‘যৌবন-সুধা’ ফেরাবে তারুণ্য!

প্রাণীদেহে ওষুধ প্রয়োগ করে নাটকীয়ভাবে তারুণ্য ফিরিয়ে আনতে পেরেছেন বিজ্ঞানীরা। ইঁদুরের ওপর এ পরীক্ষাটি চালিয়েছেন হার্ভার্ড মেডিক্যাল স্কুলের গবেষকরা।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 Dec 2013, 03:23 PM
Updated : 21 Dec 2013, 04:38 PM

এক ধরনের রাসায়নিক উপাদানকে কাজে লাগিয়ে গবেষকরা ইঁদুরের বুড়িয়ে যাওয়া পেশীকে তারুণ্যে ফিরিয়ে আনতে পেরেছেন। ইঁদুরের দেহের এ পরিবর্তনকে মানব দেহের হিসাবে বিজ্ঞানীরা বলছেন, ৬০ বছর বয়সী পেশীকে ২০ বছরের তরুণ পেশীতে রূপান্তর করতে পেরেছেন তারা।

তবে ২০ বছরের তরুণ পেশীতে যে শক্তি থাকে নব যৌবনপ্রাপ্ত এ পেশীতে সেই শক্তি সঞ্চার করা যায়নি। অবশ্য আরো গবেষণা করলে দেহে তারুণ্যের শক্তিও ফিরিয়ে আনা যেতে পারে বলে বিজ্ঞানীরা আশাবাদী।

গবেষণাটির মধ্য দিয়ে বিজ্ঞানীরা বয়স বেড়ে যাওয়ার সম্পূর্ণ একটি নতুন প্রক্রিয়ার পাশাপাশি এ থেকে কিভাবে তারুণ্যে ফেরা যায় সে সম্পর্কে ধারণা পেয়েছেন। ‘সেল’ জার্নালে গবেষণার ফল প্রকাশ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।

বুড়িয়ে যাওয়া দেহের একটি একমুখী রূপান্তর প্রক্রিয়া এবং বয়সের সঙ্গে সঙ্গে দেহে যেসব পরিবর্তন ঘটে তা রোধ করা কিংবা আগের অবস্থায় ফিরে যাওয়া যায় না বলেই মনে করা হয়। কিন্তু নতুন এ গবেষণা দেখিয়ে দিল বয়স বেড়ে গেলেও দেহের কিছু কিছু ব্যবস্থাকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা সম্ভব।

বিজ্ঞানীরা এনএডি নামের রাসায়নিককে কেন্দ্র করে গবেষণা চালিয়েছেন। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দেহের কোষকলাগুলোতে এনএডি’র মাত্রা কমতে থাকে।

আর এনএডি কমতে শুরু করার সঙ্গে সঙ্গে দেহ কোষকলার শক্তিকেন্দ্র মাইটোক্রোন্ডিয়ার শক্তি উৎপাদন ক্ষমতা কমে যায়। ফলে দেহে বয়সের ছাপ পড়তে থাকে। পরীক্ষায় দেখা গেছে, এই এনএডি’র মাত্রা বাড়িয়ে দিলেই বুড়িয়ে যাওয়া রোধ করে দেহকোষে তারুণ্য ফেরানো যায়।

গবেষকরা ইঁদুরের দেহকোষে এনএডি’র মাত্রা বাড়াতে একটি বিশেষ রাসায়নিক উপাদান প্রয়োগ করেন। দেহে এ রাসায়নিক উপাদানটি প্রাকৃতিকভাবেই এনএডি’তে রূপান্তরিত হয়।

ফলে এই ‘যৌবন-সুধা’য় দুই বছরের ইঁদুরের দেহের পেশীগুলো ছয়মাস বয়সী পেশীতে ফিরে আসে। পেশীর ক্ষয়, প্রদাহ এবং ইনসুলিন প্রতিরোধের ভিত্তিতে এ পরিবর্তন পর্যবেক্ষণ করা হয়।

তবে এ গবেষণায় বিজ্ঞানীরা এখনো দেহকে বয়সের প্রভাব থেকে মুক্ত করার পথ বের করতে পারেননি। যেমন: বয়স বাড়লে টেলোমিয়ারের দৈর্ঘ্য কমে যাওয়া কিংবা ডিএনএ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার মতো বিষয়গুলো ঠেকানোর উপায় বেরিয়ে আসেনি।

গবেষকরা বলছেন, বুড়িয়ে যাওয়ার নানা কারণ আছে। এর কারণ একটি নয় যে তা সমাধা করলেই বয়সের প্রভাব রুখে দেয়া যাবে। আর তাই পুরো প্রক্রিয়াটি নিয়ে কাজ করা কঠিন।