সিসিটিভি ভিডিওতে ‘ন্যাম হত্যার দৃশ‌্য’

কুয়ালালামপুর বিমানবন্দরের একটি সিসিটিভি ভিডিও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ‌্যমে ঘুরছে; বলা হচ্ছে, উত্তর কোরিয়ার শীর্ষ নেতা কিম জং উনের সৎ ভাই কিম জং ন্যামের উপর হামলার দৃশ‌্য ধরা পড়েছে সেখানে।

নিউজ ডেস্করয়টার্স
Published : 20 Feb 2017, 07:07 AM
Updated : 20 Feb 2017, 01:08 PM

জাপানের ফুজি টিভি ওই ভিডিও সম্প্রচার করার পর বার্তা সংস্থা রয়টার্স, চীনের সিসিটিভি, অস্ট্রেলিয়ার এবিসি নিউজসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ‌্যম এ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।  

ভিভিওতে দেখা যায়, কুয়ালালামপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের লাউঞ্জে এক নারী পেছন থেকে এক ব‌্যক্তির মুখ পেঁচিয়ে ধরলেন। ওই ব‌্যক্তি হুমড়ি খেয়ে পড়লেন এবং ওই নারী দ্রুত হেঁটে বেরিয়ে গেলেন।

কয়েকজন যাত্রীকেও এ সময় পেছন থেকে দৌড়ে যেতে দেখা যায় ভিডিওতে। পুরো ঘটনায় সময় লাগে মাত্র কয়েক সেকেন্ড।

মালয়েশীয় পুলিশের ধারণা, গত সোমবার ন্যাম কুয়ালালামপুর বিমানবন্দরে ম্যাকউয়ের ফ্লাইট ধরার অপেক্ষায় থাকার সময় তার মুখে শক্তিশালী কোনো বিষ স্প্রে করেন বা মাখিয়ে দেন ওই নারী।

হামলার পরপরই আরেক নারীকে অন্য দিক থেকে ন্যামের দিকে হেঁটে আসতে দেখা যায়, যদিও তিনি হত্যাকাণ্ডে জড়িত কী না- তা স্পষ্ট হয়নি। মালয়েশিয়ার পুলিশও ওই ভিডিও নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।

এবিসি নিউজ লিখেছে, মধ্যবয়সী ন্যামকে প্রথমে হুমড়ি খেয়ে পড়ে মুখ মুছতে দেখা যায়; এরপর কাতর স্বরে তিনি সাহায্য চান। এর পরপরই তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

এ হত‌্যায় জড়িত সন্দেহে মালয়েশিয়ার পুলিশ এ পর্যন্ত ভিয়েতনাম ও ইন্দোনেশিয়ার দুই নারীসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তার বাকি দুজনের মধ‌্যে একজন মালয়েশীয়, অন‌্যজন ন‌্যামের দেশ উত্তর কোরিয়ার নাগরিক। সন্দেহের তালিকায় থাকা আরও চারজনকে খুঁজছে মালয়েশিয়া পুলিশ, এরা সবাই উত্তর কোরিয়ার নাগরিক।

কিম জং ন্যাম উত্তর কোরিয়ার প্রয়াত সাবেক নেতা কিম জং ইলের বড় ছেলে। তার সৎভাই কিম জং উন ২০১১ সাল থেকে দেশটি শাসন করে আসছেন। 

রয়টার্স লিখেছে, ৪৬ বছর বয়সী ন্যাম চীনের নিয়ন্ত্রণাধীন ম্যাকাউয়ে থাকতেন। তবে সিঙ্গাপুর ও চীনেও তার যাতায়াত ছিল। ‘পরিবারতন্ত্রের উত্তরাধিকার’ নিয়ে প্রকাশ্যেই সমালোচনামুখর ছিলেন তিনি।

হত্যাকাণ্ডের পর থেকে দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা বলে আসছেন, উত্তর কোরিয়ার পাঠানো এজেন্টরাই ন্যামকে হত্যা করেছে বলে তাদের ধারণা। তবে মালয়েশিয়ার তদন্তকারীরা এর কোনও প্রমাণ এখনও পাননি। পিয়ংইয়ংও এ হত‌্যাকাণ্ড নিয়ে কোনো বিবৃতি দেয়নি।

ময়নাতদন্তে আপত্তি জানিয়ে উত্তর কোরিয়া ন্যামের মৃতদেহ সরাসরি তাদের কাছে হস্তান্তরের দাবি জানালেও মালয়েশিয়া তাতে রাজি নয়। হত্যার ঘটনা তদন্তে সহায়তা করতে ন্যামের আত্মীয়দের এগিয়ে আসারও আহ্বান জানিয়েছে কুয়ালালামপুর।

এই পাল্টাপাল্টির মধ‌্যে সোমবার উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছে মালয়েশিয়া। ন্যামের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন বুধবারের মধ্যেই প্রকাশ করা হবে বলে দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী এস সুব্রামানিয়াম জানিয়েছেন।

১৯৯৭ সালে ন্যামের এক চাচাত ভাইকেও দক্ষিণ কোরিয়ার ভেতরে হত্যা করা হয়। উত্তর কোরিয়ার দুই এজেন্ট তাকে গুলি করে হত্যা করে বলে ধারণা করা হলেও সেই হত্যাকারীদের কখনো ধরা যায়নি।