কোভিড-১৯: সানবিমস স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা নিলুফার মঞ্জুরের মৃত্যু

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ঢাকার সানবিমস স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ নিলুফার মঞ্জুর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন, যিনি গত সাড়ে চার দশকে অগণিত শিক্ষার্থীকে দেখিয়ে গেছেন জীবন পথের দিশা।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 May 2020, 03:14 AM
Updated : 26 May 2020, 03:32 PM

পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সোমবার রাত ১২টা ৫৫ মিনিটে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় নিলুফার মঞ্জুরের মৃত্যু হয়। তার বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর।

নিলুফার ১৯৭৪ সালের ১৫ জানুয়ারি ঢাকার সানবিমস স্কুলের প্রতিষ্ঠা করেন, যা এখন দেশের অন্যতম সেরা ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিত। তিনি সোশ্যাল মার্কেটিং কোম্পানির সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন।

বাংলাদেশের অন্যতম শীর্ষ ব্যবসায়ী ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা সৈয়দ মঞ্জুর এলাহী তার স্বামী।

এপেক্স গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা মঞ্জুর এলাহী নিজেও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত। তিনি এখন বাসায় আছেন বলে পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

ছেলে সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর, মেয়ে মুনিজে মঞ্জুর, পুত্রবধূ ডা. সামিয়া হক, ছয়জন নাতি-নাতনি, বোন ইয়াসমিন হক এবং ভাই জসীম চৌধুরীকে রেখে গেছেন নিলুফার।   

তার আত্মার শান্তি কামনায় সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন পরিবারের সদস্যরা।

শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিলুফার মঞ্জুর। ছবি: আফতাবউদ্দিন আহমেদের ফেইসবুক থেকে

নিলুফারের বাবা ডা. মফিজ আলী চৌধুরী ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধুর মন্ত্রিসভার সদস্য ছিলেন। ১৯৭৩ সালে প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি বগুড়া-১ আসন থেকে এমপি হন।

১৯৬৬ সালে সৈয়দ মঞ্জুর এলাহীর সঙ্গে নিলুফারের বিয়ে হয়। ১৯৭৪ সালে তিনি যখন সানবিমস স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন, তখন তাদের দুই সন্তানই ছোট। 

জনতা ব্যাংক থেকে ১০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে ডেস্ক আর বেঞ্জ কিনে ইন্দিরা রোডে নিজের বাসায় সেই স্কুলের গোড়াপত্তন করেন নিলুফার মঞ্জুর। বর্তমানে ধানমণ্ডি ও উত্তরায় এ স্কুলের দুটি শাখায় প্রায় তিন হাজার শিক্ষার্থী রয়েছে।

প্রিয় অধ্যক্ষের মৃত্যুর খবরে সানবিমস স্কুলের সাবেক শিক্ষার্থীদের অনেকেই দেশ এবং দেশের বাইরে থেকে শোক প্রকাশ করেছেন ফেইসবুকে। তাদের একজন নিলুফার মঞ্জুরকে বর্ণনা করেছেন ‘ট্রু নেশন বিল্ডার’ হিসেবে।

সানবিমস স্কুলের ব্যবস্থাপক আবদুল কাদের বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা সবাই আসলে খবরটা পেয়ে ভেঙে পড়েছি।”

এই স্কুলের সাবেক ছাত্র আফতাবউদ্দিন আহমেদ ফেইসবুকে লিখেছেন, শিক্ষার্থীরা আজ তাদের মেন্টরকে হারালো, যিনি ছিলেন তাদের সম্মিলিত শৈশবের একক অভিভাবক। তিনি ছিলেন মায়ের মত, অথবা একজন মাতামহীর মত, যিনি আমাদের পরিবারেরই একজন।” 

পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, কোভিড-১৯ প্রটোকল ও স্বাস্থবিধি মেনে সীমিত আকারে জানাজার পর নিলুফার মঞ্জুরকে মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে বনানী কবরস্থানে দাফন করা হয়।

জানাজা ও দাফনের কাজে সহায়তা করেন আল-মারকাজুল ইসলামীর সদস্যরা। পরিবারের সদস্যদের মধ্যে ছেলে নাসিম মঞ্জুর এ সময় উপস্থিত ছিলেন।