বিরোধীরা ইফতার খায় আর আওয়ামী লীগের গিবত গায়: প্রধানমন্ত্রী

শেখ হাসিনা বলেন, “গণতন্ত্রের অর্থ বুঝে? গণতন্ত্র বানান করতে পারে? সেটাই আমার প্রশ্ন।“

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 March 2024, 10:53 AM
Updated : 18 March 2024, 10:53 AM

রোজার মাসে ইফতার পার্টিতে গিয়ে সরকারবিরোধীরা আল্লাহ রাসুলের নাম না নিয়ে কেবল ক্ষমতাসীন দলের গিবত করে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, “যারা প্রতিনিয়ত আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে হটাবে, উৎখাত করবে, নির্বাচন হতে দেবে না, মানুষ খুন করে, অগ্নিসন্ত্রাস করে, এখন তারা কিন্তু কোনো মানুষকে ইফতার দেয় না, নিজেরা ইফতার পার্টি খায়। ইফতার পার্টিতে গিয়েও আল্লাহ রাসুলের নাম না নিয়ে আওয়ামী লীগের গিবত গায়। নিজেরা ইফতার খায়, আওয়ামী লীগের গিবত গায়।”

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৪তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে সোমবার তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে আয়োজিত আলোচনা সভায় কথা বলছিলেন শেখ হাসিনা।

আওয়ামী লীগ ইফতার পার্টি করবে না জানিয়ে তিনি বলেন, “এই খাবার সাধারণ মানুষের মধ্যে বিলিয়ে দেওয়া হচ্ছে। সারা বাংলাদেশে একমাত্র আওয়ামী লীগ এবং আমাদের সহযোগী সংগঠন যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও আমাদের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা সাধারণ মানুষের মাঝে ইফতার বিলি করছেন।”

সরকারবিরোধীদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, “আপনারা খেয়েদেয়ে মাইক একটা লাগিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারকে উৎখাত করবেন। আওয়ামী লীগের অপরাধটা কী? এদেশ স্বাধীন করেছে, সেটা অপরাধ? আওয়ামী লীগের অপরাধটা কী? গরীব মানুষের পাশে দাঁড়ায়? দেশটা আজ উন্নত করেছে সেটাই কি অপরাধ? তারা যে গণতন্ত্রের কথা বলে, আমরা কিন্তু গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছি।”

সরকারপ্রধান মনে করেন, দেশের সরকারবিরোধীরা গণতন্ত্রণের ‘ভাষা বোঝে না’।

তিনি বলেন, “গণতন্ত্রের অর্থ বোঝে? গণতন্ত্র বানান করতে পারে? সেটাই আমার প্রশ্ন। তারা তোতা পাখির মত বলে যাচ্ছে যে, গণতন্ত্রের জন্য নাকি লড়াই করবে। এদেশের গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিয়েছে আওয়ামী লীগ। আজকে মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার আছে বলেই কথা বলতে পারে। আওয়ামী লীগ সরকার দেশে বেসরকারি টেলিভিশনের লাইসেন্স দেওয়া শুরু করায় প্রায় অর্ধশত টেলিভিশন, রেডিও আমাদের হয়ে গেছে। যার যার ইচ্ছা মত টকশো করছে, কথা বলে যাচ্ছে।”

জনগণ স্বাধীনতা, গণতন্ত্র, গণতান্ত্রিক অধিকারের সঙ্গে একটি বদলে যাওয়া বাংলাদেশ পেয়েছে বলে মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা।

বিএনপির সমালোচনা করে তিনি বলেন, “বিএনপি যেখানে ডাল-ভাতের ওয়াদা করে ব্যর্থ হয়েছিল, এরপর একজন এসে আলু খেতে বলল, ভাতের পরিবর্তে আলু, কিন্তু আলু উৎপাদনে সেভাবে করতে পারেনি। সেখানে আওয়ামী লীগের আমলে অন্তত ভাতের কষ্ট নাই। এটা আমরা বলতে পারি।”

মানুষের আর্থিক অবস্থার পরিবর্তন আওয়ামী লীগের হাত ধরে এসেছে বলে দাবি করেছে দলের সভাপতি।

“এখন জিনিসের দাম নিয়ে মানুষ বলছে, মুরগির দাম বাড়ল কেন, পেঁয়াজের দাম বাড়ল কেন, চিনির দাম বাড়ল কেন, তেলের দাম বাড়ল কেন? এক সময় দেশের মানুষ নুন-ভাতের কথা চিন্তা করত। সেটুকু জোগাড় করতে পারত না। এখন সেই অবস্থা থেকে আওয়ামী লীগ পরিবর্তন করতে পেরেছে।”

সরকারের অবদান তুলে ধরে তিনি বলেন, “আজকে খাদ্যশস্য, দানাদার শস্য আমরা চারগুণ উৎপাদন বৃদ্ধি করেছি। আজকে আমরা ইলিশ মাছের উৎপাদন আড়াইগুণ বৃদ্ধি করেছি, আমাদের গবাদিপশু সেটাও দুইগুণ বৃদ্ধি হয়েছে। মুরগী, পোল্ট্রি চারগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। সাতগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে দুধের উৎপাদন। মাংসের দাম বেড়ে গেছে, তবে আটগুণ উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে বাংলাদেশে।”

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, মোশাররফ হোসেন, কামরুল ইসলাম, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ, দীপু মনি, কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মেরিনা জাহান কবিতা, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান বক্তব্য আলোচনা সভায় রাখেন।