‘মহাবিশ্বে সঙ্গী পাবে মানুষ’

পৃথিবীর বাইরে প্রাণের কল্পনা কি প্রায়ই আপনাকে উজ্জীবিত করে? সেদিন আর বেশি দূরে নয় যখন আপনার স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নেবে।

>> আইএএনএসবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 July 2014, 09:46 AM
Updated : 15 July 2014, 09:46 AM

নাসার বিজ্ঞানীরা এই লক্ষ্যে কাজ করছেন আর আগামী কয়েক বছরের মধ্যেই পৃথিবীর বাইরে প্রাণের বিষয়টি আমাদের সামনে উদ্ভাসিত হয়ে উঠবে বলে আশা করছেন তারা।

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে নাসার সদরদপ্তরে বিষয়টি নিয়ে গবেষণারত বিজ্ঞানীরা বৈঠকে মিলিত হয়েছিলেন।

ওই বৈঠকে মহাবিশ্বের অন্যান্য অংশে প্রাণের অনুসন্ধানে বিশেষজ্ঞরা নাসার জন্য একটি রোডম্যাপ তৈরি করেছেন। এই রোডম্যাপে বর্তমানে কার্যরত ও ভবিষ্যতে কাজ করার জন্য বেশ কয়েকটি টেলিস্কোপকে পরিকল্পনার আওতায় নেয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে ম্যাসাচুসেটস্ ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির (এমআইটি) গ্রহ বিজ্ঞান ও পদার্থবিজ্ঞানের অধ্যাপক সারা সিগার বলেন, “নিকট ভবিষ্যতের কোনো এক সময়ে মানুষ কোনো একটি তারাকে নির্দিষ্ট করে বলতে পারবে, এই তারাটির পৃথিবীর মতো একটি গ্রহ আছে।”

২০১৭ সালে ট্রানজিস্টিং এক্সোপ্লানেট সার্ভেয়িং স্যাটেলাইট (টিইএসএস) উৎক্ষেপণের মধ্যেমে নাসার এই রোডম্যাপ বাস্তবায়ন শুরু হবে। এরপর ২০১৮ সালে দ্য জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ বা ওয়েব টেলিস্কোপ উৎক্ষেপণ করা হবে।

তারপর আগামী দশকের প্রথমদিকে প্রস্তাবিত ওয়াইড ফিল্ড ইনফ্রারেড সার্ভে টেলিস্কোপ- অ্যাস্ট্রোফিজিক্স ফোকাসড টেলিস্কোপ অ্যাসেটস্ (ডব্লিউএফআইআরএসটি-এএফটিএ) উৎক্ষেপণ করার সম্ভাবনা আছে।

এসব টেলিস্কোপ বর্হিগ্রহগুলোকে (যে সব গ্রহ সূর্য বাদে অন্য কোনো তারাকে প্রদক্ষিণ করছে) খুঁজে বের করে এর বৈশিষ্ট্য নির্ণয় করবে। এতে এসব গ্রহের বায়ুমণ্ডল ও জীববৈচিত্র্য সম্পর্কে আমাদের জ্ঞানের পরিধি বাড়বে।

বিষয়টি ব্যাখ্যা করে নাসার বিজ্ঞান প্রকল্পের সহকারী পরিচালক জন গ্রুনসফিল্ড বলেন, “বর্হিগ্রহগুলোতে জরিপ চালানোর জন্য আমরা যে সব প্রযুক্তি ব্যবহার করছি তার অস্তিত্ব আছে। জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ এবং পরবর্তী ধাপগুলো বাস্তবায়িত হচ্ছে। এগুলো স্বপ্ন না- নাসায় আমরা এগুলোর বাস্তবায়নেই কাজ করছি।”

এর আগে ২০০৯ এ নাসার উৎক্ষেপণ করা কেপলার টেলিস্কোপ বর্হিগ্রহ সম্পর্কে আমাদের ধারণায় নাটকীয় পরিবর্তন এনেছিল। টেলিস্কোপটি ৫ হাজারেরও বেশি সম্ভাব্য বর্হিগ্রহ খুঁজে পেয়েছিল, যাদের মধ্যে ১৭০০টির বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে।

একটি তারার গ্রহজগতের মধ্যে “বাসযোগ্য এলাকায়” পৃথিবীর আয়তনের গ্রহটিও প্রথমবারের মতো খুঁজে পেয়েছিল কেপলার। বাসযোগ্য এলাকা বলতে বোঝায় গ্রহমণ্ডলীর যে এলাকায় তরল পানি গ্রহের পৃষ্ঠে পুকুর, হ্রদ বা সাগর তৈরি করতে পারে।

এ বিষয়ে বাল্টিমোরের স্পেস টেলিস্কোপ সায়েন্স ইনস্টিটিউটের পরিচালক ম্যাট মাউন্টেন বলেন, “ওই মুহূর্তটির কথা কল্পনা করুন, যখন আমরা বর্হিবিশ্বে প্রাণের চিহ্ন আবিষ্কার করবো। কল্পনা করুন সেই মুহূর্তটির কথা যখন পুরো বিশ্ব জেগে উঠবে আর মানুষ বুঝতে পারবে স্থান ও সময়ে তাদের দীর্ঘদিনের নিঃসঙ্গতা দূর হয়েছে-বিশ্বে আর আমরা আর একা নই, সেই সম্ভাবনার মুখোমুখি আমরা।”