লন্ডনের দক্ষিণ-পশ্চিমাংশে পাতাল রেলে বিস্ফোরণের ঘটনাকে ‘সন্ত্রাসী’ হামলা হিসাবে চিহ্নিত করে পুলিশ বলেছে, ভিড়ে ঠাসা ট্রেনটিতে ঘরে তৈরি বোমা বিস্ফোরণ ঘটেছে। এতে আহত হয়েছে ২২ জন।
Published : 15 Sep 2017, 03:00 PM
যুক্তরাজ্যে এবছর এ হামলাকে পঞ্চম সন্ত্রাসী হামলা হিসাবেই গণ্য করা হচ্ছে।
শুক্রবার সকালে রেল স্টেশনের জনাকীর্ণ টিউব রেলের একটি কামরায় হঠাৎ করেই বিস্ফোরণ হয়। সোশাল মিডিয়ায় আসা ছবির বরাত দিয়ে বিবিসি জানায়, ঘটনাস্থলে সাদা রঙের একটি বাস্কেট জ্বলতে দেখা গেছে।
বিস্ফোরণের খবর পাওয়ার পরপরই তদন্তে নামে পুলিশ। সন্ত্রাস-বিরোধী পুলিশের উর্ধ্বতন জাতীয় সমন্বয়ক কমিশনার নীল বসু ঘটনাটিকে প্রাথমিকভাবে ‘সন্ত্রাসী’ হামলা বলে ঘোষণা করেন।
আর এখন যুক্তরাজ্যের শীর্ষ সন্ত্রাস বিরোধী কর্মকর্তা মার্ক রাউলি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ঘরে তৈরি বিস্ফোরক ডিভাইসের বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে বলেই তারা জেনেছেন। আহতদের বেশিরভাগেরই মাংস পুড়ে গেছে।
বিস্ফোরক ডিভাইসটিতে একটি টাইমারও ছিল বলে সিএনএন কে জানিয়েছেন এক নিরাপত্তা কর্মকর্তা। আরও বেশি ক্ষয়ক্ষতি ঘটানোই যে হামলার উদ্দেশ্য ছিল এটি তার লক্ষণ। বিস্ফোরক ডিভাইসটির ফরেনসিক পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। এ ডিভাইস থেকেই আগুনের সূত্রপাত বলে পুলিশের ধারণা।
স্থানীয় সময় শুক্রবার সকাল সোয়া ৮টার পর ফুলহ্যাম এলাকার ‘পারসনস গ্রিন’ স্টেশনে ওই বিস্ফোরণের পর আতঙ্কিত যাত্রীরা ছুটোছুটি শুরু করে। খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে লোক পাঠানোর কথা জানায় লন্ডন অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস।
বিবিসি লন্ডনের প্রেজেন্টার রিজ লতিফ কাজে যাওয়ার পথে ওই স্টেশনেই ছিলেন ঘটনার সময়। তিনি জানান, ট্রেন থামা মাত্র বিস্ফোরণের মত একটা শব্দ হয় এবং তারপর যাত্রীরা আতঙ্কে হুড়মুড় করে ট্রেন থেকে নামতে শুরু শুরু করে। দ্রুত সরে যাওয়ার চেষ্টায় ধাক্কাধাক্কিতে অনেকে আঘাত পান।
বিবিসি’র নিউজ প্রেসেন্টার সোফি রাওয়র্থ জানান, তিনি এক নারীকে স্ট্রেচারে করে সরিয়ে নিতে দেখেছেন, যার পা ও মুখে পোড়া ক্ষত ছিল।
ওদিকে আরেক প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে রয়টার্স লিখেছে, বিস্ফোরণের মত শব্দের পর ট্রেনের একটি বগিতে আগুন দেখা গেলে হুড়োহুড়ি শুরু হয়। মানুষ যে যেভাবে পারে নেমে যাওয়ার চেষ্টা করে। ফলে ভিড়ের চাপে চ্যাপ্টা হওয়ার মত পরিস্থিতি তৈরি হয়।
হামলা কে চালিয়েছে কর্তৃপক্ষ তা জানে কিনা বা হামলাকারী ট্রেনেই ছিল কিনা এবং কেউ গ্রেপ্তার হয়েছে কিনা সে সম্পর্কে কোনওকিছু বলতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন সন্ত্রাস-বিরোধী কর্মকর্তা মার্ক রাউলি। তদন্ত এখনও চলছে বলে জানান তিনি।
ট্রেনে বিস্ফোরক ডিভাইস পেতে রেখে হামলা চালানো ব্যক্তিকে খুঁজছে পুলিশ। তদন্তে নেমেছেন কয়েকশ’ গোয়েন্দা।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরিজা মে আহতদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন। লন্ডনজুড়ে পুলিশ উপস্থিতি বাড়ানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মেয়র সাদিক খান।
ওদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও এক টুইটে লন্ডনে এ হামলার নিন্দা জানিয়েছেন।