প্রধানমন্ত্রী মে বরাবরই দ্বিতীয় গণভোটের সম্ভাবনা নাকচ করে আসছেন। কিন্তু তিনি যেভাবে ব্রেক্সিট আলোচনা চালাচ্ছেন তা নিয়ে আপত্তি জানিয়েছেন সাদিক খান।
দৈনিক অবজারভারে রোববার প্রকাশিত এক কলামে লেবার পার্টির এ নেতা বলেন, ইইউ'র সঙ্গে বিচ্ছেদ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে যুক্তরাজ্যের হাতে আর মাত্র ছয় মাস সময় আছে। এত কম সময়ের মধ্যে হয় যুক্তরাজ্যের জন্য ‘খারাপ চুক্তি' হবে অথবা ‘কোনো চুক্তিই হবে না'।
২০১৯ সালের ২৯ মার্চের মধ্যে যুক্তরাজ্যকে ইইউ ছাড়তে হবে। অথচ ব্রাসেলসের সঙ্গে এখনও তারা বিচ্ছেদ পরিকল্পনা নিয়ে কোনো চুক্তিতে উপনীত হতে পারেনি।
গত ৬ জুলাই যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী টেরিজা মে মন্ত্রিসভায় তার ‘বাণিজ্যবান্ধব' ব্রেক্সিট পরিকল্পনা উপস্থাপন করেন এবং মন্ত্রীদের মধ্যে চরম বিভাজনের পরও তা অনুমোদন পায়।
যদিও ওই প্রস্তাবের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে দুইদিনের মাথায় প্রথমে ডেভিড ডেভিস ব্রেক্সিটমন্ত্রীর পদ থেকে এবং পরে বরিস জনসন যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ান।
সাবেক ব্রেক্সিটমন্ত্রী ডেভিস নিজের পদত্যাগপত্রে মে'র পরিকল্পনার তীব্র সমালোচনা করেন।
মের দল কনজারভেটিভ পার্টির এমপিরা তার ব্রেক্সিট পরিকল্পনাকে ‘চেকারস প্ল্যান'বলে তা পরিবর্তনের দাবি তুলেছেন। নতুবা তারা ওই প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন।
মে তার ব্রেক্সিট পরিকল্পনায় বিচ্ছেদের পরও যুক্তরাজ্যের পণ্যের ইইউ ‘ফ্রি ট্রেড জোনে' থাকার কথা বলেছেন। এজন্য দেশটিকে ইইউ’র কিছু নিয়ম মানতে হবে।
ইইউ থেকে বিচ্ছেদের পক্ষে থাকা নেতারা একে ‘বিশ্বাসঘাতকতার নামান্তর' বলেছেন।
সাদিক বলেন, প্রধানমন্ত্রী মের প্রস্তাবিত ব্রেক্সিট পরিকল্পনা ‘বিশৃঙ্খলার পাঁকে পড়ে গেছে এবং এটি নিয়ে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে’।
কনজারভেটিভ মন্ত্রী মাইকেল গভ বলেন, লন্ডনের মেয়র ভোটারদের ইচ্ছাকে বিফল করতে চাইছেন।
যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন খুব শিগগিরই বেক্সিট চুক্তিতে উপনীত হতে পারবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন নতুন ব্রেক্সিটমন্ত্রী ডমিনিক রাব।
আগামী সপ্তাহে সলসবুর্গে ইইউ নেতাদের সঙ্গে এ বিষয়ে বৈঠকে বসবেন তিনি।
ওদিকে, ব্রেক্সিট প্রশ্নে দ্বিতীয়বার গণভোটের আয়োজন করা হবে না বলে আবারও স্পষ্ট করে বলেছেন মে।
তিনি বলেন, বরং ইইউর সঙ্গে বিচ্ছেদ নিয়ে চূড়ান্ত চুক্তি অনুমোদন দিতে এমপি’রা ভোট দেবেন।
‘দ্য সান’ পত্রিকায় শনিবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, চ্যান্সেলর ফিলিপ হ্যামন্ড গত সপ্তাহে জ্যেষ্ঠ মন্ত্রীদের এক বৈঠকে নির্দিষ্ট সময়ে ব্রেক্সিট প্রক্রিয়া সম্পন্ন নাও হতে পারে বলে ধারণা প্রকাশ করে বলেন, আগে নতুন আইন পাস হতে হবে।
ওই খবর প্রকাশের পরপরই মে এই সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দেন মে।