২০০৪ সালের ডিসেম্বরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষিক্ত ধোনি ২০০৭ সালেই পেয়ে যান জাতীয় দলের নেতৃত্ব। দক্ষিণ আফ্রিকায় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলেননি টেন্ডুলকারসহ ভারতের সিনিয়র ক্রিকেটাররা। প্রথমবার নেতৃত্ব দিয়েই তরুণ এক দল নিয়ে ভারতকে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ এনে দেন ধোনি।
এরপর ধোনি ও ভারতীয় ক্রিকেটকে পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। তার নেতৃত্বে টেস্ট র্যাঙ্কিংয়ে প্রথমবার শীর্ষে ওঠে ভারত, জিতে নেয় ওয়ানডে বিশ্বকাপ ও আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। ধোনি নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন ক্রিকেট ইতিহাসের সেরা অধিনায়কদের একজন হিসেবে।
ধোনির বিদায়ের ঘোষণার পর ক্রিকেট বিশ্বজুড়ে চলছে ধোনি-বন্দনা। ভারতীয় সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে টেন্ডুলকার ফিরে গেলেন ১৩ বছর আগে, তুলে ধরলেন ধোনির নেতৃত্ব পাওয়ার প্রেক্ষাপট।
“বিস্তারিত সবকিছু বলতে চাই না। তবে আমাকে যখন জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, ওর কথা বলেছিলাম। আমি জানিয়ে দিয়েছিলাম যে দক্ষিণ আফ্রিকায় যাব না, কিছু চোট সমস্যা ছিল। ওই সময়টায় আমি প্রথম স্লিপে দাঁড়াতাম, ধোনির সঙ্গে প্রচুর কথা হতো, তার ভাবনা বোঝার চেষ্টা করতাম। মাঠ সাজানো থেকে শুরু করে সব বিষয়ে কথা হতো।”
ধোনির নেতৃত্বে ভারত ২০০৭ বিশ্বকাপ জয়ের পরের বছর সেই সময়ের বোর্ড সভাপতি শারদ পাওয়ার বলেছিলেন, তরুণদের নিয়ে টি-টোয়েন্টি দল সাজানো ও ধোনিকে নেতৃত্ব দেওয়ার পরামর্শ টেন্ডুলকারই দিয়েছিলেন বোর্ডকে।
ধোনির কোন দিকটি সবচেয়ে বেশি মনে ধরেছিল, পেছন ফিরে তাকিয়ে সেটিও মনে করলেন টেন্ডুলকার।
“ আমি যা ভাবতাম আর ধোনি যা ভাবত, বেশির ভাগ সময় আমরা একমতই হতাম। কাউকে কোনো কিছুতে রাজী করাতে হলে চিন্তা-ভাবনায় মিল থাকতে হবে, ওর ঠিক সেই ব্যাপারটিই ছিল। আমাদের ভাবনা ছিল একইরকম। এজন্যই আমি পরামর্শ দিয়েছিলাম, ওকেই দায়িত্ব দেওয়া উচিত।”
পরে ধোনি যখন টেস্ট অধিনায়ক হলেন, তখনও দলে ছিলেন টেন্ডুলকার, সৌরভ গাঙ্গুলি, রাহুল দ্রাবিড়, ভিভিএস লক্ষ্নণ, বিরেন্দর শেবাগ, হরভজন সিং, জহির খানের মতো দলের সিনিয়র ক্রিকেটাররা। ধোনি কিভাবে তাদের সামলাতেন? টেন্ডুলকার বললেন তার অভিজ্ঞতা থেকে।
“ আমি কেবল নিজের কথাই বলতে পারি, অধিনায়ক হওয়ার কোনো ইচ্ছা তখন আমার ছিল না। আমার স্রেফ চাওয়া ছিল মাঠে নেমে জয়ের জন্য খেলা। অধিনায়ক যে-ই হোক, আমি শতভাগই দিতাম এবং দলের জন্য যেটা ভালো মনে করি, তাকে বলতাম। তার পর বাকিটা অধিনায়কের ওপর, তবে আমাদের দায়িত্ব অধিনায়কের চাপ কমানোর।”
“ধোনি যখন অধিনায়কত্ব পায়, ততদিনে আমি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দেড় যুগ কাটিয়ে ফেলেছি। এত লম্বা সময় খেলার পর নিজের দায়িত্বটুকু জানতাম। তারা আমাকে বড় ভাই হিসেবে দেখত, আমার দায়িত্ব ছিল তাদেরকে পথ দেখানোর এবং সবাইকে সমানভাবে দেখার। দলে এমন একটা সম্পর্ক থাকা উচিত, যেখানে সবাই পরস্পরকে বিশ্বাস করবে, সব কথা বলবে এবং আমি সেটিই বিশ্বাস করতাম।”