নিয়োগকর্তারা চাইলে কর্মস্থলে কর্মচারীদের মাথার স্কার্ফ বা এমন কোনওরকম ধর্মীয় রাজনৈতিক কিংবা দার্শনিক প্রতীক পরায় বাধা দিতে পারবেন বলে রায় দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) শীর্ষ আদালত।
Published : 14 Mar 2017, 08:38 PM
ইউরোপ জুড়ে রাজনৈতিকভাবে বহুল আলোচিত এ বিষয়টি নিয়ে এই প্রথম ইউরোপীয় কোর্ট অব জাস্টিস (ইসিজে) কোনও আদেশ দিল।
তবে আদালত রায়ে এও বলেছে যে, কর্মদাতা প্রতিষ্ঠানকে তাদের কর্মচারীদের নিরপেক্ষভাবে পোশাক পরার অভ্যন্তরীন নীতির ভিত্তিতেই এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে হবে। কোনও কাস্টমারের ইচ্ছার ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে না।
বেলজিয়ামে জিফোর এস কোম্পানির এক রিসেপসনিস্টকে হেডস্কার্ফ পরার কারণে চাকরি থেকে বরখাস্তের ঘটনায় করা এক মামলায় আদালত এ রায় দিল।
বেলজিয়ামের একটি ফার্ম ২০০৬ সালে মাথায় স্কার্ফ পরার জন্য ওই রিসিপশনিস্টকে বরখাস্ত করে। এরপরই কর্মক্ষেত্রে বৈষম্যের শিকার হয়েছেন দাবি করে চাকুরিচ্যুত সামিরা আচবিতা আদালতের শরণাপন্ন হন। পরে বেলজিয়াম আদালত বিষয়টির আরও পরিষ্কার ব্যাখ্যার জন্য ইউরোপের সর্বোচ্চ আদালতে মামলাটি হস্তান্তর করে।
বুধবার নেদারল্যান্ডসের সাধারণ নির্বাচন, মুসলিম অভিবাসীদের বিষয়টি যেখানে গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে পরিণত হয়েছে, সেখানে নির্বাচনের মাত্র আগের দিন এ রায় ভোটারদের প্রভাবিত করবে বলেই ধারণা রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের।
ফ্রান্সের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনেও এ রায় প্রভাব ফেলবে।
দেশটির কনজারভেটিভ প্রার্থী ফ্রাঁসোয়া ফিয়োঁ এই রায়ের প্রশংসা করে একে ‘বিশাল মুক্তি’ যেটা ‘সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠায়’ অবদান রাখবে বলে বর্ণনা করেন।
তবে নারী অধিকার নিয়ে কাজ করে এমন একটি দলের দাবি, এই রায়ের কারণে অনেক মুসলিম নারীর জন্য কর্মক্ষেত্রের দরজা বন্ধ হয়ে যাবে।
‘ওপেন সোসাইটি জাস্টিক ইনিশিয়েটিভ’ এর পক্ষ থেকে বলা হয়, “ইইউ বৈষম্যহীনতা আইনে সমঅধিকারের নিশ্চয়তার বিষয়টি এ রায়ে দুর্বল হয়ে পড়বে।”
পুলিশ কর্মকর্তা মারিয়াম মাদোউন বলেন, “ইইউ’ভুক্ত অনেক রাষ্ট্র ও দেশের আইনে এখনও কর্মক্ষেত্রে হিজাব নিষিদ্ধ করা বৈষম্য বলে বিবেচিত হবে।”
“কিন্তু যেখানে রাষ্ট্রীয় আইন দুর্বল, সেখানে এ রায়ের কারণে অনেক মুসলিম নারীকে চাকুরি থেকে বহিষ্কার করা হবে।”