যুক্তরাষ্ট্রের জ্ঞাতসারেই ইরানে সাদ্দামের গ্যাস হামলা

সিরিয়ায় রাসায়নিক অস্ত্র হিসেবে বিষাক্ত গ্যাসের ব্যবহারের বিরুদ্ধে সরব যুক্তরাষ্ট্র দুই যুগ আগে ইরানের সেনাদের ওপর সারিন গ্যাসসহ রাসায়নিক অস্ত্র প্রয়োগে পরোক্ষ সহায়তা দিয়েছিল ইরাকের তৎকালীন শাসক সাদ্দাম হোসেনকে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Oct 2014, 06:16 PM
Updated : 16 Oct 2014, 06:16 PM

গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ’র প্রতিবেদন ও যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা বিভাগের কয়েকজন সাবেক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এমন প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ‘ফরেইন পলিসি’ সাময়িকী।

সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের সেনাদের কাছে থাকা বিষাক্ত রাসায়নিক গ্যাস প্রতিপক্ষের ওপর প্রয়োগের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিকভাবে সামরিক ব্যবস্থা নেয়ার হুমকি দিয়েছিল ওয়াশিংটন। কিন্তু ইরানে ইরাকের ওই গ্যাস হামলা এর চেয়ে মারাত্মক হওয়ার পরও তা রোধে যুক্তরাষ্ট্র কিছুই করেনি।

সিরিয়ায় গত বছর গৃহযুদ্ধের এক পর্যায়ে প্রেসিডেন্ট আসাদের বাহিনী বিদ্রোহীদের ওপর বিষাক্ত গ্যাস প্রয়োগ করেছে বলে অভিযোগ ওঠার পর দেশটিতে সামরিক হামলা চালানোর তোড়জোড় শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র। তবে রাশিয়ার বিরোধিতা ও হুমকির মুখে হামলার পথ থেকে ফিরে আসে পেন্টাগন। পরে জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় সিরিয়া থেকে একে একে রাসায়নিক অস্ত্র সরিয়ে নেয়া হয়।

‘ফরেন পলিসি’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৯৮৮ সালে ইরান-ইরাক যুদ্ধের সময় স্যাটেলাইট ছবি দেখে প্রতিপক্ষের হাতে ইরাকি বাহিনীর পর্যদুস্ত হওয়ার আভাস পায় যুক্তরাষ্ট্র। ওই পরিস্থিতিতে ইরানের সেনাদের ওপর সাদ্দামের সেনাদের রাসায়নিক অস্ত্র প্রয়োগের পরিকল্পনার কথা জেনেও ইরাকের মাটিতে ইরানের সেনাদের অবস্থান সম্পর্কে তথ্য দিয়ে সাদ্দাম বাহিনীকে সহায়তা করেছিল যুক্তরাষ্ট্র।

যুক্তরাষ্ট্রের সেনাদের দেয়া তথ্য অনুসারেই ইরানি বাহিনীর ওপর সারিন ও মাস্টার্ড গ্যাসের একাধিক হামলা চালায় সাদ্দাম বাহিনী। ওই হামলার পরই ইরানের অগ্রসরমান বাহিনী দুর্বল হয় এবং যুদ্ধ থেকে সরে গিয়ে আলোচনায় বসতে বাধ্য হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা এতদিন এ ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করে আসছিলেন। রাসায়নিক অস্ত্রের কথা সাদ্দাম প্রশাসন কখনো জানায়নি বলেও দাবি করেছে তারা।

তবে ইরান-ইরাক যুদ্ধের সময় বাগদাদে দায়িত্বপালনকারী যুক্তরাষ্ট্রের বিমান বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কর্নেল রিক ফ্রাঙ্কনা সম্প্রতি জানান, ইরাকি সেনারা তাদের রাসায়নিক অস্ত্র হামলার অভিপ্রায়ের কথা বলেনি সত্য, তবে তারা অন্যভাবে বিষয়টি জানতেন।