কোভিড সংক্রমণ বাড়লেও সরকার উদাসীন: মোশাররফ

নতুন করে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধির মধ্যে প্রতিবেশী ভারতসহ অনেক দেশ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিলেও সরকার উদাসীন রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 March 2021, 12:21 PM
Updated : 16 March 2021, 12:43 PM

মঙ্গলবার রাজধানীতে এক আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এ অভিযোগ করেন।

খন্দকার মোশাররফ বলেন, করোনাভাইরাস ধরণ পরিবর্তন করে আবার আক্রমণ করছে; সারা পৃথিবী ব্যবস্থা নিচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশ সাবধানতা অবলম্বন করে নাই।

“ব্রিটেন লকডাউন করেছে, ভারতে লকডাউন করেছে আবার, ইউরোপ লকডাউন করেছে। কিন্তু বাংলাদেশ সরকার কোনো ব্যবস্থাগ্রহণ করে নাই। কেননা তাদের সামনে কিছু অনুষ্ঠান আছে।”

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মঙ্গলবার পর্যন্ত এক দিনে দেশে আরও ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে, নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে আরও ১ হাজার ৭১৯ জন।

ফেব্রুয়ারিতে দেশে সংক্রমণের হার ছিল ৩ শতাংশের নিচে, যেটা মার্চের শুরু  থেকে বাড়তে বাড়তে এখন ৮ শতাংশের উপরে উঠে গেছে।

বিএনপি নেতা মোশাররফ বলেন, “আমরা মনে করি, সরকার এখনো উদাসীন অথবা ইচ্ছাকৃতভাবে দ্বিতীয় ধাপ বা দ্বিতীয় টেউকে প্রতিরোধে করার জন্য যে কর্মকাণ্ডগুলো করা দরকার, সেগুলোর একটাও করছে না।

“এটাকে হয় তারা অবহেলা করছে, না হলে ইচ্ছাকৃতভাবে সেগুলো গ্রহণ করছে না, যার জন্য জনগণ আবার করোনার কাছে বিপর্য্স্ত হয়ে গেল এবং তারা আবার একটা বিরাট সংকটের সম্মুখীন।”

পাঁচ রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানকে বিএনপির স্বাগতম

বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে প্রতিবেশী পাঁচ দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানের ঢাকা সফরকে স্বাগত জানিয়েছে বিএনপি।

মঙ্গলবার দুপুরে বিএনপির স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন নিয়ে আলোচনা সভায় খন্দকার মোশাররফ হোসেন তাদের স্বাগত জানান।

তিনি বলেন, বিদেশ থেকে বিশিষ্ট ‘মেহমানরা’ বাংলাদেশে আসছেন। গত বছরের মার্চ মাসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী আসার কথা ছিল। মহামারীর কারণে তিনি আসেননি। গত বছরের মার্চে যে পরিমাণ সংক্রমণের হার এবং মৃত্যুর সংখ্যা, এখন কিন্তু তার চাইতে বেশি।

“তারপরেও যে তারা (বিদেশি মেহমানরা) আসছেন। তাই আমরা স্বাগত জানাই তাদেরকে, দুঃসাহস করে তারা যে আসছেন, তার জন্য আমরা স্বাগত জানাই।”

১০ দিনের এই আয়োজনে যোগ দিতে ১৭ মার্চ থেকে ২৬ মার্চ পর্যন্ত সময়ে পর্যায়ক্রমে ঢাকায় আসবেন মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহামেদ সলিহ, শ্রীলংকার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে, নেপালের প্রেসিডেন্ট বিদ্যা দেবী ভাণ্ডারি, ভুটানের প্রধানমন্ত্রী ডা. লোটে শেরি ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

এই অনুষ্ঠান উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে ‘১০ দিনের জন্য রাজনৈতিক-সামাজিক অনুষ্ঠান বন্ধ রাখার’ যে আহ্বান করা হয়েছে তার সমালোচনা করেন খন্দকার মোশাররফ।

তিনি বলেন, “সরকার প্রধানরা অতীতেও এসেছেন এদেশে। সার্ক সম্মেলন হয়েছে সাতটি দেশের সরকারপ্রধানরা এসেছিলেন। তখনো কিন্তু এভাবে সব প্রোগ্রাম বন্ধ করে দেওয়া হয়নি।

“যে মেহমানরা আসছেন, তারা যদি এখবর জানেন যে, আপনারা তাদের আসা উপলক্ষে মানুষকে কষ্ট দিচ্ছেন, ‍দুর্ভোগ সৃষ্টি করেছেন, তাহলে তারাও লজ্জিত হবেন।”

তিস্তা চুক্তি প্রসঙ্গে

তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি ১০ বছর আগে পাতায় পাতায় সই হয়ে রয়েছে বলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেনের মন্তব্যের ব্যাখ্যা দাবি করে মোশাররফ বলেন, “আপনারা তো বলেছিলেন যে, তিস্তা চুক্তি স্বাক্ষর হয় নাই, তিস্তা চুক্তি কোনো অগ্রসর হয় নাই। আজকে যে বললেন, পাতায় পাতায় সিগনেচার হয়ে রয়েছে। তাহলে কী রহস্য রয়েছে?

“এটা কেন জনগণের সামনে উপস্থাপন করলেন না; এটার বাস্তবায়ন কেন শুরু হলো না। এজন্য সরকারকে আমরা অভিযুক্ত করতে চাই।”

জাতীয় প্রেসক্লাবের তৃতীয় তলায় আবদুস সালাম হলে জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক দলের উদ্যোগে ‘স্বাধীনতার ৫০ বছর: প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা হয়।

সংগঠনের সভাপতি হুমায়ুন কবির বেপারির সভাপতিত্বে সভায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া, জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থা জাসাসের সাবেক সভাপতি রেজাবুদ্দৌলা চৌধুরী, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, মহানগর বিএনপি দক্ষিনের সহসভাপতি নবী উল্লা নবী, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার আনোয়ার হোসেন, অধ্যাপক একেএম রফিকুল ইসলাম বক্তব্য দেন।

মোশাররফ বলেন, “৫০ বছরে স্বাধীনতার প্রত্যাশা ও জনগণের আকাঙ্ক্ষা, গণতন্ত্রকে আওয়ামী লীগ হত্যা করেছে। অতীতেও একদলীয় শাসনব্যবস্থা কায়েমে জোর করেছিল, এখনো সেটাই করছে।”