এআইয়ের তৈরি পর্ন ও ডিপফেইক অপরাধ হিসাবে চিহ্নিত করবে ইইউ

“এই ধরনের ছবিগুলো কেবল পপ তারকাদের জন্যই নয় বরং প্রত্যেক নারীর জন্য ক্ষতিকর, যাকে কর্মক্ষেত্রে বা বাড়িতে প্রমাণ করতে হবে যে এটি একটি ডিপফেইক ছিল।”

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Feb 2024, 08:56 AM
Updated : 8 Feb 2024, 08:56 AM

এবারে বিভিন্ন ধরনের সাইবার সহিংসতাকে অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করার প্রস্তাবে সম্মত হয়েছে ইউরোপীয় কমিশন ও পার্লামেন্ট। প্রস্তাবিত নীতি এআই টুলের সাহায্যে তৈরি ডিপফেইকসহ, সম্মতি ছাড়া অন্তরঙ্গ বিভিন্ন ছবির প্রচারকে অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করবে।

কীভাবে গৃহ সহিংসতা ও নারীদের ওপর অন্যান্য ধরনের অন্যায়ের মোকাবেলা করা যায় সে প্রসঙ্গে ২০২২ সালে একটি নির্দেশনার প্রস্তাব প্রকাশ করেছিল ইউরোপীয় কমিশন।

এটি ‘রিভেঞ্জ পর্ন’ বা প্রতিশোধের উদ্দেশ্যে তৈরি পর্নোগ্রাফিক ছবি বা ভিডিও তৈরি কমাবে বলে এক প্রতিবেদনে লিখেছে প্রযুক্তি বিষয়ক সাইট এনগ্যাজেট।

এ নিয়মে ‘সাইবার স্টকিং’ বা অনলাইনে নজরদারি, নারীর প্রতি বিদ্বেষমূলক মন্তব্য, ‘সাইবার ফ্ল্যাশিং’ বা অনলাইনে নগ্ন ছবি পাঠানোও ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে স্বীকৃত হবে।

কমিশন বলেছে, এসব কার্যকলাপের বিরুদ্ধে গোটা ইউরোপীয় ইউনিয়নের জন্য একটি নির্দেশনা থাকায় যেসব সদস্য রাষ্ট্র এগুলোকে এখনো অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করেনি তারাও প্রস্তাবিত এ নীতিমালা থেকে উপকৃত হবে।

“অনলাইন সহিংসতার বিস্তার ও নাটকীয় প্রভাবের পরিপ্রেক্ষিতে এ সমস্যা সমাধান করা জরুরী হয়ে পড়েছে।” – এক ঘোষণায় লিখেছে কমিশন।

এ ছাড়া, নির্দেশিকাটির ফলে সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে এমন ব্যবস্থা তৈরি করতে হবে যার মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা আরও সহজে সাইবার সহিংসতা শনাক্ত করতে পারবে। পাশাপাশি, কীভাবে এগুলো থামানো যায় বা কীভাবে সাহায্য নেওয়া যায় সে বিষয়েও ব্যবস্থা থাকতে হবে। আর এ কারণে নাগরিকদের জন্য একটি অনলাইন পোর্টাল তৈরি করতে হবে যেখানে তারা বিভিন্ন অভিযোগ জানাতে পারবেন বলে লিখেছে এনগ্যাজেট।

সম্প্রতি মার্কিন পপ গায়িকা টেইলর সুইফটের মুখ ব্যবহার করে পর্নোগ্রাফিক ডিপফেইক ছবি ছড়িয়ে পড়ায় ইইউ কর্মকর্তাদের নির্দেশিকার প্রস্তাবনা এগিয়ে নিয়ে যাওয়ায় প্রভাব রেখেছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে মার্কিন রাজনৈতিক সংবাদ সাইট পলিটিকো। ছবিগুলো ভাইরাল হওয়ার পরে সাময়িকভাবে এ সঙ্গীতশিল্পীর নামের অনুসন্ধানও বন্ধ করে দিয়েছিল সামাজিক মাধ্যম ‘এক্স’।

"নারীদের অপমান করার সর্বশেষ ঘৃণ্য উপায় হল এআই দিয়ে তৈরি অন্তরঙ্গ ছবি কয়েক মিনিটের মধ্যে শেয়ার করা।" – পলিটিকোকে বলেছেন ইউরোপীয় কমিশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট ভেরা জাউরোভা।

“এই ধরনের ছবিগুলো কেবল পপ তারকাদের জন্যই নয় বরং প্রত্যেক নারীর জন্য ক্ষতিকর, যাকে কর্মক্ষেত্রে বা বাড়িতে প্রমাণ করতে হবে যে এটি একটি ডিপফেইক ছিল।”

তবে, এখন পর্যন্ত ওপরে উল্লেখিত নিয়মগুলো একটি বিলের অংশ যা ইইউ সদস্য রাষ্ট্রের প্রতিনিধিদের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।

"কাউন্সিল ও ইউরোপীয় পার্লামেন্টেও গ্রহণের অপেক্ষায় রয়েছে চূড়ান্ত আইনটি," – বলেছে ইইউ কাউন্সিল।

পলিটিকোর প্রতিবেদন অনুসারে, যদি সবকিছু ঠিকঠাক থাকে ও বিলটি দ্রুত একটি আইনে পরিণত হয়, তবে ইইউ রাষ্ট্রগুলোর ২০২৭ সালের মধ্যে নতুন নিয়ম প্রয়োগ করতে হবে।