতন হয়ে যাওয়ার পরও শভিন তার হাঁটু সরাননি। চিকিৎসাকর্মীরা ঘটনাস্থলে আসার পরও পুরো এক মিনিট ধরে ফ্লয়েডের ঘাড় চেপে ধরে রেখেছিলেন তিনি।

ঘটনার সময় সেখানে আরও তিন পুলিশ কর্মকর্তা ছিলেন, তারা হলেন টমাস লেইন, জে. আলেকজান্ডার কুয়ং ও টু থাও। ফ্লয়েডের মৃত্যুর ঘটনায় তাদেরও বরখাস্ত করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে।