ডালিম হোটেলে মীর কাসেমকে দেখার কথা বললেন সাক্ষী

একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত জামায়াসে ইসলামীর নেতা মীর কাসেম আলীর বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দিয়েছেন প্রসিকিউশনের ১৯তম সাক্ষী এস এম সরওয়ার ঊদ্দিন।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 March 2014, 06:07 PM
Updated : 24 March 2014, 06:07 PM

সাক্ষ্যে তিনি বলেন, ১৯৭১ সালের ২৯ নভেম্বর ভোর সাড়ে ৪টার দিকে চট্টগ্রামের চান্দগাঁওয়ে তার বাড়ি থেকে তার ভাইদের সঙ্গে তাকেও ধরে আন্দরকিল্লার ডালিম হোটেলে নিয়ে যায় আলবদর সদস্যরা। সেখানে দোতলায় বিভিন্ন কক্ষে আটকে রেখে মীর কাসেম আলীর উপস্থিতিতে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ ও নির‌্যাতন করা হত।

সরওয়ার বলেন, ডালিম হোটেলে বন্দি অবস্থায় তিনি অনেকের কান্নাকাটি শুনতে পেতেন।সেখানে সবসময় সশস্ত্র আলবদর সদস্যদের টহল দিতেও দেখেছেন।

মীর কাসেমকে আল বদর সদস্যরা ‘কমান্ডার সাহেব’, ‘খান সাহেব’ বলে সম্বোধন করতে জানিয়ে সাক্ষী বলেন, তিনি গেলে আলবদর সদস্যদের তৎপরতা ও নির‌্যাতনের মাত্রা বেড়ে যেত।

বিচারপতি ওবায়দুল হাসান নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ সোমবার সাক্ষ্য দেন ৬২ বছর বয়সী সরওয়ার ঊদ্দিন।

১৯৭১ সালে তার বয়স ছিল ২০ বছর। তিনি তখন চট্টগ্রাম সিটি কলেজে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র ছিলেন।

ওই বছরের ২৯ নভেম্বর তিনি তার চাচাতো ভাই এমরানের (এই মামলার প্রথম সাক্ষী) বাসায় ছিলেন। ভোরবেলায় বাড়ির সামনের ও পেছনের দরজায় ধাক্কাধাক্কি পর দরজা খুলে দিলে ঘরে ঢুকে পড়ে দুজন সশস্ত্র পাকিস্তানি সেনা ও একজন আলবদর সদস্য।

সরওয়ার বলেন, তার বড় ভাই কামালউদ্দিন, জামাল উদ্দিন, চাচাতো ভাই এমরান, কিবরিয়া,ওসমানসহ সবাইকে পিঠমোড়া করে বেঁধে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে এন এম সি স্কুলের সামনে নিয়ে যাওয়া হয়।

পরে দাঁড়িয়ে থাকা দুটি ট্রাকে করে সবাইকে ডালিম হোটেলে নিয়ে যাওয়া হয়। ডালিম হোটেলে পৌঁছানোর পরে সবাইকে ট্রাক থেকে নামিয়ে ১০-১২ জন লোককে হাত বাঁধা অবস্থাতেই দোতলার একটি রুমে নিয়ে যাওয়া হয়।

“রাতে মীর কাসেম আলী ও তার বদর বাহিনীর সদস্যরা আমাকে জিজ্ঞাসা করে, তুমি এমরানকে চেন কি না?  ‍মুক্তিযোদ্ধারা কোথায় থাকে? অস্ত্র কোথায় আছে? তুমি মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছিল কি না? উত্তরে আমি বললাম, আমি এ সবের কিছুই জানি না।”

তখন মীর কাসেমের নির্দেশে আলবদর সদস্যরা তাকে পেটাতে শুরু করে বলে জানান সরওয়ার।

১৫ ডিসেম্বর পর‌্যন্ত তিনি সেখানে আটক ছিলেন তিনি।সেদিন দুপুরে আলবদরের েএক সদস্য তাকে ছেড়ে দেন।

সাক্ষ্য দেয়া শেষ হলে এ সাক্ষীকে জেরা করে মীর কাসেমের আইনজীবী মিজানুল ইসলাম।জেরা শেষ হলে পরবর্তী সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামী ৩১ মার্চ দিন ধার‌্য করে শুনানি মুলতবি করে ট্রাইব্যুনাল।