মুরাদনগরের ২১ ইউপিতে ইভিএমে ‘ধীরগতি’, ‘মিলছে না’ আঙুলের ছাপ

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার ২১টি ইনিয়ন পরিষদের প্রায় সব কেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে ভোট গ্রহণে ‘ধীরগতি‘ এবং ‘আঙ্গলের ছাপ না মেলার‘ অভিযোগ পাওয়া গেছে। 

কুমিল্লা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 Jan 2022, 06:47 AM
Updated : 31 Jan 2022, 07:19 AM

সোমবার সকাল ৮টায় এসব ইউনিয়নে ষষ্ঠ ধাপের ভোট শুরু হয়। এতে প্রথমবারের মতো ইভিএমে ভোট গ্রহণ হচ্ছে।

ভোটারদের অভিযোগ, ভোট দিতে এসে তাদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পর বুথে ঢোকা গেলেও আঙুলের ছাপ না মেলায় ভোট দিতে পারছেন না তারা। এ বিরম্বনায় পড়ে ভোট না দিয়েই ফিরে যেতে হচ্ছে অনেককে।

সোমবার সকাল ১০টার দিকে মুরাদনগর উপজেলার টনকী ইউনিয়নের সোনারামপুর কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, ৯৫ বছর বয়সী সফিউল্লাহ কাঁপা কাঁপা শরীরে লাঠিতে ভর দিয়ে কেন্দ্রে এসছেন। সেখানে দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যের হাত ধরে ভোট কক্ষে গেলেও ‘আঙুলের ছাপ না মেলায়‘ তাকে ভোট না দিয়েই বের হয়ে আসতে হয়েছে।

সফিউল্লাহ বলেন, “অসুস্থ শরীর নিয়ে অনেক কষ্ট করে ভোট কেন্দ্রে এসেছি। ছাপ না মিলায় ভোট না দিয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছি।“

সফিউল্লাহর মত মনির মোল্লা (৬৫) ও জোবেদা খাতুনকেও (৭৮) ভোট না দিয়ে ফিরে যেতে হয়েছে ইভিএমে আঙুলের ছাপ না মেলায়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সোনারামপুর কেন্দ্রের প্রিজাইডিং কর্মকর্তা মো মনিরুল হক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “অনেকের আঙুলের ছাপে সমস্যা হচ্ছে। বিশেষ করে বয়স্ক ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে এমনটা হচ্ছে। আমরা তাদের পরামর্শ দিচ্ছি, দুপুরের পর আবার আসতে। তখন তাদের আবার নতুন করে ভোট নেওয়া হবে। এ সব কারণে ভোট গ্রহণে ধীরগতি হচ্ছে।”

সকাল ৮টায় সোনারামপুর কেন্দ্রে ভোট শুরুর পর এক ঘন্টায় তিনটি বুথে ৬৫টি ভোট পড়ে। আর সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত ওই কেন্দ্রে আঙুলের ছাপ না মেলায় প্রায় ৩০ জন ভোট দিতে পারেনি বলে জানান মনিরুল।

সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার রামচন্দ্রপুর উত্তর ইউনিয়নের আকাব্বরেরনেছা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়েও ভোট গ্রহণের ধীরগতি দেখা গেছে। অনেকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেও ভোট দিতে পারছেন না।

এ কেন্দ্রে কথা হয় ভোটার জোহরা বেগমের সঙ্গে। তিনি বলেন, ফজরের নামাজ পড়ে লাইনে দাঁড়িয়েছেন। কিন্তু অনেকক্ষণ অপেক্ষা করেও ভোট দিতে পারেননি।

আকাব্বরেরনেছা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিজাইজিং কর্মকর্তা মো. মজিবুর রহমান বলেন, তার কেন্দ্রে দুই হাজার দুইজন ভোটার আছেন। ছয়টি বুথ। সকাল আটটা থেকে ৯টা পর্যন্ত ৫ শতাংশ ভোট পড়েছে। মুরাদনগরে প্রথমবারের মতো ইভিএম পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণ হচ্ছে। সকলে এই পদ্ধতিতে অভ্যস্থ না হওয়ায় ভোট গ্রহণে কিছুটা সময় লাগছে।

ওই কেন্দ্রের ৫ নম্বর বুথে ভোটার সংখ্যা ৩৫৬ জন। ভোট শুরু পর প্রথম এক ঘণ্টায় ভোট গ্রহণ হয় মাত্র ৯টি। পরের এক ঘণ্টায় ২৩টি বলে জানান মজিবর।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে কুমিল্লা জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ মঞ্জুরুল আলম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, মুরাদনগন উপজেলার প্রায় প্রত্যেক ইউনিয়ন থেকে আঙ্গলের ছাপ না মেলার অভিযোগ এসেছে। যাদের ছাপ মিলছে না তাদের ভোটার আইডি কার্ড দুপুরের পরে আবার কেন্দ্রে আসতে বলা হয়েছে । বিকাল ৪টায় ভোট গ্রহণ শেষ হবে। এর আগে যারা কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবেন, তাদের সবার ভোট নেওয়া হবে।