জিম্বাবুয়ের মন্ত্রিসভার শীর্ষ পদগুলোতে সামরিক কর্মকর্তারা

জিম্বাবুয়ের নতুন মন্ত্রিসভার শীর্ষ পদগুলোতে সামরিক বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিয়োগ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট এমারসন এমনানগাওয়া।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 Dec 2017, 12:37 PM
Updated : 1 Dec 2017, 12:37 PM

পূর্বসূরি রবার্ট মুগাবেকে ক্ষমতা থেকে সরানোয় সেনাবাহিনী যে ভূমিকা রেখেছে তার পুরস্কার হিসাবেই দেখা হচ্ছে এমনানগাওয়ার এ নিয়োগকে।

সেনাবাহিনী জিম্বাবুয়ের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর রাষ্ট্রীয় টিভিতে যে জেনারেল কে দেখা গিয়েছিল সেই জেনারেল সিবুসিও মোয়োকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী করেছেন নতুন প্রেসিডেন্ট এমনানগাওয়া।

 আর বিমান বাহিনীর প্রধান পেরেন্স শিরিকে তিনি করেছেন কৃষি ও ভূমি বিষয়ক মন্ত্রী। শুক্রবার তিনি মন্ত্রিসভার পদগুলোতে এ নিয়োগ দেন।

গত সপ্তাহে জিম্বাবুয়ের প্রেসিডেন্ট রবার্ট মুগাবে পদত্যাগ করতে রাজি হওয়ার পর দেশটির নতুন প্রেসিডেন্ট হিসাবে শপথ নেন এমারসন এমনানগাওয়া।

মুগাবের আমলে এমনানগাওয়া ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন। তাকে বরখাস্ত করার পদক্ষেপ নেওয়াতেই মুগাবের  ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পট প্রস্তুত হয়।

সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট এমনানগাওয়াকে তার উত্তরসূরি বিবেচনা করা হলেও গত মাসে হঠাৎ করে সরকার ও দলীয় পদ থেকে তাকে বরখাস্ত করেন মুগাবে। স্ত্রী গ্রেস মুগাবেকে ক্ষমতার কেন্দ্রে নিয়ে আসতে নানগাওয়াকের মত অভিজ্ঞ নেতাকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে।

দলের উত্তসূরি নিয়ে দ্বন্দ্বের মধ্যে সেনাবাহিনী এক সপ্তাহ আগেই জিম্বাবুয়ের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে মুগাবেকে গৃহবন্দি করে এবং শেষপর্যন্ত তিনি পদত্যাগ করতে বাধ্য হন।

সামরিক বাহিনীর সহায়তায় এমনানগাওয়া গত সপ্তাহে ক্ষমতায় এসেই নতুন যুগের সূচনা করার ঘোষণা দিয়েছিলেন।

কিন্তু তার ঘোষিত নতুন মন্ত্রিসভার শীর্ষ পদে দুইজন সামরিক কর্মকর্তা থাকার কারণে এরই মধ্যে বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়েছে।

মেজর জেনারেল সিবুসিও মোয়ো সেনা অভ্যুত্থানের আগে তেমন পরিচিত ছিলেন না। তবে অভ্যুত্থানের সময় তিনি সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে টিভিতে বিবৃতি দিয়েছিলেন।  তাকে পররাষ্ট্র ও বৈদেশিক বাণিজ্য মন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

তাছাড়া, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক নিয়ে পিএইচডি করা সিবুসিও মোয়ো জিম্বাবুয়ের গ্রিন বেরেটস স্কোয়াডের নেতা ছিলেন।

অন্যদিকে, বিমান বাহিনীর প্রধান পেরেন্স শিরি ৮০’র দশকে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মুগাবের পক্ষ থেকে জিম্বাবুয়ের নাগরিকদের নির্বিচারে হত্যার ঘটনায় জড়িত ছিলেন।

জিম্বাবুয়ের রাজনীতিতে সামরিক বাহিনীর বিতর্কিত ভূমিকা রেখেছে। নতুন প্রেসিডেন্ট এমনানগাওয়া তার পূর্বসূরি মুগাবের মন্ত্রিসভার অনেককে রেখে দিয়েছেন। আবার একইসঙ্গে তাকে সমর্থন দেওয়ার পুরস্কার হিসেবে সামরিক কর্মকর্তাদের মন্ত্রিসভায় স্থান দিয়েছেন।

জেনারেল মোয়ো এবং শিরি ছাড়াও প্রভাবশালী প্রবীণ সেনা কর্মকর্তা  ক্রিস মুতসভাঙ্গওয়া, যিনি সামরিক হস্তক্ষেপের পর মুগাবেকে ক্ষমতা ছাড়তে চাপ সৃষ্টি করেছিলেন, তাকেও তথ্যমন্ত্রী করেছেন এমনানগাওয়া।

তার এ নিয়োগের সমালোচনায় সরকারের সমালোচক টেনদাই বিটি বলেছেন, জিম্বাবুয়েবাসী দেশে পরিবর্তনের ভুল আশা করেছিল।

ওদিকে, জিম্বাবুয়ের একটি সংবাদপত্রের মালিক ট্রেভর নুবে বলেন, “এ মন্ত্রিসভা খুবই হতাশাজনক।”