আনহেল দি মারিয়ার মতে, তিনি এত এত তারকাদের সঙ্গে খেলেছেন যেন অনায়াসে দুটি অল-স্টার টিম তৈরি করা যায়।
Published : 31 Jan 2024, 06:13 PM
জাতীয় দল ও ক্লাব মিলিয়ে কত কত তারকা ফুটবলারদের সঙ্গে মাঠ মাতিয়েছেন আনহেল দি মারিয়া। ক্যারিয়ারের পড়ন্ত বেলায় এসে তাকে সেইসব সতীর্থের মধ্যে থেকে সেরা একাদশ বেছে নিতে বলা হলো। ধন্দে পড়ে গেলেন তিনি। অনেক চিন্তা-ভাবনার পর একে একে নাম বললেন; আক্রমণভাগে মহাতারকার লিওনেল মেসির পাশে তরুণ তারকা কিলিয়ান এমবাপেকেও আনলেন। তবে, জায়গা হলো না বহুদিনের সতীর্থ ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোর।
রেয়াল মাদ্রিদ, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, পিএসজির মতো সেরা সব ক্লাব অধ্যায় শেষ করে এখন দ্বিতীয় মেয়াদে বেনফিকায় খেলছেন দি মারিয়া। সবচেয়ে বেশি শিরোপা জিতেছেন ফরাসি ক্লাবটির হয়ে। রেয়াল মাদ্রিদের হয়েও সাফল্য তার কম নয়; দলটির হয়েই পেয়েছেন একমাত্র চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ের স্বাদ।
দেশের হয়েও তার ক্যারিয়ার সাফল্যে ঠাসা। ২০০৭ সালে অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপ জয়ের পরের বছর পান বেইজিং অলিম্পিকস ফুটবলে সোনার পদক। এরপর জাতীয় দলে তার পথচলা শুরু। দীর্ঘ অপেক্ষার পর ২০২১ সালে এসে ধরা দিতে শুরু করে শিরোপা।
ওই বছর কোপা আমেরিকা ও পরের বছরের শুরুতে ফিনালিস্মিমা (কোপা আমেরিকা ও ইউরো জয়ীর লড়াই) এবং ২০২২ সালের শেষ দিকে কাতারে বিশ্বকাপ জেতে আর্জেন্টিনা।
সব জয়ের পর এবার বুটজোড়া তুলে রাখার পালা। পাঁচ মাস পরই শুরু হতে যাচ্ছে এবারের কোপা আমেরিকা, দি মারিয়ার বিদায়ের মঞ্চ। শেষ বেলায় এসে আর্জেন্টিনার সংবাদমাধ্যম টিওয়াইসিকে দেওয়া দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে পেছন ফিরে তাকালেন ৩৫ বছর বয়সী অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার। এতদিনের সব সতীর্থের মধ্যে থেকে খুব কষ্টে একে একে বেছে নিলেন তার সেরা একাদশ।
“বিষয়টা কঠিন, কারণ এখানে বন্ধুত্ব এসে যায়। আমি গোলরক্ষক হিসেবে দিবুকে (এমিলিয়ানো মার্তিনেস) বেছে নেব, তার ও কাসিয়ার (ইকের কাসিয়াস) মধ্যে থেকে, আমার চোখে তারা সেরা দুই গোলরক্ষক, সব জিতেছে। সাফল্য বিবেচনায় তারা দুজনই সেরা, তবে আমি দিবুকে বেছে নেব।”
“সেন্টার-ব্যাকে আমি সের্হিও রামোসকে নেব এবং আরেকজন ওতা (নিকোলাস ওতামেন্দি)। লেফট-ব্যাকে মার্সেলো, শতভাগ, সে অবিশ্বাস্য, অসাধারণ সব গুণের অধিকারী। রাইট-ব্যাকে আমরা জায়াগাটা ছেড়ে রাখব। মাঝমাঠে মাসচে (মাসচেরানো) নিঃসন্দেহে, মাঝে আমি দুজনের সঙ্গে খেলব, কারণ অনেক সময় সামনে এগিয়ে আমাকে খেলতে হবে। আরেক জন হলো রুই কস্তা।”
আক্রমণভাগ বেছে নিতে গিয়েই যেন তিনি বেশি সমস্যায় পড়েন। অনেক সেরাদের বাদ দিয়ে শেষ পর্যন্ত চার জনকে রাখেন তিনি।
“লিও (মেসি), নেই (নেইমার), ইব্রাহিমোভিচ ও কিলিয়ান (এমবাপে)। আরও অনেক আছে, সবাইকে নিয়ে একাদশ করা অসম্ভব। লাউতারো (মার্তিনেস), ফন পার্সি, রুনিকে বাদ দিতে হচ্ছে। সত্যিই অসম্ভব। অনেক অনেক (বড় মাপের) ফুটবলারদের সঙ্গে খেলার সুযোগ হয়েছে আমার। তাই এমন প্রশ্ন (একাদশ বাছাই) কেউ না করলে আমি আসলে ভাবতে শুরুও করি না যে কাদের সঙ্গে খেলেছি, অবিশ্বাস্য ব্যাপার তালিকায় যদি আমার নিজের নামও যোগ করতে হয়। অনায়াসে আমি দুইটা অল-স্টার দল গড়তে পারি।”
শেষে গিয়ে আরও কিছু নাম বললেন দি মারিয়া, ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও যাদের একাদশে রাখতে পারেননি।
“আমি ক্রিস্তিয়ানোকেও (রোনালদো) বাদ দিয়েছি, এছাড়া (গ্যারেথ) বেল, (করিম) বেনজেমা। আসলে আমার ক্যারিয়ারকে বর্ণনা করা অসম্ভব, আমি যা পেয়েছি, যাদের সঙ্গে খেলেছি অতুলনীয়…এবং তাদের সবার সঙ্গে আমি শুরুর একাদশে খেলেছি। আমি ওইসব ক্লাবে ওইসব খেলোয়াড়দের সঙ্গে শুরুর একাদশে নিয়মিত ছিলাম, যা মোটেও সহজ নয়। যখন কিলিয়ান, নেই ও লিও (পিএসজিতে একসঙ্গে) ছিল, তখনও আমার জায়গা ছিল।”
“আবার (রেয়ালে) বেনজেমা, ক্রিস্তিয়ানো ও বেলের সঙ্গেও। আমি (লুকা) মদ্রিচ, শাবি আলোনসোদের নামও বলিনি। সত্যিই আমি অনেক পেয়েছি…এবং আমি ওদের সবার প্রতি কৃতজ্ঞ কারণ সবার জন্যই আমি এতসব অভিজ্ঞতা পেয়েছি।”