আমার ব্রেক্সিট প্রস্তাব না মানলে চুক্তি হবে না: মে

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী টেরিজা মে জানিয়ে দিয়েছেন, তার প্রস্তাবিত ব্রেক্সিট চুক্তি না মানলে এটি নিয়ে আর কোনো চুক্তিই হবে না ।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Sept 2018, 02:37 PM
Updated : 17 Sept 2018, 04:43 PM

দলের যে সব এমপি’রা মে’র ইইউ থেকে যুক্তরাজ্যের বেরিয়ে যাওয়ার (ব্রেক্সিট) পরিকল্পনার বিরোধিতা করছেন তাদের উদ্দেশ্যেই এ হুঁশিয়ার দেন তিনি।

সমালোচকরা বলছেন, ব্রিটিশ পার্লামেন্টে মে যে ব্রেক্সিট প্রস্তাব দিয়েছেন তাতে যুক্তরাজ্য ইউরোপ থেকে খুব একটা বিচ্ছিন্ন হবে না।

বিবিসি প্যানোরামাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মে বলেন, “যদি পার্লামেন্ট  চেকার্স পরিকল্পনা অনুমোদন না করে তবে আমার মনে হয় সেটির একমাত্র বিকল্প হবে কোনো চুক্তি না হওয়া।”

গত ৬ জুলাই মে’র ‘বাণিজ্যবান্ধব' ব্রেক্সিট পরিকল্পনা যুক্তরাজ্যের মন্ত্রিসভায় অনুমোদন পায়।

যদিও ওই প্রস্তাব নিয়ে মন্ত্রীদের মধ্যে চরম বিভাজন দেখা গিয়েছিল। যার প্রতিবাদে দুইদিনের মাথায় প্রথমে ডেভিড ডেভিস ব্রেক্সিটমন্ত্রীর পদ থেকে এবং পরে বরিস জনসন যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ান।

সাবেক ব্রেক্সিটমন্ত্রী ডেভিস নিজের পদত্যাগপত্রে মে'র পরিকল্পনার তীব্র সমালোচনা করেন।

মে’র দল কনজারভেটিভ পার্টির অনেক এমপিও ‘চেকারস প্ল্যান' পরিবর্তনের দাবি তুলেছেন। নতুবা তারা ওই প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন।

মে’র ব্রেক্সিট পরিকল্পনায় বিচ্ছেদের পরও যুক্তরাজ্যের পণ্যের ইইউ ‘ফ্রি ট্রেড জোনে' থাকার কথা বলা হয়েছে। এজন্য দেশটিকে ইইউ’র কিছু নিয়ম মানতে হবে।

বিচ্ছেদপন্থিদের মতে, এতে যুক্তরাজ্যের সার্বভৌমত্ব ক্ষুন্ন হবে এবং তা হবে ভোটারদের সঙ্গে ‘বিশ্বাসঘাতকতার নামান্তর’।

২০১৯ সালের ২৯ মার্চের মধ্যে যুক্তরাজ্যকে ইইউ ত্যাগ করতে হবে। অর্থাৎ হাতে আর মাত্র ছয় মাসের মত সময় আছে। অথচ এখনো যুক্তরাজ্য সরকার তাদের ব্রেক্সিট পরিকল্পনা চূড়ান্ত করতে পারেনি। যা নিয়ে ইইউ’র সঙ্গে আলোচনা করে মতৈক্যে পৌঁছতে হবে।

ব্রেক্সিটের পর ইইউ’র সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক ছাড়াও আরও বেশ কিছু সমস্যা সমাধানে মে কে রীতিমত লড়াই করতে হচ্ছে। যার মধ্যে অন্যতম আয়ারল্যান্ড সীমান্ত বিষয়ে সিদ্ধান্ত।

যুক্তরাজ্যের প্রদেশ নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড ও আইরিশ রিপাবলিকের মধ্যে ব্রেক্সিটের পর সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করা হবে কি না তা এখন বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

যদিও নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড বা আইরিশ রিপাবলিক উভয়ই সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ চায় না। কিন্তু ব্রেক্সিটের পর যুক্তরাজ্য ও ইইউ’র মধ্যে এটিই হবে একমাত্র স্থল সীমান্ত।

মে’র প্রস্তাবিত পরিকল্পনায় ‘আয়ারল্যান্ডের ভেতর ২০ কিলোমিটার সীমানা প্রাচীর নির্মাণের’ কথা বলা হয়েছে।

এখন পর্যন্ত এ সমস্যা সমাধানে যেসব উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে তা ‘সংবিধানের মর্যাদাহানিকর’ বলে মন্তব্য করেছেন বরিস জনসন।

অন্যদিকে, আরেক ব্রেক্সিটপন্থি জ্যাকব রেস-মগ বলেন, একটি ভাল চুক্তির জন্য প্রধানমন্ত্রীর ‘আরেকটু জোর চেষ্টা’ করা উচিত।