বিদ্রোহ, রাষ্ট্রদ্রোহ ও রাষ্ট্রীয় অর্থ অপচয়ের অভিযোগে সমন পেয়ে বৃহস্পতিবার স্পেনিশ হাইকোর্টে হাজির হয়েছিলেন তারা।
মুক্ত থাকলে কাতালান মন্ত্রীরা স্পেন থেকে পালিয়ে যেতে কিংবা আলামত নষ্ট করতে পারেন এই সন্দেহে বিচারক কারমেন লামেলা ৮ মন্ত্রীকে রিমান্ডে নেওয়ার নির্দেশ দেন বলে বিবিসি জানিয়েছে।
সমন পেয়ে হাজির হয়েও রিমান্ড থেকে বেঁচেছেন কেবল বরখাস্ত হওয়া বাণিজ্যমন্ত্রী সান্তি ভিয়া; কাতালান পার্লামেন্টে স্বাধীনতা বিষয়ক আনুষ্ঠানিক ভোটাভুটির সময় বাইরে ছিলেন তিনি। তদন্ত কর্মকর্তাদের অনুরোধে তাকে জামিন দেওয়া হয়েছে।
যে ৮ মন্ত্রীকে রিমান্ড দেওয়া হয়েছে তার মধ্যে আছেন বরখাস্ত হওয়া ভাইস প্রেসিডেন্ট অরিয়ল জাঙ্কুয়েরেস ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী জোয়াকিম ফর্ন।
আরও আছেন বরখাস্ত পররাষ্ট্র মন্ত্রী রাউল রোমেভা, বিচার মন্ত্রী কার্লেস মুন্ডো, শ্রম মন্ত্রী ডোলোরস বাসা, প্রেসিডেন্সি কাউন্সিলর জর্দি তুরুল, টেকসই উন্নয়ন মন্ত্রী জোসেফ রুল এবং সংস্কৃতি মন্ত্রী মেরিটজেল বোরাস।
একই অভিযোগে বেলজিয়ামে থাকা কাতালান প্রেসিডেন্ট কার্লেস পুজদেমন এবং চার মন্ত্রীর বিরুদ্ধে ইউরোপীয় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারিরও আবেদন করেছেন স্পেনের তদন্ত কর্মকর্তারা। আদালত এই বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি।
বেলজিয়ামে থাকা পুজদেমন মন্ত্রীদের রিমান্ডে নেওয়ার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। বেলজিয়ামের অজ্ঞাত স্থান থেকে কাতালান টিভিকে দেওয়া বিবৃতিতে পুজদেমন বলেন,স্পেনিশ কোর্টের সিদ্ধান্ত ‘গণতন্ত্রের মূলনীতির ওপর আঘাত’।
তিনি ভাইস প্রেসিডেন্ট ও মন্ত্রীদের তাৎক্ষণিক মুক্তি দাবি করেন।
বৃহস্পতিবার ব্রাসেলসের একটি ক্যাফেতে পুজদেমনকে দেখা গেছে বলে জানিয়েছে বিবিসি। এর আগে তিনি বলেছিলেন, স্পেন ন্যায় বিচারের প্রতিশ্রুতি না দিলে তিনি আদালতের সমনে উপস্থিত হবেন না।
বেলজিয়ামে পুজদেমনের আইনজীবী বলেছেন, পরিস্থিতি কাতালান প্রেসিডেন্টের আদালতে উপস্থিত হওয়ার জন্য সুবিধাজনক নয়। যদিও তার মক্কেল স্পেন এবং বেলজিয়ামের কর্তৃপক্ষকে সহযোগিতা করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।
বেলজিয়ামের শীর্ষ এক আইন কর্মকর্তা বলেছেন, ইউরোপীয় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা হাতে পাওয়ার পরই তারা পুজদেমনের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বিবেচনা করবেন।
বৃহস্পতিবার কাতালান ৮ মন্ত্রীকে রিমান্ডে নেওয়ার প্রতিক্রিয়ায় বার্সেলোনাজুড়ে তীব্র বিক্ষোভ হয়েছে।
আঞ্চলিক পার্লামেন্টের কাছে জড়ো হওয়া স্বাধীনতাপন্থি কয়েক হাজার বিক্ষোভকারী কাতালান পতাকা ও ‘রাজবন্দিদের মুক্তি দাও’ স্লোগানে কাতালান মন্ত্রীদের মুক্তি দাবি করেছেন।
কাতালুনিয়ার অন্যান্য শহরেও মন্ত্রীদের মুক্তি চেয়ে বিক্ষোভ হয়েছে বলে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। কাতালুনিয়ার বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও নাগরিক গোষ্ঠীও স্পেনের বিচার ব্যবস্থার অবস্থানের প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
কাতালান পার্লামেন্টের স্পিকার কারমে ফোরকাদেলসহ আরও পাঁচ কর্মকর্তার বিরুদ্ধেও বিদ্রোহ, রাষ্ট্রদ্রোহ ও রাষ্ট্রীয় অর্থ অপচয়ের অভিযোগ এনেছে স্পেনের প্রসিকিউটররা।
পার্লামেন্টের দায়মুক্তির সুবাধে এই কর্মকর্তাদের বিচার হবে স্পেনের সুপ্রিম কোর্টে।আগামী ৯ নভেম্বর থেকে তাদের শুনানি শুরু হওয়ার কথা।