দিনাজপুর আবহাওয়া কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তোফাজ্জল হোসেন বুধবার সকালে বলেন, “সপ্তাহজুড়ে জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্র ১০ ডিগ্রি থেকে ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে উঠানামা করেছে। বুধবার সকাল ৯টায় দিনাজপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে এসেছে।”
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এটিই আজকে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। শৈত্য প্রবাহে বাতাসের গতি ঘণ্টায় চার থেকে পাঁচ কিলোমিটার বেগে বইছে।”
এদিকে তীব্র কুয়াশার কারণে আলু ক্ষেত এবং বোরো বীজতলা নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন অনেক কৃষক।
বিরল উপজেলার রাণীপুকুর ইউনিয়নের ঝিনাইকুড়ি গ্রামের কৃষক শিপন সরেন বলেন, “ভোরে প্রচণ্ড কুয়াশা হয়। অনেক বেলা করে সূর্যের দেখা মিলে। কুয়াশা যদি এভাবে চলতে থাকে তাহলে বীজতলার ক্ষতি হবে। সেটা নিয়েই চিন্তায় আছি। এখন বীজতলা নষ্ট হলে আর করা যাবে না।”
একই এলাকার আলুচাষি সমীর সরকার জানান, তিনি দুই বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছেন। কিন্তু প্রচণ্ড শীত আর কুয়াশার কারণে এখন ফলন নিয়ে তিনি শঙ্কিত।
তবে জেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রদীপ গুহ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “শীত ও কুয়াশার দাপট থাকলেও প্রতিদিনই যদি বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সূর্যের দেখা মিলে তাহলে আলু ক্ষেত বা বীজতলার কোনো ক্ষতির সম্ভাবনা নেই।”
তিনি আরও জানান, এ বছর দিনাজপুর জেলায় ৪৮ হাজার ৫৯০ হেক্টর জমিতে আলু চাষ এবং এক লাখ ৭৫ হাজার হেক্টর জমিতে ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
প্রতিদিনই বিকাল ৫টার পর থেকে শীতের দাপট শুরু হয় এবং তা পরদিন বেলা ১১টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। উত্তরের হিমেল হাওয়া আর কুয়াশার কারণে রাস্তায় যানবাহনগুলোকে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে।
দূরপাল্লার পরিবহনও চলছে ধীরগতিতে। কুয়াশার কারণে সড়কে দুর্ঘটনার পরিমাণ বেড়েছে বলে দিনাজপুরের ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স কার্যালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
এই অবস্থায় জেলার খেটে খাওয়া দরিদ্র ও ছিন্নমুল মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। বিশেষ করে কৃষিশ্রমিক ও নির্মাণশ্রমিকদের জীবীকার তাগিদে শীত উপেক্ষা করেই কাজে যেতে হচ্ছে।