'মানবাধিকার ইস্যুতে' আফগানিস্তানের সঙ্গে সিরিজ ফের স্থগিত করল অস্ট্রেলিয়া

‘আফগানিস্তানে নারীদের অবস্থা ক্রমে আরও খারাপ হচ্ছে’, এই কারণে আফগানদের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ না খেলতে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়াকে পরামর্শ দিয়েছে অস্ট্রেলিয়ান সরকার।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 March 2024, 09:35 AM
Updated : 19 March 2024, 09:35 AM

তালেবান শাসনে আফগানিস্তানের নারীদের মানবাধিকার পরিস্থিতির ক্রমাগত অবনতির অভিযোগ এনে টি-টোয়েন্টি সিরিজ স্থগিত করেছ ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া। এতে প‍্যাট কামিন্স, মিচেল স্টার্কদের বিপক্ষে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলার অপেক্ষা বাড়ছে রাশিদ খান, মোহাম্মদ নাবিদের। 

আগামী অগাস্টে আফগানিস্তানের বিপক্ষে নিরপেক্ষ ভেন্যুতে তিনটি টি-টোয়েন্টি খেলার কথা ছিল অস্ট্রেলিয়ার। যা আইসিসির ভবিষ্যৎ সফর সূচির অংশ।

আফগানিস্তানে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগেই ২০২১ সালে আফগানিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট স্থগিত করে দেয় অস্ট্রেলিয়া। যেটি হওয়ার কথা ছিল অস্ট্রেলিয়াতেই। পরে গত বছরের মার্চে আফগানদের সঙ্গে প্রস্তাবিত তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজও তারা স্থগিত করে দেয় একই কারণে।

গত বছর ওয়ানডে সিরিজটি স্থগিত করে দেওয়ার পর আফগানদের সবচেয়ে বড় তারকা রাশিদ খান হুমকি দিয়েছিলেন, অস্ট্রেলিয়ার ফ্র্যাঞ্চাইজি টি-টোয়েন্টি আসর বিগ ব্যাশ থেকে নিজেকে সরিয়ে নেবেন তিনি। পরে অবশ্য সেই ঘোষণা থেকে সরে এসে খেলার সিদ্ধান্ত নেন এই লেগ স্পিনার। পুরোনো দল অ্যাডিলেইড স্ট্রাইকার্সেই খেলতে চুক্তিবদ্ধ হন তিনি। যদিও চোটের কারণে এই আসরে তার খেলা হয়নি।

আফগানিস্তানে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনে তালেবানরা ক্ষমতায় আসার পর বন্ধ করে দেয় মেয়েদের ক্রিকেট। তখন থেকেই দেশটিতে মেয়েদের অধিকার প্রসঙ্গে সরব অস্ট্রেলিয়া। এর জের ধরেই টেস্ট, ওয়ানডের পর এবার স্থগিত করল তারা টি-টোয়েন্টি সিরিজ। 

ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে বলেছে, ২০২৩ সালে ওয়ানডে সিরিজ স্থগিত করার পর থেকে আফগানিস্তানে মেয়েদের অধিকার ‘লক্ষ‍ণীয় অবনতি’ হওয়ার তথ্য পেয়েছে তারা।

“আফগানিস্তানের পরিস্থিতি নিয়ে গত ১২ মাস ধরে অস্ট্রেলিয়ান সরকারের সঙ্গে নিয়মিত আলোচনা চলছে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার। সরকারের পরামর্শ হলো, আফগানিস্তানে মেয়ে শিশু ও নারীদের অবস্থা ক্রমে আরও খারাপ হচ্ছে। এই কারণে আমরা আমাদের আগের অবস্থানেই অটল থাকছি এবং আফগানিস্তানের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ স্থগিত করে দিচ্ছি।”

“বিশ্বজুড়ে ক্রিকেটে নারীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া জোরালভাবে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। ভবিষ্যতে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ শুরু করার জন্য কোন কোন পদক্ষেপ নেওয়া যায়, এটা নিয়ে আইসিসিকে সক্রিয়ভাবে সম্পৃক্ত করার ধারা চালিয়ে যাবে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া এবং আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গেও ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করে যাবে।”

দ্বিপাক্ষিক সিরিজ না খেললেও বিশ্ব আসরে গত দুই বছরে দুবার মুখোমুখি হয়েছে দুই দল। দুটি ম্যাচই জমেছিল দারুণভাবে। ২০২২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অ্যাডিলেইডে আফগানিস্তানকে ৪ রানে হারায় অস্ট্রেলিয়া। গত বছর ওয়ানডে বিশ্বকাপে মুম্বাইয়ে পরাজয়ের দুয়ারে থেকে অসাধারণ ডাবল সেঞ্চুরিতে অস্ট্রেলিয়াকে ৩ উইকেটের অবিস্মরণীয় এক জয় এনে দেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল।

দ্বিপাক্ষিক সিরিজে না খেললেও বিশ্ব আসরে আফগানিস্তানের সঙ্গে খেলা নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে সেই সময় অস্ট্রেলিয়াকে খোঁচা দিয়েছিলেন আফগান পেসার নাভিন-উল-হাক।

ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া অবশ্য এটার ব্যাখ্যা দিয়ে বলেছে যে, দ্বিপাক্ষিক সিরিজ ও বৈশ্বিক আসরের মধ্যে স্পষ্ট পার্থক্য আছে। তাদের যুক্তি, দ্বিপাক্ষিক সিরিজগুলোর সিদ্ধান্ত ও নিয়ন্ত্রণ দুই দেশের বোর্ডের, কিন্তু বিশ্বকাপ হলো আইসিসি আসর, যেখানে বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ন্তা সংস্থার নিয়ম মানতে বাধ্য তারা।