)
কাতার বিশ্বকাপ ২০২২

পর্দা উঠল কাতার বিশ্বকাপের

Byস্পোর্টস ডেস্ক

দেখিয়ে দেওয়ার লক্ষ্য নিয়ে কাতার

মরুভূমিতে বিশ্বকাপ সম্ভব? এক সময়ে যে প্রশ্ন শুনলে চোখ উঠতে পারত কপালে, সেটিকে বাস্তবে করে দেখানোর পণ নিয়ে অপেক্ষায় কাতার। স্রেফ ৩৪ কিলোমিটারের মধ্যে আট স্টেডিয়াম নিয়ে বিশ্বকাপের ২২তম আসর আয়োজন করতে যাচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশটি।

বিতর্ক কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না কাতারের। যার শুরু আয়োজক স্বত্ব পাওয়া নিয়ে। অভিবাসী শ্রমিকদের মৃত্যুসহ আরও অনেক কিছু নিয়েই সমালোচনার মুখে আছে দেশটি। সে কারণেই হয়তো সফলভাবে আয়োজনের জন্য আরও মরিয়া তারা। বিশ্বকে দেখিয়ে দিতে চায়, ‘আমরাও পারি’।ই

অদ্ভূত সময়ে বিশ্বকাপ

বিশ্বকাপ সাধারণত হয় জুন-জুলাইয়ে। ইউরোপের ফুটবল মৌসুম শেষে। প্রস্তুতির জন্য তখন যথেষ্ট সময়ও মেলে। কাতারের প্রচণ্ড গরমের জন্য টুর্নামেন্টে হচ্ছে নভেম্বর-ডিসেম্বরে।

বিশ্বকাপের আগের সপ্তাহেও তাই খেলতে হয়েছে ফুটবলারদের। দল গুছিয়ে নেওয়ার তেমন সুযোগ পাননি কোচরা। মিশরের বিপক্ষে হারার প্রস্তুতি নিতে না পারার কথা বলেছেন বেলজিয়াম কোচ রবের্তো মার্তিনেস।

ক্রমেই বাড়ছে চোটের সংখ্যা

শেষ সময়ে এসে ছিটকে গেছেন আক্রমণভাগে ফ্রান্সের বড় ভরসা করিম বেনজেমা। শুরুর আগেই বিশ্বকাপ শেষ হয়ে গেছে সেনেগালের স্বপ্নের কাণ্ডারি সাদিও মানে।

ফ্রান্স হারিয়েছে একগাদা খেলোয়াড়। আর্জেন্টিনার ছিটকে গেছে তিন জন। বিশেষজ্ঞদের শঙ্কা, টুর্নামেন্ট শুরুর পর এই সংখ্যা বাড়তে পারও আরও।

৮৩১ খেলোয়াড়ের বিশ্বকাপ

প্রতিটি দল রাখতে পারবে সর্বোচ্চ ২৬ জন খেলোয়াড়। সে হিসেব এই বিশ্বকাপেই সবচেয়ে বেশি ৮৩২ ফুটবলার অংশ নেওয়ার কথা। তবে করিম বেনজেমার জায়গায় ফ্রান্স কাউকে না ডাকায় খেলোয়াড় থাকছেন ৮৩১ জন।

এদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১৭ জন স্পেনের ক্লাব বার্সেলোনার সদস্য। বায়ার্ন মিউনিখ ও ম্যানচেস্টার সিটি থেকে আছে ১৬ জন করে।

কাতার-একুয়েডর ম্যাচ দিয়ে শুরু

প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপে খেলছে কাতার। সেটাও স্বাগতিক হিসেবে সরাসরি সুযোগ পাওয়ায়। তাদের বিপক্ষে একুয়েডরের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে শুরু হবে ২২তম আসর।

আল বাইত স্টেডিয়ামে খেলা শুরু হবে বাংলাদেশ সময় রাত ১০টায়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানও হবে এখানেই।

বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচের আগে একুয়েডর ও কাতারের ভক্তরা।

নেই হলান্ড-সালাহ

অনেক তারার ভীড়েও তাদের অনুপস্থিতি মনে পড়বে। দল বাছাই উতরাতে না পারায় নেই আর্লিং হলান্ড, মোহামেদ সালাহ, জ্লাতান ইব্রাহিমোভিচ, রিয়াদ মাহরেজরা। তাদের অনুপস্থিতিতে একটু হলেও বর্ণ হারাবে বিশ্বকাপ।

টানা দ্বিতীয়বারের মতো মূল পর্বে জায়গা পায়নি ইতালি। রাশিয়া, ইউক্রেন, নরওয়ে, স্কটল্যান্ড নেই। লাতিন আমেরিকার কঠিন বাছাই পর্ব পার হতে পারেনি চিলি, কলম্বিয়া, পেরু।

লাতিন আমেরিকা নাকি ইউরোপ?

