চিঠিতে নাভিয়া লেখে, “১৭ সেপ্টেম্বর আপনার জন্মদিনে আপনার কাছ থেকে একটি উপহার চেয়ে আমি আপনাকে লিখছি।”
“আমাদের বাড়ির কাছে একটি পার্ক আছে, যেখানে আমি ও আমার বন্ধুরা খেলতাম। কিন্তু গত মাস থেকে আমরা সেখানে খেলতে পারছি না। সেখানে একটি কমিউনিটি হল নির্মাণ কাজ চলছে এবং আমি ও আমার বন্ধুরা সেখানে খেলতে যেতে না পেরে খুব দুঃখ পাচ্ছি”
বিবিসি জানায়, পার্কটি বাঁচাতে গত সপ্তাহে আইনজীবী পিতার সাহায্যে দিল্লি ডেভেলপমেন্ট অথরিটির (ডিডিএ) বিরুদ্ধে দিল্লি হাই কোর্টে একটি পিটিশন দায়ের করে নাভিয়া।
পিটিশনে বলা হয়, “পার্কটি না থাকলে স্থানীয়রা খেলার জায়গা ও তাজা বাতাস পাওয়া থেকে বঞ্চিত হবে।”
“নতুন আরেকটি কমিউনিটি হল নির্মাণ প্রকল্প শুধুমাত্র জনগণের অর্থ নষ্ট করা। কারণ, সেখান থেকে মাত্র ৫০ মিটার দূরে একটি কমিউনিটি হল আছে।”
পশ্চিম দিল্লির রোহিনি এলাকার বাসিন্দা নাভিয়া বাড়ি থেকে পায়ে হেঁটে কয়েক মিনিটেই পার্কটিতে পৌঁছে যায়।
একদম ‘শিশু বয়স থেকেই’ সে ‘প্রতিদিন সকালে ও বিকালে’ পার্কে বেড়াতে যায়।
বিবিসিকে সে বলে, “পার্কটি আমার সবচেয়ে প্রিয় জায়গা।”
“আমি সেখানে আমার বন্ধুদের সঙ্গে খেলা করি। সেখানে আমরা দোল খাই এবং লুকোচুরি খেলি। আমি পার্কটি দারুণ পছন্দ করি, কারণ সেখানে প্রচুর গাছ আছে।”
দুই পাতার চিঠিতে মোদীকে ‘আঙ্কেল’ বলে সম্বোধন করা নাভিয়া আরও লেখে, “সবাই আমাকে বলেছে আপনি এই চিঠি পড়বেন না, কারণ আপনি প্রতিদিন এরকম হাজারও চিঠি পান। কিন্তু আমার মনে হয়েছে আপনি আমার কথা শুনবেন। পার্কটি আমাদের লাইফলাইন।”
“দয়া করে পার্কটি বাঁচাতে আমাকে সাহায্য করুন। কারণ, সবাই বলে আপনি খুবই বুদ্ধিমান।”
বিবিসি জানায়, জুনে পার্কটির প্রায় এক-তৃতীয়াংশ এলাকা ঘিরে ফেলে নির্মাণ কাজ শুরু হয়।
নাভিয়ার বাবা বলেন, “তারপর থেকেই সে অস্থির হয়ে উঠে। সে আমাকে বার বার জিজ্ঞাসা করতে থাকে ‘আমরা কোথায় খেলব?’। যেহেতু আমি একজন আইনজীবী, আমার মনে হয়েছে আদালতই একমাত্র জায়গা যেখানে আমি আমার আবেদন জানাতে পারি।”
বাসিন্দাদের অভিযোগ, পার্কটির অধিকাংশ জায়গা এরই মধ্যে দখল হয়ে গেছে। পার্কের ভেতরে থাকা একটি মন্দিরের প্রাঙ্গণ বাড়ানো হয়েছে, ২০১৫ সালে একটি মোবাইল কোম্পানির টাওয়ার বসানো হয়েছে এবং এ বছরের শুরুতে সেখানে একটি ওপেন-এয়ার জিম চালু করা হয়েছে।
“এ সব কারণে শিশুদের খেলার জায়গা এমনিতেই কমে গেছে।”
১৮ সেপ্টেম্বর আদালত পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছে এবং ওই দিন ডিডিএ কর্তৃপক্ষকে পিটিশনের জবাব দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
দিল্লি জুড়ে ১৪ হাজারের বেশি পার্ক রয়েছে। যেগুলোর কয়েকটি নগর কর্তৃপক্ষ, কয়েকটি নগর প্রশাসন এবং বাকিগুলো ডিডিএ তত্ত্বাবধানে রয়েছে।