জেনিভায় পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী

‘ওয়ার্ল্ড ফর ওয়ার্ক সামিট: সোশাল জাস্টিস ফর অল’ শীর্ষক সম্মেলনে ভাষণ দেবেন শেখ হাসিনা।

সুইজারল্যান্ডের পথে প্রধানমন্ত্রী ছবি: বাসস।

চার দিনের সফরে সুইজারল্যান্ডের জেনিভায় পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটটি স্থানীয় সময় বিকেল ৫টা ১০ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় রাত ৯টা ১০ মিনিট) জেনিভা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।

প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার নজরুল ইসলামকে উদ্ধৃত করে বাসস এ তথ্য জানিয়েছে।

‘ওয়ার্ল্ড অব ওয়ার্ক সামিটে’ যোগ দিতে এদিন সকালে তারা ঢাকায় শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ছেড়েছিলেন।

সুইজারল্যান্ডে ‘ওয়ার্ল্ড অব ওয়ার্ক সামিট: সোশ্যাল জাস্টিস ফর অল’ শীর্ষক সম্মেলনে যোগ দিতে চার দিনের সফরে জেনিভায় গেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সফরকালে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার- ইউএনএইচসিআর প্রধান ফ্লিপো গ্র্যান্ডি ১৪ জুন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।

পরে প্রধানমন্ত্রী প্যালেস ডি নেশনসে সুইস কনফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট অ্যালেন বারসেটের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। সাক্ষাতের পর সেখানে বাংলাদেশ ও সুইজারল্যান্ডের মধ্যে জ্ঞান ও দক্ষতা বৃদ্ধির বিষয়ে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর হওয়ার কথা রয়েছে।

বিকালে প্যালেস ডি নেশনসে ‘ওয়ার্ল্ড অব ওয়ার্ক সামিট ২০২৩’ এর প্লেনারিতে শেখ হাসিনার ভাষণ দেওয়ার কথা রয়েছে। ওইদিন প্রধানমন্ত্রী সেখানে পৌঁছালে আইএলও এর এডিজি ও আঞ্চলিক পরিচালক তাকে অভ্যর্থনা জানাবেন। গেইট থেকে সভাস্থল পর্যন্ত লাল গালিচা বিছানো হবে এবং গার্ড অব অনার প্রদান করা হবে।

শেখ হাসিনা মাল্টার প্রেসিডেন্ট ড. জর্জ ভেলার সঙ্গেও বৈঠক করবেন। পরে তিনি আইএলও মহাপরিচালক গিলবার্ট এফ হাউংবোর সঙ্গে বৈঠক করবেন।

ওই দিন সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী আইএলও এর সদর দফতরে উচ্চ পর্যায়ের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের জন্য মহাপরিচালক আয়োজিত একটি নৈশভোজে যোগ দেবেন বলে সূচি রয়েছে।

পরদিন ১৫ জুন প্রধানমন্ত্রী ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম (ডব্লিউইএফ) অফিসে ডাব্লিউইএফ এর প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক ক্লাউস শোয়াবের সঙ্গে বৈঠক করবেন। এরপর ‘টক অ্যাট দ্য ডাব্লিউইএফ’ এ তার যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে। সেখানে তিনি ডব্লিউইএফ আয়োজিত ‘নিউ ইকোনমি অ্যান্ড সোসাইটি ইন স্মার্ট বাংলাদেশ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখবেন।

সন্ধ্যায় ডব্লিউটিও মহাপরিচালক ওকোনজো-আইওয়ালা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার অবস্থানস্থলে সাক্ষাত করবেন। সন্ধ্যায় তিনি একটি কমিউনিটি অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন।

শেখ হাসিনা ১৬ জুন সকাল ১১টায় (স্থানীয় সময়) ঢাকার উদ্দেশে জেনিভা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করবেন। পরদিন তার ঢাকায় ফেরার কথা রয়েছে।

‘দ্য ওয়ার্ল্ড অব ওয়ার্ক সামিট ২০২৩: সোশ্যাল জাস্টিস ফর অল’ হচ্ছে সামাজিক ন্যায়বিচারের সমর্থনে অধিকতর, সমন্বিত এবং সুসংগত পদক্ষেপের প্রয়োজনে বিশ্বব্যাপী সোচ্চার হওয়ার একটি উচ্চ পর্যায়ের ফোরাম।

এটি সামাজিক ন্যায়বিচারের জন্য একটি গ্লোবাল কোয়ালিশন গঠনের প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা ও অবহিত করার সুযোগ দেবে। আন্তর্জাতিক শ্রম অফিসের ৩৪৭তম অধিবেশনে গভর্নিং বডি এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে।

ফ্রান্সের সাবেক প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদ, পানামার সাবেক প্রেসিডেন্ট জুয়ান কার্লোস ভারেলা এবং ২০১৪ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী কৈলাশ সত্যার্থী এবং বিভিন্ন কোম্পানির নিয়োগকর্তা ও শ্রমিকদের প্রতিনিধিসহ বেশ কয়েকজন উচ্চ-পর্যায়ের অতিথি সম্মেলনে ভাষণ দেবেন।

দুই দিনের শীর্ষ সম্মেলনটি আরও টেকসই এবং ন্যায়সঙ্গত বিশ্ব তৈরিতে সামাজিক ন্যায়বিচারের মূল ভূমিকা তুলে ধরবে এবং সামাজিক ন্যায়বিচারকে এগিয়ে নিতে এবং নীতির সুসমন্বয় নিশ্চিত করার জন্য বর্ধিত ও অধিকতর সঙ্গত যৌথ পদক্ষেপের কৌশল নিয়ে আলোচনা করবে।

এ সম্মেলন হচ্ছে অংশগ্রহণকারীদের জন্য একটি ফোরাম যেখানে তারা সামাজিক ন্যায়বিচার সম্পর্কে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি ও অগ্রাধিকারগুলো সম্পর্কে মতবিনিময় করার পাশাপাশি সামাজিক ন্যায়বিচারকে এগিয়ে নিতে তাদের পদক্ষেপ ও অঙ্গীকারগুলো তুলে ধরার সুযোগ পাচ্ছেন।

আশা করা হচ্ছে এ শীর্ষ সম্মেলনের ফলাফল বৃহত্তর সামাজিক ন্যায়বিচার অর্জনের কৌশলগুলো সম্পর্কে অন্যান্য বহুপাক্ষিক ফোরাম যেমন, ২০২৩ সালে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য শীর্ষ সম্মেলন, জি২০ এবং ব্রিকস দেশসমূহের শীর্ষ সম্মেলনের আলোচনায় তুলে ধরা হবে।

শীর্ষ সম্মেলনে রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান, জাতিসংঘের মহাসচিব, আইএলও মহাপরিচালক এবং নিয়োগকর্তা ও শ্রমিক সংগঠনের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিরা ভাষণ দেবেন।

সম্মেলনে সরকার এবং নিয়োগকর্তা ও শ্রমিকদের সংগঠন, জাতিসংঘের সংস্থা এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদের নিয়ে চারটি প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে।