শুক্রবার রাতে কামনসহ এক ডজনেরও বেশি ট্রাক, জিপ ও সাঁজোয়া যানে করে উল্লাসরত পেশমেরগার সদস্যরা বিজয় চিহ্ন দেখিয়ে সিরিয়ার দিকে রওয়ানা হয়।
কোবানি থেকে আট কিলোমিটার দূরে তুরস্কের একটি পয়েন্ট থেকে তারা একযোগে রওয়ানা হয়।
কিছু সময় পরেই ওই দলের এক যোদ্ধা বার্তা সংস্থা রয়টার্সে ফোন করে বলেন, “আমরা সীমান্ত অতিক্রম করে এসেছি।”
ভারী অস্ত্রে সজ্জিত এই কুর্দি বাহিনীর কোবানি যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে ওইদিন সকালে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন জোট বাহিনী কোবানির আশপাশে ইসলামিক স্টেট (আইএস) জঙ্গিদের অবস্থানের ওপর বিমান হামলা চালায়।
এ্ই বহরে মাত্র ১৫০ জন যোদ্ধা থাকলেও তারা অস্ত্র ও গোলাবারুদ নিয়ে গেছে। ৪০ দিন ধরে আইএস’র আক্রমণ থেকে কোবানিকে রক্ষা করে আসা সিরীয় কুর্দি যোদ্ধারাও তাদের অস্ত্র ও গোলাবারুদের প্রয়োজনের কথা জানিয়েছিল।
প্রথমবারের মতো সিরিয়ার কুর্দি বাহিনীকে সহায়তা করতে তুরস্ক সিরিয়ার বাইরে থেকে স্থলসেনা আসার অনুমতি দেয়ার পর ইরাকি পেশমেরগা বাহিনী তুরস্ক হয়ে সিরিয়ায় প্রবেশ করল।
পেশমেরগা বাহিনী যখন সিরিয়া সীমান্তের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল তখন কোবানির একটি এলাকা থেকে একটি বড় ধরনের বিস্ফোরণের শব্দ ভেসে আসে। এটি সাম্প্রতিক ধারাবাহিক বিস্ফোরণের মধ্যে একটি বিস্ফোরণ। এটি কোবানির কুর্দি প্রতিরোধ যোদ্ধাদের সঙ্গে আইএস’র তীব্র লড়াই চলার আলামত।
শুক্রবার সকালে পেশমেরগা বাহিনী যে এলাকা দিয়ে কোবানির দিকে যাত্রা করবে বলে ধারণা করা হচ্ছিল সেই এলাকায় গোলাবর্ষণ করে আইএস জঙ্গিরা। এর পাল্টা জবাব হিসেবে তুর্কি সীমান্তের দিকে থেকে মেশিনগানের গুলিবর্ষণের শব্দ শোনা যায়।
“১৫ দিন ধরে আইএস জঙ্গিরা সীমান্তের প্রবেশ পথগুলোর নিয়ন্ত্রণ নেয়ার জন্য হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। এসব হামলার মধ্যে গাড়িবোমাও ব্যবহার করছে তারা। কিন্তু আমরা তাদের প্রতিরোধ করে চলেছি,” বলেন কোবানি জেলার শীর্ষ কুর্দি কর্মকর্তা এনভার মুসলিম।
তিনি বলেন, “পেশমেরগা বহর ওই এলাকা অতিক্রম করার সময় যুক্তরাষ্ট্রের জঙ্গি বিমান তাদের মাথার ওপর থেকে পাহারা দেবে আর জোট বাহিনীর বিমানগুলো তাদের নিরাপত্তা রক্ষার জন্য কোবানির ওপর টহল দেবে।”
পেশমেরগা বাহিনী কোবানি যাওয়ায় প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে সিরিয়ার বাশার আল আসাদ সরকার। বিদেশি যোদ্ধা ও “সন্ত্রাসীদের” সিরিয়ায় প্রবেশ করতে দেয়ার জন্য তারা তুরস্কের নিন্দা জানিয়েছে।
এক বিবৃতিতে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় এই বিষয়টিকে “অগ্রহণযোগ্য” আখ্যায়িত করে এতে সিরিয়ার সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘণ হয়েছে বলে দাবি করেছে।
সিরিয়ায় তুর্কি সেনা পাঠানো হয়নি, এটি জানিয়ে সিরীয় দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে তুরস্ক।