শুক্রবার স্থানীয় এক সাংবাদিকের কাছে খবর পেয়ে মোবাইল ফোনে কথা হয় গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার বনগ্রামের বাসিন্দা নশু শেখ (৪৫) এর সঙ্গে।
তিনি ‘১৩ বছর ধরে’ রামদিয়া বাজারে ভূমি অফিসের পাশে ফুটপাতে বসে সিঙ্গারা বিক্রি করে সংসার চালান।
তিনি বলেন, “আমরা এহ্যানের ভোটার না, তাই কেউ আমাগে সাহায্য দ্যায় না।
“চেয়ারম্যান-মেম্বর ও অনেক নিত্যাগে কাছে গ্যাছি কেউ এটটু সাহায্য করেনাই। সবাই বলে তুমরা এহ্যানের ভোটার না, যেহ্যানের ভোটার সেহ্যানে যাও।”
সরকারি নির্দেশে গত মাসের ২৫ তারিখ থেকে অন্য অনেকের মতো তার ক্ষুদ্র ব্যবসাও বন্ধ, ঘরে থাকছেন তিনি।
পরিবারের সাত সদস্য নিয়ে কর্মহীন হয়ে সরকারি সহায়তা অভাবে নিদারুন দুঃখ কষ্টের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন তিনি। তবে এলাকার চেয়ারম্যান, মেম্বার, রাজনৈতিক নেতা ও বিত্তশালীদের দুয়ারে দুয়ারে ধর্না দিয়েও সামান্য সাহায্য মেলেনি তার বলে দাবি করছেন তিনি।
তিনি ওই এলাকার ভোটার না হওয়ায় বলে সকলে তাকে ফিরিয়ে দিয়েছেন বলছেন তিনি।
নশুর স্ত্রী আফরোজা বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে মোবাইল ফোনে বলেন, “এতদিন হলো স্বামী বেকার অবস্থায় ঘরে বসা, কাজ-কাম নাই। দুই মাসের বাড়ি ভাড়া বাকি।
“সরকার থেকে কত চাল-ডাল, তেল দিচ্ছে আমাদের কপালে একটা দানাও জুটল না।”
ইউনিয়ন পরিষদে গেলে চেয়ারম্যান-মেম্বাররা বলেছেন ‘তোমরা তো এখানের ভোটার না। যেখানের ভোটার সেখানে যাও,’ বললেন তিনিও।
তবে তাদের দাবি অস্বীকার করে বেথুড়ী ইউপি চেয়ারম্যান ক্ষিরোদ রঞ্জন বিশ্বাস বলেন, “আমার কাছে এ রকম কেউ এখন পর্যন্ত আসেনি। তবে ওই পরিবার প্রধানের ছবি ও জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি দিয়ে গেলে আমি তাদের খাদ্য সহায়তা দেব।”
এ ব্যাপারে কাশিয়ানী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাব্বির আহমেদ বলেন, “এ রকম কেউ ভোটার না হলেও আমরা তাকে সাহায্য করব। মানবিক কারণেই আমরা ওই পরিবারকে সাহায্য দেব।
“যেমন অস্থায়ী বেদেদেরকে আমরা সরকারি খাদ্য সহায়তা দিয়েছি।”