বিবিসি বলছে, এই দণ্ডের বিরুদ্ধে মানবাধিকার কর্মীরা ব্যাপক প্রতিবাদ জানানোর পর আপাতত ওই নারীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হচ্ছে না বলে জানা গেছে।
ইরানের কর্মকর্তারা সোমবার জানিয়েছিলেন, ২৬ বছর বয়সী রেহানে জাবারিকে তেহরানের পশ্চিমাঞ্চলের একটি কারাগারে পাঠানো হয়েছে। সেখানেই তাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হবে।
কিন্তু মানবাধিকার আন্দোলনকারীরা মঙ্গলবার তাদের অনলাইন প্রচারণায় দাবি করেছেন, রাষ্ট্র তার দণ্ড কার্যকর ১০ দিন পিছিয়ে দিয়েছে।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি বলছে, তদন্তে ব্যাপকমাত্রায় গাফিলতি ছিল ও নিঃসংশয় না হওয়ার পরও তাকে দণ্ডিত করা হয়েছে।
২০০৭ সালে মোর্তেজা আব্দুলালি সারবান্দিকে খুন করার অভিযোগে জাবারিকে গ্রেপ্তার করা হয়। জাবারি দাবি করেন, সারবান্দি তাকে যৌনপীড়ন করতে চেয়েছিলেন। পাশাপাশি তিনি এও দাবি করেন, তিনি ছুরিকাঘাত করলেও খুনটি করেছেন অন্যকেউ।
সারবান্দি ছিলেন ইরানের গোয়েন্দা মন্ত্রণালয়ের কর্মী।
গ্রেপ্তারের পর জাবারিকে দুইমাস নির্জন কারাগারে বন্দি রাখা হয়। ওই সময় তাকে তার পরিবার কিংবা আইনজীবীর সঙ্গে দেখা করতে দেয়া হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে।
২০০৯ সালে তাকে দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ড দেয় তেহরানের অপরাধ আদালত।
অ্যামনেস্টি বলছে, যদিও জাবারি স্বীকার করেছেন তিনি আব্দুলালিকে পেছন থেকে একবার ছুরিকাঘাত করেছেন। কিন্তু জাবারি অভিযোগ করেছেন সেসময় ওইবাড়িতে আরো একজন ছিলেন যে কিনা প্রকৃতপক্ষে এই খুনটি করেছেন।
ধারণা করা হয়, জাবারির এই অভিযোগ কখনোই গুরুত্বসহকারে তদন্ত করা হয়নি।
মৃত্যুদণ্ড কার্যকরকে সামনে রেখে কর্তৃপক্ষ সোমবার ঘোষণা দেয় এবং নিশ্চিত করে জাবারিকে রাজাইশহরের কারাগারে ফাঁসি দেয়ার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
আর এর পরপরই ফেইসবুক, ট্যুইটারসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই দণ্ড স্থগিতের আহ্বান জানিয়ে প্রচারণা চালানো হয়। প্রচারণাকারীরা হ্যাসট্যাগ #সেভরেহানেহজাবারি ব্যবহার করেন।
কারাগারের বাইরে প্রতিবাদের একটি ছবিও অনলাইনে পোস্ট করা হয়।
মঙ্গলবার আন্দোলনকারী ও ব্লগাররা জানায়, জাবারির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর স্থগিত করা হয়েছে এবং এরমধ্যে আব্দুলালি সারবান্দির পরিবারের সঙ্গে আলোচনা হতে পারে।
অনলাইন আন্দোলনকারীরা জাবারির মা সোলেহ পাকরাভানিনের লেখা একটি চিঠিও উদ্ধৃত করেছেন। চিঠিতে পাকরাভানিন তার মেয়ের জীবন রক্ষায় সমর্থন ও উদ্যোগ নেয়ার জন্য সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।