এই দুই অঞ্চল ছাড়া আর কেউ কখনও ফাইনালে যেতে পারেনি। স্বাভাবিকভাবেই অন্য কারো শিরোপা জেতার প্রশ্নই আসে না।

এক সময়ে শিরোপা জেতায় এগিয়েছিল লাতিন আমেরিকা। পাঁচ বিশ্বকাপ জিতে চূড়ায় ব্রাজিল। আর্জেন্টিনা ও উরুগুয়ে জিতেছে দুটি করে। সব মিলিয়ে ৯ শিরোপা নিয়ে রাজত্ব করছিল তারাই।

২০০৬ আসর থেকে টানা চার শিরোপা জিতে এগিয়ে গেছে ইউরোপ।

ইতালি ও জার্মানি জিতেছে চারটি করে। ফ্রান্স জিতেছে দুটি আর স্পেন ও ইংল্যান্ড জিতেছে একটি করে। সব মিলিয়ে ১২ শিরোপা জিতে তারাই সফলতম।

ব্যবধান কি কমিয়ে আনতে পারবে লাতিন আমেরিকা? নাকি আরও এগিয়ে যাবে ইউরোপ? নাকি নতুন কোনো মহাদেশ নিয়ে যেতে পারবে বিশ্বকাপ?

গোল্ডেন বুটের জমজমাট লড়াই 

আর্লিং হলান্ড, করিম বেনজেমা, সাদিও মানে, মোহামেদ সালাহরা না থাকলেও গোল্ডের বুটের জন্য প্রতিযোগিতা কম নয়।

লিওনেল মেসি, ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো, কিলিয়ান এমবাপে, কিলিয়ান এমবাপে, হ্যারি কেইন, রবের্ত লেভানদোভস্কির মতো গোলমেশিনরা তো আছেন!

একটা জায়গায় তাদের চেয়ে এগিয়ে কেইন। গত আসরে গোল্ডেন বুট জিতেছিলেন তিনি। তার সামনে প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে এই কীর্তি একাধিকবার করার সুযোগ।

পেলে-মারাদোনার মতো আসর মাতাবেন কেউ 

কোনো কোনো আসরে একজনই গড়ে দিয়েছেন ব্যবধান। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে হয়ে উঠেছেন ফল নির্ধারক। ফুটবল কিংবদন্তি পেলে, দিয়েগো মারাদোনার মতো সেভাবে আসর মাতাবেন কেউ?

উদ্বোধনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু

শুরু হয়ে গেল কাতার বিশ্বকাপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। শুরুতে থাকল নাচ, গান। চেষ্টা থাকল কাতারের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি তুলে ধরার। মাঠে এসব ছিল উটও!

মঞ্চে মর্গ্যান ফ্রিম্যান

এরপর মঞ্চে আসেন প্রবীণ মার্কিন অভিনেতা মর্গ্যান ফ্রিম্যান। বিশ্বকাপের পথ পরিক্রমা সম্পর্কে বলেন তিনি।

এরপর আবার গান শুরু হয়। কাতারের ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে আসেন তারা। ছিল ঢাকা-ঢোল। হাতে ছিল তলোয়ার। গানের সঙ্গে চলতে থাকে আকর্ষণীয় ডিসপ্লে। শোনানো হয় আগের কয়েকটি আসরের থিম সং।

গানের তালে আসরের সব দলের ফ্ল্যাগ নিয়ে আসা হয় মঞ্চে। ছিল অতীতের সব আসরের বিশালাকৃতি মাসকট।

পর্দা উঠল বিশ্বকাপের

এর পর মঞ্চে আসেন কোরিয়ান ব্যান্ড বিটিএস-এর গায়ক জং কুক। পরে ড্রিমারস গানে তার সঙ্গে সুর মেলান কাতারের গায়ক ফাহাদ আল-কোবাইসি।

সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সমাপ্তি টানেন কাতারের এক কর্মকর্তা। পর্দা উঠল কাতার বিশ্বকাপের। এখন অপেক্ষা বল মাঠে গড়ানোর।

SCROLL FOR NEXT