ধূমকেতুতে নেমেছে ফিলা

ইতিহাসে প্রথমবারের মত ৪শ’ কোটি মাইল পথ পাড়ি দিয়ে ধূমকেতুতে নেমেছে ইউরোপীয় অবতরণ যান ফিলা ।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 Nov 2014, 04:52 PM
Updated : 13 Nov 2014, 10:24 AM

বাংলাদেশ সময় রাত ১০ টা ৫ মিনিটে এটি ধূমকেতু ৬৭পি/চুরিয়মোভ-গেরাসিমেনকোতে অবতরণ করে।

অবতরণের সঙ্কেত নিশ্চিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আনন্দের বন্যা বয়ে যায় জার্মানির ডার্মস্টাডে ইউরোপীয় স্পেস এজেন্সির মিশন কন্ট্রোলরুমে।

সৌরজগত সৃষ্টির সময়ের নানা তথ্যসহ আরো অনেক রহস্য উদঘাটনের আশা নিয়েই চুরিয়মোভে এ অভিযান চালাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা।

অবতরণের পরই বিশ্লেষণের কাজ শুরু করবে ফিলা। মানব সভ্যতার জন্য ধূমকেতুতে ফিলার এ অবতরণকে বড় ধরনের পদক্ষেপ বলেই বর্ণনা করেছেন ইউরোপীয় স্পেস এজেন্সির (ইএসএ)মহাপরিচালক জেন-জ্যাকিউস ডরডাইন।

এ বছর অগাস্টে চুরিয়মোভের কাছে পৌঁছে যায় মহাকাশযান রোজেটা। এবার তারই অবতরণ যান ফিলা চুরিয়মোভে নামল।

তবে রোজেটা থেকে আলাদা হয়ে ফিলার ধূমকেতুতে নামার কাজটি খুব সহজ ছিল না। পৃথিবী থেকে ধূমকেতুর দূরত্বের কারণে সঙ্কেত পৌঁছানো ছিল দুরূহ। তাছাড়া, দ্রুতগতিতে ছুটে চলা ধূমকেতুটিকে ছোঁয়াও ছিল কঠিন ব্যাপার। ফলে অনেকটা শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থায় ছিলেন বিজ্ঞানীরা।
কোনোরকম ভুলত্রুটির কারণে ফিলা যাতে ছিটকে না যায় সেজন্য এটিতে থ্রাস্টার এবং হারপুনের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। থ্রাস্টার দিয়ে ধূমকেতুটিকে আঁকড়ে ধরে পরে হারপুন ও বিশেষ স্ক্রু দিয়ে ফিলাকে মাটিতে চেপে বসানোর পরিকল্পনা ছিল বিজ্ঞানীদের।
কিন্তু দুটো সিস্টেমই ঠিকমত কাজ না করায় ভূপৃষ্ঠে চেপে বসতে সমস্যায় পড়ে ফিলা। তাছাড়া, মাধ্যাকর্ষণ শক্তির টানও খুব ক্ষীণ থাকায় শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত উদ্বেগ কাটেনি।

তবে ফিলা অবতরণ করতে পারায় এই প্রথম কোনো ধূমকেতুকে এত কাছ থেকে দেখা এবং বিশ্লেষণের সুযোগ পাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। সবকিছু ভালোয় ভালোয় চললে ফিলার সাহায্যে ধূমকেতুটির ভূপৃষ্ঠের ছবি নেয়াসহ এর রাসায়নিক গঠন বিশ্লেষণ করবেন তারা।

চুরিয়মোভের এ বিশ্লেষণ থেকে সৌরজগত সৃষ্টির সময়কার নানা তথ্য ছাড়াও পৃথিবীতে প্রাণ সৃষ্টির রহস্য সম্পর্কেও নতুন তথ্য বেরিয়ে আসতে পারে বলেই মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।