সে দিনই ফ্রান্সের জনতা জানাবে ল্য পেন না মাক্রোঁ কাকে তারা পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হিসাবে বেছে নিচ্ছে। প্রথম কোনও নারী তাদের প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন নাকি নেতৃত্ব নিচ্ছেন নবাগত এক নেতা।
কিন্তু এ মূহুর্তে গণমাধ্যমের জরিপে এগিয়ে আছেন কোন প্রার্থী?
বিবিসি বলছে, রোববারের ভোটে ল্য পেনকে পেছনে ফেলে দেওয়া মাক্রোঁই এখন দ্বিতীয় দফা ভোটে ফ্রান্সের পছন্দনীয় প্রার্থী। ল্য পেনের কট্টরপন্থি দলকে ক্ষমতা থেকে দূরে রাখতে প্রতিপক্ষ অনেক রাজনৈতিক দলেরই এখন মাক্রোঁর সমর্থনে একজোট হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
সাবেক ব্যাঙ্কার মাক্রোঁকে রাজনীতির বাইরের লোক হিসেবে বিবেচনা করা হয়, প্রতিষ্ঠিত কোনো রাজনৈতিক দলের সমর্থন ছাড়াই তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নেমেছেন। ফ্রান্সের বর্তমান প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া অলন্দের অর্থমন্ত্রী ছিলেন মাক্রোঁ, কিন্তু নিজ দল গঠন করার জন্য মন্ত্রীত্ব ছাড়েন। বর্তমানে ‘এগিয়ে চলো’ নামের এক আন্দোলনের উদার মধ্যপন্থি নেতা তিনি।
অপরদিকে উত্তরাধিকার সূত্রে রাজনীতিতে আসা ল্য পেন ২০১১ সালে তার বাবার কাছ থেকে কট্টর-ডানপন্থি দল ন্যাশনাল ফ্রন্টের (এফএন) নেতৃত্বভার গ্রহণ করেন। তার নেতৃত্ব গ্রহণের পর ফ্রান্সের আঞ্চলিক নির্বাচনগুলোতে এফএন বড় ধরনের সাফল্য পায়।
তার নেতৃত্বেই দলটি গত ১৫ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি করে। ল্য পেনের দল অবৈধ অভিবাসীদের বহিষ্কার ও বৈধ অভিবাসীদের রাশ টেনে ধরতে চায়, আবাধ বাণিজ্যের ওপর যবনিকা টানতে চায় এবং ইউরোপের সঙ্গে ফ্রান্সের বর্তমান সম্পর্ক আমূল পাল্টাতে চায়।
এফএনের কট্টরপন্থি এসব ইস্যুতে ল্য পেন জনপ্রিয়তা পেলেও রোববারের ভোটে উদার ও ইইউপন্থি মাক্রোঁ তাকে টেক্কা দিয়েছেন।
প্রথম পর্বের ভোটে মাক্রোঁ পেয়েছেন ২৩ দশমিক আট শতাংশ ভোট, অপরদিকে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ল্য পেন পেয়েছেন ২১ দশমিক পাঁচ শতাংশ ভোট। প্রথম পর্বের ভোটে মাক্রোঁই এগিয়ে আছেন।
প্রেসিডেন্ট অলন্দের ক্ষমতাসীন সমাজতন্ত্রী দলের প্রার্থী বেনোয়া আমোঁ, প্রথম পর্বে তাকে যারা ভোট দিয়েছেন তাদের রানঅফে মাক্রোঁর পক্ষে ভোট দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
প্রথম পর্বে ১৯ দশমিক নয় শতাংশ ভোট পেয়ে তৃতীয় স্থান দখলকারী রক্ষণশীল দলের প্রার্থী ফ্রঁসোয়া ফিয়ঁও নিজের সমর্থকদের প্রতি একই আহ্বান জানিয়েছেন।
ফ্রান্সের নির্বাচনি ইতিহাসে বরাবরই প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দ্বিতীয় পর্বে সব দল তাদের কোন্দল ভুলে ডানপন্থিদের বিরুদ্ধে একজোট হয়ে কাজ করেছে। এবারও তাই হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। দুটো বড় দল এরই মধ্যে মাক্রোঁকে সমর্থন দিয়েছে৷ এ ব্যবধান যতটা সম্ভব কমানোই হবে ল্য পেনের সবচে বড় চ্যালেঞ্জ৷
এসবকিছু বিবেচনায় বিশ্লেষকদের ধারণা ,আগামী ৭ মে-র রানঅফ ভোটে বিপুল ব্যবধানে বিজয়ী হয়ে ৩৯ বছর বয়সী মাক্রোঁ হতে যাচ্ছেন ফ্রান্সের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট।
আর তা হলে মাক্রোঁই হবেন ফ্রান্সের ইতিহাসে সবচেয়ে কম বয়সী প্রেসিডেন্ট এবং আধুনিক ফ্রান্সের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বড় কোনো রাজনৈতিক দলের প্রার্থী না হয়েও প্রেসিডেন্টের দায়িত্বভার গ্রহণ করবেন।