‘ইস্টার সানডে’তে বিশ্বব্যাপী যুদ্ধ অবসানের আহ্বান পোপের

‘ইস্টার সানডে’তে সমবেত লাখো অনুসারীর উদ্দেশে দেয়া ভাষণে সিরিয়া, ইউক্রেইন ও আফ্রিকা মহাদেশের কয়েকটি দেশে চলা সংঘাতের অবসানের আহ্বান জানিয়েছেন ক্যাথলিক ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিস।

>>রয়টার্স
Published : 20 April 2014, 02:52 PM
Updated : 20 April 2014, 05:32 PM

এছাড়া, বিশ্বের অগণিত মানুষের ক্ষুধা মুক্তির আহ্বান জানিয়ে সম্পদশালীদের ক্রমবর্ধমান অপচয়েরও নিন্দা জানান তিনি।

যুদ্ধমুক্ত বিশ্ব গড়ার ডাক দিয়ে পোপ বলেন, “যিশু তোমার কাছে পৃথিবীর সবখানে, ছোট-বড়, স্বল্পকালীন-দীর্ঘমেয়াদী , অতীত কিংবা বর্তমানের সব যুদ্ধ-সংঘাত অবসানের আবেদন জানাচ্ছি।”

ক্যাথলিক খ্রিস্টান জগতের পোপ নির্বাচিত হওয়ার পর রোববার দ্বিতীয় বারের মতো সেন্ট পিটার্স স্কয়ারে দেড় লাখেরও বেশি মানুষের উপস্থিতিতে ইস্টার সানডে উদযাপন করেন পোপ। অপেক্ষকৃত উদারপন্থি ও ভ্যাটিক্যান সিটির অ-ইউরোপীয় ধর্মগুরু হিসেবে যার বিশেষত্ব আছে।

প্রার্থনায় পোপ বলেন, “হে ঈশ্বর! সহিংসতা ও আমাদের অবিবেচনাপ্রসূত অপচয়ের কারণে ছড়িয়ে পড়া খাদ্যাভাব (দুর্ভিক্ষ) কাটিয়ে উঠতে আপনি আমাদের সাহায্য করুন।”

পোপ নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই বিশ্বের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর পক্ষে অবস্থান নিয়ে পুঁজিবাদী ও ভোগবাদী উন্নত বিশ্বের সমালোচনা করে আসছেন ফ্রান্সিস।

রোববার অনুষ্ঠিত ‘ইস্টার সানডে’ খ্রিস্টান বিশ্বের ধর্মীয় পঞ্জিকার গুরুত্বপূর্ণ একটি দিন। ক্রুশবিদ্ধ হওয়ার পর এমন একটি দিনে যিশু খ্রিস্টের পুনরুত্থান ঘটেছিল বলে বিশ্বাস খ্রিস্টানদের। যিশুর ফিরে আসার স্মৃতির ওই দিবসটিকে খ্রিস্টান ধর্মে বলা হয় ‘ইস্টার সানডে’।

সিরিয়া যুদ্ধ অবসানের আহ্বান, ইউক্রেইনের জন্য প্রার্থনা

মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সিরিয়ায় প্রায় তিনবছর ধরে চলা গৃহযুদ্ধে দেড় লাখের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে যাদের এক তৃতীয়াংশই সাধারণ জনগণ। দেশটিতে যুদ্ধের কারণে গৃহহীন মানুষের সংখ্যাও পৃথিবীর অন্য যেকোনো দেশের চেয়ে বেশি।

সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ অবসানে জাতিসংঘ ও আরব বিশ্বের উদ্যোগও বার বার হোঁচট খেয়েছে। তবে গত বছরের শেষ দিকে শান্তিদূত লাখদার ব্রাহিমির প্রচেষ্টায় খাদ্যসংকটের মধ্যে পড়া সিরিয়ার অভ্যন্তরের শরণার্থীদের জন্য ত্রাণ কার্যক্রম শুরু করা গেছে।

ভাষণে সিরিয়া যুদ্ধের অবসানে থেমে থাকা শান্তি আলোচনা আবার শুরু করার আহ্ববান জানান পোপ।

“সিরিয়ায় সঙ্কটের শুভ সমাধানের জন্য প্রার্থনা করছি। সংঘাতে ক্ষতির শিকার সবপক্ষের কাছে যাতে জরুরি ত্রাণ সহায়তা পৌঁছে। কোনো পক্ষই যেন নতুন করে সংঘাতে না জড়ায়। বিশেষ করে সাধারণ জনগণ যাতে নিরাপদে থাকে।”

এছাড়া নতুন করে সঙ্কট শুরু হওয়া ইউক্রেইনের ভবিষ্যতের জন্যও প্রার্থনা করেন পোপ।

তিনি বলেন, “ঈশ্বর! ইউক্রেইনের শান্তি প্রচেষ্টাকে আপনি আলোকিত করুন। যাতে করে আন্তর্জাতিক সমর্থনপুষ্ট যে কোনো উদ্যোগ সহিংসতা দমনে, ঐক্য ও সমঝোতার পথে এগিয়ে যেতে পারে। ইউক্রেইনের জন্য স্থিতিশীল একটি ভবিষ্যৎ বিনির্মাণ করতে পারে।”

ইরাক, ভেনেজুয়েলা, দক্ষিণ সুদান ও সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকে চলা সাম্প্রদায়িক সহিংসতা আবসানেরও প্রার্থনা করেন পোপ।