জ্বালানি সাশ্রয়ী উজ্জ্বল আলো তৈরি করতে পারে এমন নীল এলইডি (লাইট এমিটিং ডায়োড) উদ্ভাবনের জন্য নোবেল পুরস্কার জিতে নিলেন তিন জাপানি বিজ্ঞানী।
Published : 07 Oct 2014, 04:41 PM
রয়্যাল সুইডিশ অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেস মঙ্গলবার পদার্থ বিজ্ঞানে চলতি বছরের নোবেল বিজয়ী এই তিন গবেষকের নাম ঘোষণা করে বলে বিবিসির এক প্রতিবেদনে জাননো হয়।
এই তিন গবেষক হলেন- ইসামু আকাশাকি, হিরোশি আমানো ও সুজি নাকামুরা। ১৯৯০ এর দশকের শুরুর দিকে তারা প্রথম নীল এলইডি তৈরি করেন, যার সঙ্গে সবুজ ও লাল এলইডি যুক্ত করে জ্বালানি সাশ্রয়ী ও দীর্ঘস্থায়ী নতুন ধরনের এলইডি বাতি তৈরি করা সম্ভব হয়।
বিজ্ঞানীরা ক্রম উন্নয়নের মাধ্যমে এলইডি বাতিকে এমন এক পর্যায়ে নিয়ে গেছেন যাতে একটি এলইডি বাতি ১৬টি সাধারণ বাতি অথবা ৭০টি ফ্লুরোসেন্ট বাতির সমান আলো দিতে পারে।
আর এই নীল এলইডি এখন মানুষের পকেটে পকেটে, কেননা স্মার্ট ফোনের স্ক্রিন আলোকিত করতেও এই প্রযুক্তি ব্যবহৃত হচ্ছে।
নোবেল কমিটির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, যে পরিমাণ বিদ্যুৎ প্রতিদিন খরচ হয়, তার এক চতুর্থাংশ যায় পৃথিবীকে আলোকিত করতে। এই এলইডি বাতি জ্বালানির পাশাপাশি কাঁচামালের চাহিদাও কমিয়ে আনতে পারে, কারণ একটি সাধারণ বাতি যেখানে গড়ে ১ হাজার ঘণ্টা আলো দেয়, সেখানে এলইডি বাতি এক লাখ ঘণ্টা আলো দিতে পারে।
“এই তিন বিজ্ঞানীর উদ্ভাবন রীতিমতো বিপ্লব ঘটিয়েছেন। সাধারণ লাইট বাল্ব ২০ শতকের পৃথিবীকে আলোকিত করেছে। আর একুশ শতকের পৃথিবীকে আলোকিত করবে এলইডি বাতি।”
নোবেল কমিটির সদস্য অধ্যাপক ওলে ইঙ্গানাস স্টকহোমে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “সন্দেহ নেই, এই উদ্ভাবন আলফ্রেড নোবেলকে খুবই আনন্দিত করত।”
সুইডিশ বিজ্ঞানী আলফ্রেড নোবেলের শেষ ইচ্ছা অনুসারে ১৯০১ সাল থেকে এই পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে।
নোবেল জয়ের খবরে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় অধ্যাপক নাকামুরা বলেন, “এটা অবিশ্বাস্য।”
১৯৫৪ সালে জন্মগ্রহণ করা নাকামুরা বর্তমানে অধ্যাপনা করছেন যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ায়। আমানো জন্মগ্রহণ করেন ১৯৬০ সালে, তিনি কাজ করছেন জাপানের নাগোয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে। একই বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজ করছেন ইসামু আকাশাকি, যিনি জন্মগ্রহণ করেছেন ১৯২৯ সালে।
রীতি অনুযায়ী আগামী ১০ ডিসেম্বর স্টকহোমে আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের হাতে নোবেল পুরস্কারের ৮০ লাখ সুইডিশ ক্রোনার তুলে দেওয়া হবে।
গবেষণা, উদ্ভাবন ও মানবতার কল্যাণে অবদানের জন্য প্রতি বছর চিকিৎসা, পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়ন, সাহিত্য, শান্তি ও অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার দেয়া হচ্ছে।