সীমান্তে ৪ রোহিঙ্গার লাশ উদ্ধার 

মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর অব্যাহত দমন-পীড়নের মধ্যে কক্সবাজার ও বান্দরবানের সীমান্ত এলাকা থেকে আরও চারজন রোহিঙ্গার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে; যাদের মধ্যে এক দম্পতি রয়েছে।  

কক্সবাজার প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 Sept 2017, 05:07 AM
Updated : 3 Sept 2017, 08:22 AM

কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার নাফ নদীর হোয়াইক্যং পয়েন্ট থেকে পুলিশ এবং বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম সীমান্ত থেকে বিজিবি শনিবার গভীর রাতে লাশগুলো উদ্ধার করে।

এ নিয়ে পাঁচদিনে ৫৪ জন রোহিঙ্গার মৃতদেহ উদ্ধার হলো।

বিজিবির কক্সবাজার-৩৪ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মঞ্জুরুল হাসান খান বলেন, শনিবার গভীর রাতে বান্দরবানের ঘুমধুম ইউনিয়নের জলপাইতলী পয়েন্টে শূন্যরেখার বাংলাদেশের অভ্যন্তরে দুইটি গুলিবিদ্ধ লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা বিজিবিকে খবর দেয়। পরে বিজিবি গিয়ে তা উদ্ধার করে।

লাশ সীমান্তের জলপাইতলীতে রাখা হয়েছে বলে জানান তিনি।

মৃতরা মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের আকিয়াব জেলার মংডু থানার ঢেঁকিবুনিয়া এলাকার মো.জাফরুল্লাহ ও তার স্ত্রী আয়েশা বেগম বলে ওই এলাকা থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা আবুল হোসেন জানিয়েছেন।   

তিনি বলেন, মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতনের মুখে সহায় সম্পদ ফেলে গত দুইদিন আগে ঘুমধুম সীমান্ত পেরিয়ে জাফরুল্লাহসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করে।

“ফেলে আসা সহায়-সম্পদ আনতে শনিবার তারা ঘুমধুমের জলপাইতলী সীমান্ত দিয়ে মিয়ানমার যান। তারা ঢেঁকিবুনিয়ায় পৌঁছার পর মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও পুলিশ তাদের গুলি করে।

“গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তারা বাংলাদেশের দিকে রওনা দেন। এক পর্যায়ে ঘুমধুমের জিরো পয়েন্টের কাছাকাছি এলাকায় মিয়ানমার অভ্যন্তরে তাদের মৃত্যু হয়।”

এদিকে নাফ নদীর থেকে ভাসমান অবস্থায় উদ্ধার করা লাশগুলো দুই রোহিঙ্গা নারীর বলে টেকনাফ থানার ওসি মো.মাইনুদ্দিন খান জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, “রাতে স্থানীয়রা লাশগুলো দেখে খানায় খবর দিলে পুলিশ গিয়ে সেগুলো উদ্ধার করে। লাশে সামান্য পঁচন ধরেছে। নিহতদের পরনে স্থানীয় বার্মিজ পোশাক ছিল।”

লাশগুলো স্থানীয় কবরস্থানে দাফন করা হবে। 

এর আগে শনিবার সকালে নাফ নদীর টেকনাফের শাহপরীরদ্বীপ পয়েন্ট থেকে একজন  ও রাতে হোয়াইক্যং পয়েন্ট দুইজন, বুধবার চারজন, বৃহস্পতিবার ১৯ জন এবং শুক্রবার ২৬ জন রোহিঙ্গার লাশ উদ্ধার করা হয়।

গত ২৪ অগাস্ট মিয়ানমারের রাখাইনে একসঙ্গে ৩০টি পুলিশ পোস্ট ও একটি সেনাক্যাম্পে রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের হামলার পর সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ায় সীমান্তে নতুন করে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের ঢল শুরু হয়।

কক্সবাজার ও বান্দরবানে নাফ নদী পেরিয়ে সীমান্তের জিরো পয়েন্টে আশ্রয় নেওয়া অসহায় রোহিঙ্গাদের দিকে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষীদের গুলি করার ঘটনাও ঘটেছে।

শরীরে গুলি ও পোড়া ক্ষত নিয়ে চট্টগ্রামে মেডিকেলে ভর্তি আছেন বেশ কজন রোহিঙ্গা।    

গত এক সপ্তাহে অর্ধ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেছে বলে জাতি সংঘ শরণার্থী সংস্থার তথ্য। তবে প্রকৃত সংখ্যা এর চেয়ে কয়েক গুণ বেশি বলে সীমান্তবাসীর ধারণা।