উ. কোরিয়ার নেতৃত্বকে ‘পুরোপুরি ধংস’ করার হুমকি যুক্তরাষ্ট্রের

যুদ্ধ বাধলে উত্তর কোরিয়ার নেতৃত্বকে ‘একদম ধ্বংস’ করে দেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ার করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 Nov 2017, 05:59 AM
Updated : 30 Nov 2017, 06:00 AM

বুধবার উত্তর কোরিয়ার ‘সবচেয়ে দূরপাল্লার’ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের পর জাতিসংঘে নিরাপত্তা পরিষদের এক জরুরি বৈঠকে জাতিসংঘে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত নিকি হ্যালি এ হুঁশিয়ারি দেন, খবর বার্তা সংস্থা রয়টার্সের। 

পিয়ংইয়ংয়ের ধারাবাহিক ক্ষেপণাস্ত্র ও পারমাণবিক কর্মসূচি মোকাবেলায় সামরিক বিকল্পসহ সম্ভাব্য সব পথ বিবেচনা করা হচ্ছে বলে বারবার জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, তবে এখনো কূটনৈতিক সমাধানেই তারা বেশি আগ্রহী বলে জানিয়েছে।

নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি সভাতেও একই ইঙ্গিত দেন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত।

“আমরা কখনোই উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ চাইনি, আজও চাচ্ছি না। যদি যুদ্ধ বাধেই তাহলে তা হবে তাদের ধারাবাহিক আগ্রাসনের কারণে যেমনটি গতকাল দেখলাম আমরা; আর যুদ্ধ বাধলে উত্তর কোরিয়ার শাসনব্যবস্থা একদম ধ্বংস করে দেওয়া হবে, কোনো ভুল করা হবে না,” বলেন হ্যালি।

উত্তর কোরিয়ায় তেল সরবরাহ বন্ধে চীনকে অনুরোধ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। তবে এ পর্যন্ত চূড়ান্তু এ পদক্ষেপ নেওয়া থেকে বিরত থেকেছে উত্তর কোরিয়ার প্রতিবেশী ও একমাত্র গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসায়িক অংশীদার চীন। তেল সরবরাহ বন্ধ হলে তা পিয়ংইয়ংয়ের অর্থনীতিতে ভয়াবহ প্রভাব ফেলবে বলে ধারণা পর্যবেক্ষকদের।

উত্তর কোরিয়ার নতুন আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার পর বুধবারই এ নিয়ে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে কথা বলেন যু্ক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

পরে টুইট বার্তায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন , “উত্তর কোরিয়ার উসকানিমূলক পদেক্ষেপ নিয়ে এই মাত্র  চীনা প্রেসিডেন্ট শি-র সঙ্গে কথা হলো। আজই উত্তর কোরিয়ার ওপর আরও বড় ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে। এই পরিস্থিতি অবশ্যই মোকাবেলা করা হবে।”

ট্রাম্প উত্তর কোরিয়াকে ‘সন্ত্রাসের পৃষ্ঠপোষক রাষ্ট্র’ ঘোষণা করার এক সপ্তাহের মাথায় আবারও ব্যালিস্টিক মিসাইলের পরীক্ষা চালাল পিয়ংইয়ং।

বুধবারের এ দীর্ঘ পাল্লার আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের (আইসিবিএম) পরীক্ষাকে ‘পুরো বিশ্বের জন্যই হুমকি’ বলছে ওয়াশিংটন। 

মার্কিন বিজ্ঞানীদের একটি সংগঠন বলছে, উত্তর কোরিয়ার এই ক্ষেপণাস্ত্র যুক্তরাষ্ট্রের যে কোনো অংশে আঘাত হানতে সক্ষম।

দক্ষিণ কোরিয়ার সেনাবাহিনীর বরাত দিয়ে বিবিসি জানায়, পিয়ংইয়ং থেকে উৎক্ষেপণের পর ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রটি সাড়ে চার হাজার কিলোমিটার উচ্চতায় পৌঁছায়; তারপর নেমে এসে বুধবার সকালে উত্তর কোরিয়া থেকে ৯৬০ কিলোমিটার দূরে জাপানের জলসীমায় পড়ে।

যে কোনো ধরনের ব্যালিস্টিক মিসাইল প্রযুক্তির উন্নয়ন ও ব্যবহারের বিষয়ে উত্তর কোরিয়ার উপর জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। কিন্তু আন্তর্জাতিক সমালোচনা ও নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করেই গত কয়েক বছর ধরে একের পর এক পারমাণবিক অস্ত্র ও দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়ে আসছে উত্তর কোরিয়া।

সেপ্টেম্বরে ব্যালিস্টিক মিসাইলের আগের পরীক্ষাটি চালিয়েছিল পিয়ংইয়ং; ওই মাসেই তারা পারমাণবিক অস্ত্রের ষষ্ঠ পরীক্ষাও চালায়। দেশটির শীর্ষ নেতা কিম জং উন বলে আসছেন, যুক্তরাষ্ট্রের কোনো হুমকিই তাদের লক্ষ্য থেকে সরাতে পারবে না।

রয়টার্স বলছে,চীনকে দিয়ে কার্যসিদ্ধি এবং পিয়ংইয়ংয়ের ওপর বেইজিংয়ের আরো নিষেধাজ্ঞার প্রতিশ্রুতি আদায়ে ওয়াশিংটনের কৌশলে খুব একটা ফল পাওয়া যায়নি এবং ট্রাম্প এর বাইরে কিছু ভাবছেন বলেও মনে হয় না।